BRAKING NEWS

High Court orders not to issue notice : তৃণমূল সাংসদ-নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে খোয়াই থানায় মামলায় তদন্ত ও নোটিশ জারি না করার নির্দেশ ত্রিপুরা হাইকোর্টের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা,২৩ সেপ্টেম্বর।। পুলিশ ও অ্যাডভোকেট জেনারেলের মধ্যে সমন্বয়ের যথেষ্ট অভাব রয়েছে বলে মনে হচ্ছে৷ কারণ, খোয়াই থানায় দায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সভাপতি সহ আরো ছয় জনের মামলার তদন্ত সম্পন্ন হয়ে গেছে বলে গত ২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে জানিয়েছিলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল৷ অথচ, ওই মামলায় তদন্তকারী আধিকারিক গত ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজিরা দেওয়ার নোটিশ পাঠিয়েছিলেন৷ পুলিশের ওই মামলা খারিজের আবেদনের উপর শুনানিতে আজ হাইকোর্টে বিষয়টি তুলে ধরেন মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী বিশ্বজিত দেব৷ এদিকে, আজ হাইকোর্টে অ্যাডভোকেট জেনারেল উপস্থিত ছিলেন না৷ তাই, প্রধান বিচারপতি আগামী ১১ নভেম্বর ওই মামলায় পরবতী শুনানির দিন ধার্য্য করেন এবং খোয়াই থানায় মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়া ও নোটিশ জারি করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন৷


প্রসঙ্গত, গত ৮ আগস্ট খোয়াই থানায় ঢুকে কোভিড বিধি লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেফতার ১৪ জন তৃণমূল কর্মীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন দলের সর্ব ভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলীয় নেতৃবৃন্দ। তাঁরা টেবিল চাপড়িয়ে পুলিশকে চোখ রাঙানি দিয়েছেন। কিন্ত, পুলিশ ধৈর্য্য সহকারে সমস্ত পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অপরাধে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধি ১৮৬ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। খোয়াই পুলিশ তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ দোলা সেন, পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, কুণাল ঘোষ, ত্রিপুরায় তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিক এবং প্রকাশ দাসের বিরুদ্ধে সরকারী কাজে বাধা দেওয়ার অপরাধে মামলা দায়ের করেছে।


ওই মামলা বাতিল চেয়ে ত্রিপুরা হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিক। তাঁর অভিযোগ, সম্পুর্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে পুলিশ। জামিন যোগ্য ধারায় নথিভুক্ত মামলায় খোয়াই থানার পুলিশ ১৪ জন তৃণমূল কর্মীকে থানা থেকে জামিন দেননি। এর পেছনেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য জড়িত রয়েছে। তাই তিনি ওই মামলা বাতিলের আবেদন জানিয়েছেন।


উচ্চ আদালত গত ১৮ আগস্ট উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে ২ সেপ্টেম্বর ওই মামলায় পরবর্তী শুনানির ধার্য্য করেছিল। ওই সময়ের মধ্যে পুলিশ তদন্ত কার্য চালিয়ে যাবে। তবে, উচ্চ আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার পূর্বে চূড়ান্ত রিপোর্ট মেজিস্ট্রেট আদালতে জমা দেওয়া যাবে না। সাথে খোয়াই থানায় মামলার সম্পুর্ন নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত।
গত ২ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে ওই মামলায় শুনানি হয়েছে। আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন, তেলিয়ামুড়া থানায় দায়ের মামলা ছিল সম্পুর্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রনোদিত। জামিনযোগ্য ধারায় মামলায় ধৃতদের আদালতে সোপর্দ করার প্রয়োজন ছিল না। তিনি বলেছিলেন, ধৃতদের প্রথমে ধলাই পুলিশ লাইনে রাখা হয়েছিল এবং পরে খোয়াই থানায় স্থানান্তর করেছিল। এদিকে, এডভোকেট জেনারেল বলেছিলেন, তেলিয়ামুড়া থানায় মামলায় ধৃতরা জামিননামা দিতে অস্বীকার করেছিলেন। তাই, তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়নি। ফলে, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করার জন্য তাঁদের খোয়াই নেওয়া হয়েছিল। তখনই আবেদনকারীরা থানায় গিয়ে অন্যায় আবদার করেন এবং প্রচুর ভিড় একত্রিত করে পুলিশের কাজে বাধা দেন।


উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি আরও কিছু প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, কোভিড বিধি লঙ্ঘনের দায়ে ধৃতদের সংশ্লিষ্ট আদালতের অনুমতি ছাড়া এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়ার ঘটনায় আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। সাথে তিনি বলেছিলেন, থানায় ধৃতদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য অন্যায় আব্দারের ঘটনাতেও আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। তাই, তিনি মামলায় আসল নথি এবং ভিডিও রেকর্ডিং আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পরবর্তী শুনানির দিন ২৩ সেপ্টেম্বর ধার্য্য করেছিল আদালত।
সে মোতাবেক আজ ওই মামলায় শুনানি হয়েছে। মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী বিশ্বজিত দেব বলেন, আদালতে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেছেন খোয়াই থানায় মামলায় তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। অথচ, এরপরই দেখা গেছে পুলিশ তাঁর মক্কেলদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিআরপিসি ৪১ ধারায় নোটিশ পাঠিয়েছে। তাতে স্পষ্ট, বিজেপি সরকার আদালতে মিথাচার করেছে। কারণ, তদন্ত প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়ে গেলে পুণরায় নোটিশ পাঠানোর যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। তাই, আদালত খোয়াই থানায় মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত এবং নোটিশ জারি করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। পরবর্তী শুনানির দিন ১১ নভেম্বর ধার্য্য করেছে আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *