BRAKING NEWS

রাজ্যের বিকাশে সর্বক্ষেত্রেই বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে ত্রিপুরা সরকার : কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ সেপ্টেম্বর ।। বর্তমান রাজ্য সরকারের সময়কালে ত্রিপুরা উন্নয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য নজির রেখেছে। রাজ্যের বিকাশে সর্বক্ষেত্রেই বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে ত্রিপুরা সরকার। আজ গান্ধীগ্রামে এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবন্টন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার চৌবে একথা বলেন। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী খাদ্য, গণবন্টন ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের উদ্যোগে মোহনপুর মহকুমার গান্ধীগ্রামস্থিত বৈদ্যনাথ মজুমদার অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সুবিধাভোগীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনায় বিনামূল্যে চাল বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এই যোজনায় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় থাকা দেশের ৮০ কোটির অধিক মানুষের মধ্যে স্বাভাবিক বরাদ্দের অতিরিক্ত মাথাপিছু ৫ কেজি করে খাদ্যশস্য বিনামূল্যে প্রদান সুনিশ্চিত করেছে। ত্রিপুরায় ২০২০ সালে করোনা অতিমারীর প্রথম দিকের সময়ে ৫ লক্ষ ৭৯ পরিবারকে এপ্রিল, ২০২০ থেকে নভেম্বর, ২০২০ পর্যন্ত প্রতি মাসে ৫ কেজি করে চাল রেশন দোকানের মাধ্যমে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে। একই প্রকল্পে প্রতি পরিবারকে এক কেজি করে ডালও দেওয়া হয়েছিলো। এরফলে রাজ্যের জনগণকে মোট ৯৫ হাজার ২৫ মেট্রিক টন চাল এবং ৪,৪১৬ মেট্রিক টন ডাল সরবরাহ করা হয়েছে।

তাছাড়াও করোনা অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনায় দ্বিতীয় পর্যায় গত মে, ২০২১ থেকে চালু করা হয়েছে। চলবে নভেম্বর, ২০২১ পর্যন্ত। এর মাধ্যমে রাজ্যের ৫ লক্ষ ৯৬ হাজার পরিবার যথারীতি বিনামূল্যে খাদ্যশস্য পাবেন। এই পর্যায়ে ৮৬ হাজার ৮০০ মেট্রিকটন চাল সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি এখন পর্যন্ত রাজ্যের ৭ লক্ষ ১৩ হাজার পরিবারকে চাল, মসুর ডাল, ভোজ্য তেল, লবণ, পেঁয়াজ প্রভৃতি সহ ফুড প্যাকেট মুখ্যমন্ত্রী কোভিড স্পেশাল রিলিফ প্যাকেজের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার যৌথভাবে দেশের একবারে অন্তিম পর্যায়ের লোকের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বিকাশে দায়বদ্ধ। এই লক্ষ্যেই উভয় সরকার কাজ করে চলেছে। মহিলা স্বশক্তিকরণ, ডিজিটাইজড ব্যবস্থা, দুর্নীতি মুক্ত, দালাল মুক্ত, কালোবাজারিহীন ব্যবস্থা গড়ে তোলার দিশায় ত্রিপুরা সরকার কাজ করছে। ওয়ান নেশন, ওয়ান রেশন কার্ডের মাধ্যমে দেশবাসী প্রভূত উপকৃত হবেন বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। তিনি আগর ও রাবার গাছের মাধ্যমে রাজ্যের আয় বৃদ্ধির যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ত্রিপুরা সরকারের প্রশংসা করেন। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৭১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রীচৌবে প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন তাঁর মার্গদর্শনে সম্পন্ন এবং বৈভবশালী রাষ্ট্রে পরিণত হবে ভারতবর্ষ।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে খাদ্যমন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব বলেন, রাজ্য সরকার রেশনিং ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে রেশনিং ব্যবস্থায় অতিরিক্ত সামগ্রী হিসেবে চিনি, ডাল, চাপাতা দেওয়া হচ্ছে। অচিরেই স্মার্ট রেশন কার্ড সকলের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বর্তমান সরকার কাজ করছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, মহিলা স্বশক্তিকরণের জন্য রাজ্যে মহিলা পরিচালিত ৪০৮টি রেশনশপ খোলা হবে। খাদ্যমন্ত্রী এদিনের অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর নিকট রাজ্যে নতুন গোডাউনের সংখ্যা বাড়ানো সহ অন্ত্যোদয় ও জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় রেশন কার্ডের সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক কৃষ্ণধন দাস, পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি হরিদুলাল আচার্য, বামুটিয়া পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান শীলা দাস সেন, খাদ্য, গণবন্টন এবং ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী প্রমুখ। এদিনের ১৫০ জন সুবিধাভোগীকে খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট প্রদান করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *