সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার ডাকা বনধে মিশ্র প্রভাব উত্তরবঙ্গজুড়ে

জলপাইগুড়ি, ২৭ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : সোমবার দেশজুড়ে ভারত বনধের ডাক দিয়েছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা।এদিন দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, মালদাতে বনধের মিশ্র প্রভাব পড়েছে।

শিলিগুড়ির অনিল বিশ্বাস ভবনের সামনে যানবাহন আটকানোর চেষ্টা করে বনধ সমর্থনকারীরা। বনধের সমর্থনে হিলকার্ট রোডে মিছিলে শামিল সিপিএম, সিটু, আইএনটিইউসি, ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। বনধ সফল করতে সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ের সামনে পিকেটিং বসানো হয়। বেশকিছু যাত্রীবাহী যানবাহন আটকে দেওয়া হয়। যদিও শহরজুড়ে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
কোচবিহারের হলদিবাড়িতে বনধের ভালো প্রভাব পড়েছে । বাজারের সমস্ত দোকানপাট বন্ধ। চলছে না কোন যানবাহন। কার্যত শুনসান হলদিবাড়ির রাস্তাঘাট। সকালে বনধের সমর্থনে মিছিল বের করে সমর্থকরা। মিছিলের নেতৃত্ব দেন ফরওয়ার্ড ব্লকের লোকাল কমিটির সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ সিনহা, এসইউসিআইয়ের লোকাল কমিটির সম্পাদক রুহলআমিন সরকার সহ প্রমুখ। প্রত্যেকটি মোড়ে পুলিশি পিকেটিং রয়েছে।

এদিকে বনধের মিশ্র প্রভাব পড়েছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহরে। সকাল থেকে সবকিছু বন্ধ থাকলেও শুধুমাত্র সরকারি বাস পরিষেবা চালু রয়েছে। একাধিক মিছিল বের করেছে বনধ সমর্থনকারীরা। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।

সংযুক্ত কিষান মোর্চার ডাকে বনধের সমর্থনে চোপড়া বাসস্ট্যান্ডে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। পরবর্তীতেপুলিশ এসে অবরোধকারীদের জাতীয় সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী আনওয়ারুল হক, ডিওয়াইএফওয়াইয়ের লোকাল সম্পাদক পার্থ ভৌমিক সহ অন্যান্যরা। এছাড়া এদিন ঘিরনিগাও গ্রাম পঞ্চায়েতের লালবাজার এলাকায় ডিওয়াইএফওয়াইয়ের লোকাল কমিটির সম্পাদক আনসারুল হকের নেতৃত্বে কিছুক্ষণ রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। আনওয়ারুল হক বলেন, ‘কৃষি আইন বাতিলের দাবি সহ বিভিন্ন দাবিতে সংযুক্ত কিষান মোর্চার ডাকে এদিনের বনধের সমর্থনে রাস্তায় নামা হয়েছে।‘

ভারত বনধের কোনও প্রভাব নেই জেডিএ-র অন্তর্ভুক্ত এলাকা দলসিংপাড়াতে। অন্যান্য দিনের মতোই দোকানপাট ছিল খোলা। রাস্তায় যানচলাচল করেছে। চা বাগানে কাজ চলেছে স্বাভাবিকভাবে।

কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে ডাকা বনধ সফল করতে এদিন ১০ নম্বর রাজ্য সড়কে ফুটবল খেললেন কুশমন্ডি ব্লকের বামপন্থী নেতা কর্মীরা। সকাল থেকেই দোকানপাট বন্ধ থাকলেও বাজার খোলা ছিল। সকাল থেকে বামপন্থীরা জেলা পরিষদ মার্কেট থেকে মিছিল শুরু করেন। চায়ের দোকান ছাড়া বড় দোকান সমস্তই এদিন বন্ধ ছিল। সিপিএমের জেলা কমিটির অন্যতম সদস্য মৃণাল দত্ত জানান, কৃষি আইন বাতিল পেট্রোল পণ্য মূল্যবৃদ্ধি বিদ্যুৎ বিল কমানোর একাধিক দাবিতে ডাকা বনধ সার্থক হয়েছে।

ভারত বনধের মিশ্র প্রভাব পড়ল বালুরঘাটে। বনধ সফল করতে লাগাতার প্রচার চালিয়েছিল বামপন্থী সংগঠনগুলো। তবে, এদিন সকাল থেকে বালুরঘাটে স্বাভাবিক রয়েছে সরকারি বাস পরিষেবা। বেসরকারি বাস অবশ্য পথে নামেনি। দোকানপাট বন্ধ থাকলেও আস্তে আস্তে কিছু দোকান খোলা শুরু হয়েছে। কিছু সবজি ও মাছ বাজার সকালে খোলা থাকলেও, বনধ সমর্থকদের আবেদনে অনেকে বন্ধ করতে শুরু করে। বনধ সফল করতে যেমন রাস্তায় নেমেছেন সমর্থকরা, তেমনি বালুরঘাট শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশও মোতায়েন করা রয়েছে।

এদিনের বনধ সফলে করতে নকশালবাড়িতে পথে নামল বামপন্থীরা। নকশালবাড়ি বাজারে সিপিএমের মিছিল এবং পিকেটিং করল বনধ সমর্থকরা। তবে, রাস্তায় যানবাহন চলাচল সকাল থেকে স্বাভাবিক রয়েছে।
কেন্দ্রের আনা তিন কৃষি আইনের বিরোধিতায় ভারত বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। সমস্ত রাজনৈতিক দল ও কৃষক সংগঠনগুলির কাছে বনধকে সমর্থন করার আর্জি জানিয়েছিল কিষাণ মোর্চা। বনধকে সমর্থন জানিয়েছে কংগ্রেস, বামপন্থী দলগুলি, এছাড়াও অন্ধ্রপ্রদেশে তেলেগু দেশম পার্টি, আম আদমি পার্টি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *