কলকাতা, ২৭ সেপ্টেম্বর (হি.স.): কোথাও রেল অবরোধ, কোথাও আবার রাস্তা অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ। তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষক সংগঠনের ডাকা ‘ভারত বনধ’-এর মিশ্র প্রভাব লক্ষ্য করা গেল পশ্চিমবঙ্গে। কৃষক সংগঠনের ডাকা বন্ধকে সমর্থন জানিয়েছে বেশ কয়েকটি বামপন্থী দল ও অন্যান্য কয়েকটি সংগঠন। কলকাতায় বনধের তেমন প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। তবে, সোমবার সকালে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার যাদবপুর স্টেশনে রেল অবরোধ করেন বাম কর্মী-সমর্থকরা । রেল লাইনের মাঝে বসে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বনধের সমর্থনে ব্রাবোর্ন রোডে অবরোধ করা হয়।
হাওড়ার বনধের মিশ্র প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। উলুবেড়িয়া ষ্টেশন মোড়ে অবরোধ করেন বামেরা। বালি হল্টে প্রায় কুড়ি মিনিট ধরে জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করা হয়। বাম কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিসের বচসাও হয়। বন্ধের সমর্থনে হুগলি জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ চলতে থাকে, চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরে জিটি রোড অবরোধ করেন বন্ধ সমর্থকরা। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চলে। হুগলি ও চুঁচুড়া স্টেশনের মাঝে রেল অবরোধ করেন বন্ধ সমর্থকরা। চুঁচুড়া বাস টার্মিনাসেও কোনও বাস চলেনি। পান্ডুয়া স্টেশনে রেল অবরোধ হয়। অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান সমর্থকরা। বৈঁচি, উত্তরপাড়াতেও জিটি রোডে বিক্ষোভ চলে। ডানকুনিতে রেলের ওভারব্রিজের সামনে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ হয়।
বন্ধের প্রভাব পড়েছে জলপাইগুড়িতে। রাস্তায় সেভাবে দেখা যায়নি বেসরকারি বাস। বন্ধ ছিল অধিকাংশ দোকান। রাস্তায় মিছিল করেন বন্ধ সমর্থকরা। পূর্ব মেদিনীপুরের নিমতৌড়িতে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন এসইউসিআই (কমিউনিস্ট) এবং কৃষক সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া কিষান ক্ষেতমজদুর’- এর সদস্যরা। বন্ধের প্রভাব পড়েছে কোচবিহারেও। সকাল থেকেই দোকানপাট বন্ধ ছিল। বেসরকারি পরিবহণও সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। তবে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাস পথে নামে। বন্ধের সমর্থনে এসইউসিআই ও সিপিএম মিছিল করে।
মালদহে বনধের আংশিক প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। আংশিক প্রভাব পড়েছে মালদহের জেলা সদর ইংলিশবাজার এবং পুরাতন মালদহ শহরে। সোমবার সকাল থেকেই কার্যত চেনা ছন্দে শহরের বাজার ও দোকানপাট খুলতে শুরু করে। বেসরকারি বাস কম নামলেও সরকারি বাস রাস্তায় নেমেছে। এছাড়া ছোটগাড়ি, টোটো বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। এদিকে বনধ সর্বাত্মকভাবে পালন করতে রাস্তায় নামে বাম ফ্রন্টের ট্রেড ইউনিয়ন ও কৃষক সংগঠন । তাঁরা রথবাড়ি সংলগ্ন ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর অবস্থান বিক্ষোভ করে পিকেটিং শুরু করে। বনধে অশান্তি এড়াতে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এদিকে পুরাতন মালদহ শহরে বাজার না খুললেও ছোট গাড়ি, সরকারি বাস চলাচল করে। শহরের একাধিক ব্যাঙ্ক, সরকারি অফিসে এদিন বনধের সমর্থনে ফ্ল্যাগ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।