BRAKING NEWS

ত্রিপুরায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা, কঠোর হাতে মোকাবিলায় প্রশাসন

আগরতলা, ২৭ অক্টোবর (হি. স.) : ত্রিপুরায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির সমস্ত রকম চেষ্টা হচ্ছে। বাংলাদেশে হিন্দু আক্রান্তের ঘটনায় পানিসাগরে গতকাল বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিল শেষে দুস্কৃতিকারীদের মসজিদে হামলার অভিযোগের ঘটনায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ উত্তেজিত হয়ে উঠেছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ মঙ্গলবার গভীর রাতে কদমতলা, প্রেমতলা, চুড়াইবাড়ি এবং ফুলবাড়ি এলাকায় বেশ কয়েকটি দোকানে মুসলিম সম্প্রদায়ের দুস্কৃতিকারীরা ভাংচুর করেছে। তারই পাল্টা হিসেবে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুস্কৃতিকারীরা মুসলিমদের দোকানে ভাংচুর করেছে। ওই ঘটনায় ধর্মনগর ও পানিসাগর মহকুমায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। রাতেই এলাকায় বিশাল পুলিশ ও টিএসআর বাহিনীর সাথে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। উত্তর ত্রিপুরা জেলা পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী দাবি করেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উভয় সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে।


প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার পানিসাগরের রোয়াবাড়ি এলাকায় চামটিলা জামে মসজিদে একদল দুস্কৃতিকারী হামলা করেছে। শুধু তাই নয়, প্রায় ১০টি দোকানে ভাংচুর করা হয়েছে। তাতে, ওই দোকানগুলির ভীষণ ক্ষতি হয়েছে। আজ পানিসাগরের ডিসিএম এম উদ্দিন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং সমস্ত রকম সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। এদিকে, ওই ঘটনার জেরে মুসলিম সম্প্রদায়ের দুস্কৃতিকারীরা হিন্দুদের দোকানে হামলা করেছে। মঙ্গলবার রাতে কদমতলা, প্রেমতলা, চুড়াইবাড়ি এবং ফুলবাড়ি এলাকায় কয়েকটি হিন্দুদের দোকানে ভাংচুর করা হয়েছে।


সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে চুড়াইবাড়িতে। রাত আনুমানিক দশটা নাগাদ চুড়াইবাড়িতে একদল মুসলিম দুষ্কৃতিকারী প্রথমে রেলওয়ে ট্রাই জংশনের হিন্দু দোকানপাট এবং স্বরূপ সাহার দুটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। তারপর ধীরে ধীরে আক্রমণকারীরা অন্যত্র চলে যাওয়ার পর একই কায়দায় একদল হিন্দু দুষ্কৃতিকারী ঘটনাস্থলে এসে মুসলিম দোকানপাটে হানা দিয়েছে। অবশ্য তখন ঘটনাস্থলে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফ্রান্সিস ডারলং এবং চুড়াইবাড়ি থানার ওসি সহ বিশাল পুলিশবাহিনী ছুটে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের পেট্রোলিং গাড়ি রাতভর টহল দিয়েছে। তাছাড়া রাতেই ধর্মনগর মহকুমা শাসক কমলেশ ধর ১৪৪ ধারা জারি করেন। আজ সকালে কদমতলা, চুড়াইবাড়ি এলাকায় প্রচুর পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পানিসাগরেও ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত ওই দুইটি মহকুমায় ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।
কদমতলা থানার ওসি বলেন, প্রকৃত ঘটনার থেকেও গুজব বেশি ছড়াচ্ছে। অতি ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মাধ্যমে উত্তেজনাকর খবর ছড়ানো হচ্ছে। তাই, সাধারণ জনগণ গুজবে কান দেবেন না, আবেদন জানান তিনি। তাঁর দাবি, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী ইতিমধ্যেই এসে পৌছে গেছে। অহেতুক ত্রিপুরার শান্তির পরিবেশ বিষিয়ে তুলবেন না, সকলের কাছে ওই অনুরোধ করেন তিনি। উত্তর ত্রিপুরা জেলা পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী বলেন, পরিস্থিতি সম্পুর্ন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সমস্ত অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য প্রশাসনের তরফে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। তাছাড়া, দুই সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁরা শান্তি বজায় রাখার আশ্বাস দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *