হাফলং (অসম), ১৩ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের লামডিং ডিভিশনের অধীন প্রতিটি স্টেশনের দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের আচমকা এই সিদ্ধান্তে হাজারো মানুষ এবার রোজগার হারিয়ে পথে বসেছেন। লামডিং ডিভিশনের অধীনস্থ প্রতিটি স্টেশনে ভেন্ডারদের একই অবস্থা।
গত শুক্রবার লামডিং-বদরপুর হিল সেকশনের নিউহাফলং স্টেশনে ভেন্টারদের আগাম কোনও নোটিশ ছাড়াই নাকি তাঁদের দোকানগুলি সিল করে দিয়েছেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, অভিযোগ করেছেন নিউহাফলং স্টেশনের ভেন্ডাররা। মিটারগেজ রেলপথ যখন ছিল, তখন থেকেই এ সব ভেন্ডাররা চা সিঙ্গারা ও অনান্য সামগ্রীর হোটেল চালিয়ে নিজেদের পরিবার প্রতিপালন করছিলেন। বংশানুক্রমিকভাবে অনেকে প্রথমে লোয়ার হাফলং, পরবর্তীতে মিটারগেজ থেকে ব্রডগেজ রেলপথ হওয়ার পর নিউহাফলং স্টেশনে ব্যবসা করে আসছিলেন তাঁরা। কিন্তু শুক্রবার উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল হঠাৎ করে এ সব ভেন্ডারদের দোকান সিল করে দেওয়ায় এখন সংশ্লিষ্টদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। রোজগার হারিয়ে এখন কীভাবে তাঁরা পরিবার চালাবেন, সে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, রেল বিভাগ যদি কিছু সময় দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিত তা-হলে রোজগারের বিকল্প ব্যবস্থা করতে পারতেন।
কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের অধীনস্থ বিভিন্ন স্টেশন থেকে এ সব ভেন্ডারদের উচ্ছেদ করে সুকৌশলে রেল বিভাগ সমস্ত ব্যবসা তুলে দিতে চাইছে আইআরসিটিসির হাতে। কারণ লামডিং ডিভিশনের অধীন বিভিন্ন স্টেশনকে উন্নতমানের ও বিশ্বমানের গড়ে তুলে স্টেশনগুলিতে ফুডপ্লাজা রেস্টুরেন্ট গড়ে তুলছে রেলযাত্রীদের জন্য। তবে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের অধীনস্থ স্টেশনগুলিতে ভেন্ডারদের দোকানে যে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে, এর জন্য কিছুটা হলেও দায়ী ভেন্ডার অ্যাসোসিয়েশন বলেও অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।
লামডিং ডিভিশনের অন্তর্গত স্টেশনে যে সব ভেন্ডার দোকান চালাচ্ছেন, তা মান্দাতার আমল থেকে ভাড়া দিয়ে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের পক্ষ থেকে রেলওয়ে স্টেশনগুলিতে দোকানগুলির ভাড়া বৃদ্ধি করার পর ভেন্ডার অ্যাসোসিয়েশন রেল বিভাগের বিরুদ্ধে গুয়াহাটি হাইকোর্টে একটি মামলা করেছিল। দীর্ঘদিন থেকে ভেন্ডার অ্যাসোসিয়েশন ও রেল বিভাগের মধ্যে এই মামলা চলার পর গত ২৪ জানুয়ারি ওই মামলার রায় রেল বিভাগের পক্ষে যাওয়ার পরই উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল রাজ্যের বিভিন্ন রেল স্টেশনে ভেন্ডারদের দোকান হোটেলে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
তবে রেল বিভাগ স্টেশনগুলির দোকান সিল করে দেওয়ার আগাম কোনও নোটিশ দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অবস্থায় লামডিং ডিভিশনের অধীনস্থ বিভিন্ন স্টেশনের ভেন্ডাররা এবার রোজগার হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন।