জাত শত্রু কংগ্রেস ও সিপিএম-কে ত্রিপুরায় ঐক্যবদ্ধ করার কৃতিত্ব বিজেপি-র : মানিক সরকার

আগরতলা, ৪ ফেব্রুয়ারি(হি. স.) : জাত শত্রু কংগ্রেস ও সিপিএম-কে ত্রিপুরায় ঐক্যবদ্ধ করার কৃতিত্ব বিজেপির। ধনপুর কেন্দ্রে নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে অনেকটা বিদ্রুপের সুরেই একথা বলেন সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার। সাথে তিনি উপলব্ধি করেছেন, এবার ত্রিপুরায় সিপিএমে বৃদ্ধতন্ত্রের অবসান হওয়া জরুরি। তাই, নতুনদের জন্য জায়গা ছাড়তে হবে, বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার পেছনে যুক্তি তুলে ধরে বলেন তিনি।

মানিকের কথায়, ১৯৯৮ সালে ধনপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম। ওই সময় বয়স খুবই কম ছিল। কিন্তু মানুষের আশীর্বাদে এই কেন্দ্র থেকেই টানা পাঁচবার জয়ী হয়েছি। ২০ বছর মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছি। নিজ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতি অবহেলা আড়াল করতে গিয়ে তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ধনপুরের জন্য বিশেষ সময় দিতে পারিনি। এমনকি, ভোটের সময়ও বিশেষ নজর দিতে পড়েছি তেমন সুযোগ হয়নি। কিন্তু, মানুষ দুহাত খুলে আশীর্বাদ করেছেন। একইভাবে বামফ্রন্টের নতুন প্রার্থী কৌশিক চন্দ-কেও মানুষ আশীর্বাদ করবেন, প্রত্যাশা রাখেন তিনি।

তাঁর দাবি, ২০১৮ সালে অবাম এবং অবিজেপি ভোটাররা বামফ্রন্ট-কে ক্ষমতাচ্যুত করেছেন। জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টায় যাঁরা ছিলেন তাঁদের সহায়তায় বিভ্রান্তি তৈরি জনজাতিদের ভোট পেয়েছে বিজেপি। কিন্তু, সরকার পরিবর্তনের কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁরা উপলব্ধি করতে পারেন, ভুল করে ফেলেছেন। তাঁর কটাক্ষ, তেইশের নির্বাচনে কংগ্রেসের সাথে বামেদের আসন সমঝোতা হয়েছে দেখেই শাসক শিবিরে থরহরি কম্প শুরু হয়ে গেছে। দুই দল যৌথভাবে নির্বাচনে নামবে নিশ্চিত হয়ে বিজেপি ভয় পেয়ে গেছে। তাই, আবোল-তাবোল বলতে শুরু করেছে।

মানিক সরকার ত্রিপুরায় কংগ্রেসের সাথে আসন সমঝোতা-কে সুবিধাবাদ মানতে রাজি নন। বরং জাত শত্রু কংগ্রেস ও সিপিএম-কে ঐক্যবদ্ধ করার কৃতিত্ব তিনি বিজেপিকে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, বিজেপির কৃতকর্মের দৌলতে আমরা যাঁরা একের বিরুদ্ধে অপরে লড়াই করতাম আমাদের একজায়গায় আনতে সাহায্য করেছে। তাঁর দাবি, বিজেপি-কে হারাতে আমরা আবেদন করেছিলাম সমস্ত ধর্ম নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শক্তি একত্রিত হই। কংগ্রেস সেই আবেদনকে সমর্থন করেছে।

মানিকের মতে, বিজেপি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য সন্ত্রাসকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে। সকলে একজোট হয়ে তা প্রতিহত করতে হবে। সাথে তাঁর আবেদন, ঘরের ছেলে কৌশিক চন্দ-কে জয়ী করুন। তাঁর দাবি, নতুনদের জন্য জায়গা ছাড়তে হবে। সংগ্রাম দীর্ঘ সময় এগিয়ে নিয়ে সম্ভব হবে। তিনি বলেন, সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সাবরুম কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন। ফলে, তাঁর পক্ষে সারা ত্রিপুরায় চষে বেড়ানো সম্ভব নয়। তাই, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে আলোচনার ভিত্তিতে এবার বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *