BRAKING NEWS

Law and order situation : ত্রিপুরায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিধানসভায় বিরোধীদের মুলতবি প্রস্তাব খারিজ, প্রতিবাদে সমগ্র অধিবেশন বয়কট, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ বিরোধী দলনেতার

আগরতলা, ২৪ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : ত্রিপুরায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিধানসভায় মুলতবি প্রস্তাবের দাবিতে আজ বিরোধীরা প্রচন্ড হৈচৈ করেছেন৷ কারণ, অধ্যক্ষ বিরোধী দলের বিধায়ক সুধন দাসের আনা মুলতবি প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন৷ কিন্ত, বিরোধীরা মুলতবি প্রস্তাবের উপর আলোচনায় বারবার চাপ দেন৷ এক সময় বিরোধীরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন৷ কিন্ত, অধ্যক্ষ তাঁদের আবেদনে সম্মতি দেননি৷ বরং একই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় বিবৃতি দেবেন৷ তাই, মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দেওয়ার পর বিরোধীরা আলোচনা করতে পারবেন বলে তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন অধ্যক্ষ৷ কিন্ত, অধ্যক্ষের ওই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে বিরোধীরা প্রতিবাদে সোচ্চার হন৷ বিরোধীদের হৈ হট্টগোলের মাঝেই অধ্যক্ষ বিধানসভার পরবর্তী কার্যসুচি প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু দেন৷ তাই, প্রতিবাদে তাঁরা অধিবেশন বয়কট করে বেরিয়ে যান৷ অধিবেশনের প্রথমার্ধ সমাপ্ত হওয়ার পর সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ এনেছেন এবং সমগ্র অধিবেশন বয়কটের সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়েছেন৷


ত্রিপুরার দ্বাদশ বিধানসভার দশম অধিবেশনের আজ ছিল প্রথম দিন৷ আজ সভার শুরুতেই অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন৷ তারপর যথারীতি অধ্যক্ষ সভার পরবর্তী কার্যসূচী শুরু করার জন্য প্রস্তুতি নেন৷ তখনই বিরোধী দলের সদস্য ত্রিপুরার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মুলতবি প্রস্তাব খারিজ করার কারণ জানতে চান৷ অধ্যক্ষ তাঁকে সাফ জানান, নির্দিষ্ট আইন মেনেই মুলতবি প্রস্তাব খারিজ করা হয়েছে৷ কারণ, আজ একই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বিবৃতি দেবেন৷ তাই, একই বিষয়ে দুইবার আলোচনার সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয়, বলেন তিনি৷ বিরোধীদের উদ্দেশ্যে তাঁর প্রস্তাব, মুখ্যমন্ত্রী বিবৃতি দেওয়ার পর আপনারাও আলোচনা করতে পারবেন৷ এখন অযথা সময় নষ্ট করার যৌক্তিকতা নেই৷


কিন্ত, অধ্যক্ষের প্রস্তাবে আশ্বস্ত হননি বিরোধী দলের সদসরা৷ বিধায়ক সুধন দাস বলেন, ত্রিপুরায় আইনগ-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা সম্পুর্ন ভেঙ্গে পড়েছে৷ বিরোধী দলের কর্মী থেকে শুরু করে নেতারা ক্রমাগত আক্রমনের শিকার হচ্ছেন৷ পার্টি অফিস ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ আবার কোথাও পার্টি অফিসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ এমনকি, পত্রিকা অফিসেও হামলা হয়েছে৷ সুধন বাবু, বিরোধীদের উপর সংগঠিত সন্ত্রাসের ভয়াবহতা প্রমানে রক্তে ভেজা একটি শার্ট বিধানসভায় তুলে ধরেন৷ আক্রান্ত হওয়ার পর ওই শার্ট রক্তে ভিজেছে, বিধানসভায় তা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন৷ কিন্ত অধ্যক্ষ তাঁদের আশ্বস্ত করেন, মুখ্যমন্ত্রী বিবৃতি দেওয়ার পর এ-সমস্ত বিষয় তোলে ধরে আলোচনায় অংশ নিন৷ তিনি বিরোধীদের কাছে বিধানসভা পরিচালনায় সহযোগিতা চেয়ে আপাতত প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু করার অনুরোধ জানান৷


এদিকে, বিরোধীরাও নিজেদের দাবিতে অনড় থেকে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন৷ বিরোধীদের শ্লোগানে বিধানসভায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে৷ অধ্যক্ষও বিরোধীদের বিক্ষোভের মাঝেই প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু করে দেন৷ তাই, প্রতিবাদে বিরোধীরা বিধানসভা অধিবেশন বয়কট করে বেরিয়ে যান৷ এদিন, অধিবেশনের প্রথমার্ধ সমাপ্ত হওয়ার পর বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার ত্রিপুরার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মুলতবি প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়ায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ এনেছেন৷ সাথে তিনি ঘোষণা দেন, বিরোধীরা সমগ্র অধিবেশন বয়কট করেছেন৷


এদিন বিরোধী দলনেতা বলেন, আজ মুলতবি প্রস্তাবের মূল বিষয়বস্তু ছিল ত্রিপুরায় আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার চরম অবনতি৷ বিরোধীদের উপর আক্রমণ ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ এমনকি, বিরোধী দলের অফিস লাগাতর আক্রান্ত হচ্ছে৷ তাই, আজ বিধানসভায় সমস্ত কার্যসুচি স্থগিত রেখে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা হউক আমরা চেয়েছিলাম৷ তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বিধানসভার অধ্যক্ষ নিরপেক্ষ ভূমিকা নিতে পারলেন না৷ তিনি কার্যত ট্রেজারি বেঞ্চের সহায়তা করলেন৷ মানিক বাবু কটাক্ষের সুরে বলেন, অধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়ে শাসক ও বিরোধী উভয় দলকে  সমান অধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি৷ আদৌ সেই দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন তার আত্মসমীক্ষা করা উচিত অধ্যক্ষের৷ তাই, বিধানসভায় বসে না থেকে বয়কট করে বেরিয়ে এসেছি আমরা, বলেন বিরোধী দলনেতা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *