BRAKING NEWS

Mukul Hazarika of Darang returned home : পাঁচ বছর পর বাংলাদেশের কারাগার থেকে ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে স্বদেশে ফিরলেন দরঙের মুকুল হাজারিকা

নিজস্ব প্রতিনিধি, বিলোনীয়া, ১৩ সেপ্ঢেম্বর৷৷ তিন বছর কারাগারে বন্দিদশা এবং পরবর্তীতে আর্থিক দৈন্যতার দরুন স্বদেশে ফিরতে না পেরে আরও দু-বছর, মোট পাঁচ বছর বাংলাদেশে কাটিয়ে অসমের দরং জেলার বাসিন্দা মুকুল হাজারিকা (৪৫) ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরেছেন৷ আজ সোমবার সকাল প্রায় সাড়ে দশটা নাগাদ দক্ষিণ ত্রিপুরার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বিলোনিয়া চেকপোস্ট দিয়ে বিজেবি কর্তৃপক্ষ মুকুল হাজারিকাকে বিএসএফ এবং অসম পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে৷ আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাঁকে গ্রহণ করেন দরং জেলার পুলিশ সুপার সুশান্তবিশ্ব শর্মা৷ মূলত পুলিশ সুপার সুশান্তবিশ্ব শর্মার তৎপরতায় তাঁর স্বদেশে ফেরা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল৷


আজ সোমবার সকালে বিলোনিয়া থানার ওসি স্মৃতিকান্ত বর্ধন, অসমের দরং জেলার পুলিশ সুপার সুশান্তবিশ্ব শর্মা এবং বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিজেবি আধিকারিকরা৷ এর পর উভয় দেশের পুলিশ ও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর আধিকারিকরা বৈঠকের মাধ্যমে আইনি নথিপত্রে স্বাক্ষর করেন৷ স্বাক্ষর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে বিলোনিয়া চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ভূখণ্ডে প্রবেশ করেন মুকুল হাজারিকা৷ এখানেই মুকুলকে তাঁর বাবা ফুলেশ্বর হাজরিকার হাতে তুলে দেন পুলিশ সুপার সুশান্তবিশ্ব শর্মা৷ আজই মুকুল ও তাঁর বাবা ফুলেশ্বরকে নিয়ে অসমের দরং জেলার মঙ্গলদৈ থানার অন্তর্গত কেওটপাড়া গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন পুলিশ সুপার সুশান্তবিশ্ব৷


এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, আজ থেকে পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালের মে মাসে মঙ্গলদৈ থানার অন্তর্গত কেওটপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন পেশায় রিকশা চালক বছর ৪০-এর মুকুল হাজারিকা৷ পরিবারের সদস্যরা মুকুল হাজরিকাকে সম্ভাব্য বহু জায়গায় খুঁজে না পেয়ে, মঙ্গলদৈ থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত এফআইআর করেন৷
এর পর বহুদিন তাঁর কোনও খবর পাওয়া যাচ্ছিল না৷ পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ৫ মে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে একটি চিঠি আসে, গত তিন বছর মুকুল হাজারিকা সে দেশের ফেনি কারাগারে বন্দি ছিলেন৷ ওই দিন (২০১৯ সালের ৫ মে) মুকুল হাজরিকার বন্দিদশার মেয়াদ সম্পূর্ণ হয়েছে৷ তাঁকে নিয়ে যেতে তাঁর পরিবারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ৷ কিন্তু আর্থিক অসচ্ছ্বলতার দরুন তাঁকে নিয়ে আসতে পারছিলেন না তাঁর বাবা৷


বাবা ফুলেশ্বর হাজারিকা কোনও রকম দিনহাজিরা করে মুকুলের পত্নী সহ তিন সন্তানের পরিবারের ভরণ-পোষণ চালিয়ে নিচ্ছিলেন৷ তাঁদের স্বপ্ণ ছিল, বাংলাদেশ থেকে যে কোনও উপায়ে মুকুলকে ফিরিয়ে আনা৷ দরিদ্র ফুলেশ্বর অসম সরকার তথা জেলা প্রশাসনের কাছে তাঁর ছেলে মুকুলকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানাচ্ছিলেন৷ কিন্তু লাভ হয়নি৷


ইত্যবসরে এই খবর পান দরঙের নবাগত পুলিশ সুপার সুশান্তবিশ্ব শর্মা৷ সব শুনে তিনি তাঁকে স্বদেশে ফেরাতে মাঠে নামেন৷ ইতিমধ্যে উভয় দেশের বিদেশ মন্ত্রকস্তরের যাবতীয় ক্রিয়া শেষ হয়৷ সে অনুযায়ী মুকুলের বাবা ফুলেশ্বর হাজারিকা, মঙ্গলদৈ থানার ওসি দানেজিৎ দেউরি সহ পুলিশের এক দল নিয়ে গতকালই বিলোনিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছিলেন দরঙের পুলিশ সুপার সুশান্তবিশ্ব শর্মা৷ এদিকে ছেলে মুকুলকে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা বাবা ফুলেশ্বর হাজারিকা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *