BRAKING NEWS

৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর-সহ ৩টি আসনে নির্বাচন, গণনা ৩ অক্টোবর

নয়াদিল্লি, ৪ সেপ্টেম্বর (হি.স.): অবশেষে স্বস্তি পেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের ভবানীপুর বিধানসভা আসনে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। শুধু ভবানীপুর নয়, একইসঙ্গে ভোটগ্রহণ হবে রাজ্যের আরও দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রে। ভোটগ্রহণের আগেই মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে প্রার্থী মারা গিয়েছিলেন। এই দুই আসনে ৩০ সেপ্টেম্বর ভোট হবে। তবে আপাতত ভবানীপুর, জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হলেও খড়দহ, গোসাবা, দিনহাটা এবং শান্তিপুরের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ৬-১৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। এই তারিখের মধ্যেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে ভবানীপুরের সম্ভাব্য প্রার্থী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এর আগে এই বিধানসভা কেন্দ্রেই জয়ী হয়েছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষকে প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে পর্যুদস্ত করেছিলেন। কিন্তু পরে তিনি বিধানসভা স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। জানান, নিজের ইচ্ছা এবং দলের নির্দেশেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত। সম্ভবত এই কেন্দ্রেই তৃণমূলের হয়ে লড়াই করবেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে রোড শো করা যাবে। তবে বাইক বা সাইকেল র‌্যালি নিষিদ্ধ। রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে শুধুমাত্র স্ট্রিট কর্নার মিটিং করা যাবে। ডোর টু ডোর ক্যাম্পিংয়ের ক্ষেত্রে প্রার্থী-সহ পাঁচজন যাওয়া যাবে। সিইও অনুমতি সাপেক্ষে ভিডিও ক্যাম্পেইনিং করা চলবে। তবে সেখানে ৫০ জনের বেশি মানুষ থাকতে পারবেন না। রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে গাড়ি ব্যবহার করতে হবে। কুড়ি জন স্টার ক্যাম্পেইনার-এর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সাইলেন্স পিরিয়ড হিসেবে দেওয়া হয়েছে ৭২ ঘন্টা।

জানানো হয়েছে, ভোটের দিন প্রার্থীর গাড়িতে পাঁচজন থাকতে পারবেন। সর্বোচ্চ দুটি গাড়ি রাখা যাবে প্রার্থীর সঙ্গে। গণনার পর কোনও ধরনের বিজয় মিছিল একেবারেই করা যাবে না। কমিশন সূত্রে খবর, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর স্কুটিনি করা হবে এবং ১৬ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরের পাশাপাশি ভোটগ্রহণ হবে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরেও। তিনটি কেন্দ্রেরই ভোট গণনা হবে আগামী ৩ অক্টোবর। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জের প্রার্থী মারা গিয়েছিলেন।

ভোটের ফল ঘোষণার আগেই করোনা-আক্রান্ত হয়ে মারা যান খড়দহের তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিং। সেখানে জিতেছিল তৃণমূল। বিধায়ক পদে শপথ নেওয়ার পরে মারা গিয়েছেন গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। এ ছাড়া বিধানসভায় জিতেও সাংসদ পদে থেকে যাবেন বলে দিনহাটা ও শান্তিপুরের বিধায়ক পদ ছেড়েছেন বিজেপি-র দুই সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার। ফলে পাঁচটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন এবং দুটি কেন্দ্রে নির্বাচন বাকি ছিল। সেই ভোটের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে লাগাতার দরবার করছিলেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। এই কেন্দ্রগুলিতে যাতে পুজোর আগেই নির্বাচন সম্পন্ন হয় তারজন্য অনুরোধও করছিলেন। অবশেষে মিলল সবুজ সঙ্কেত।

গত ৫ মে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবিধানিক নিয়ম মেনে ৫ নভেম্বরের মধ্যে তাঁকে বিধায়ক হয়ে আসতে হবে। বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর তিন মাস অতিক্রান্ত হয়ে যেতেই উপনির্বাচনের দাবিতে বারবার নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল। অবশেষে শনিবার উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। অন্যান্য কেন্দ্রের তুলনায় সবথেকে বেশি নজরে থাকবে ভবানীপুর বিধানসভা আসন। এই আসনে প্রার্থী হওয়ার কথা রয়েছে মমতার। গত বিধানসভা ভোটে ভবানীপুরে প্রার্থী হয়েছিলেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি ২১ মে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। আর তার পরেই তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, এই আসনে প্রার্থী হবেন মমতাই। তাই উপনির্বাচন ঘোষণার অনেক আগে মে মাস থেকেই ওই আসনের উপনির্বাচনের প্রস্তুতিতে নেমে পড়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *