আগরতলা, ২ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ রেবতিমোহন দাস পদত্যাগ করেছেন। বিধানসভার অধ্যক্ষ তাঁর পদত্যাগপত্র আজ বৃহস্পতিবার উপাধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেনের হাতে তুলে দিয়েছেন। বিধানসভার সচিব বিষ্ণুপদ কর্মকার এ-বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছেন, আজ দুপুরে অধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রেবতিমোহন দাস। এদিকে, আজই তাঁকে বিজেপি প্রদেশ উপ-সভাপতি পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রশাসনিক কাজ সামলানো তাঁর পক্ষে কঠিন হয়ে উঠেছিল। তাই অধ্যক্ষ পদে পদত্যাগ দিয়েছেন। সাথে তিনি যোগ করেন, বরাবরই সংগঠন নিয়ে কাজ করতেই পছন্দ করি। তাই সংগঠনের বড় দায়িত্ব দেওয়ায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত।
প্রসঙ্গত, বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী রেবতিমোহন দাস ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন। তিনি প্রতাপগড় এলাকায় প্রাক্তন মন্ত্রী অনিল সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। কিন্তু অনিল সরকার প্রয়াত হওয়ার পর থেকে সিপিএম পার্টির সাথে দূরত্ব শুরু হয় রেবতির। একসময় তিনি সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁকেই ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে প্রতাপগড় কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। সিপিএমের ঘাঁটি ওই কেন্দ্র থেকে তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হন।
ত্রিপুরায় ক্ষমতা বদল হওয়ার পর তাঁকে অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সংসদীয় রাজনীতির অভিজ্ঞতার অভাবে বিধানসভা পরিচালনা তাঁর পক্ষে খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ফলে বিধানসভার অধ্যক্ষ বদলের দাবি উঠেছিল। ইতিপূর্বে একাধিকবার অধ্যক্ষ পরিবর্তনের জল্পনা দেখা দিলেও কার্যত কিছুই হয়নি। সম্প্রতি ত্রিপুরা মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের পর থেকে অধ্যক্ষ বদলের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠেছিল।
বিধানসভার অধ্যক্ষ পদ থেকে রেবতিমোহন দাস পদত্যাগ করে বলেন, আজ দুপুরে বিধানসভায় উপাধ্যক্ষের হাতে পদত্যাগ পত্র তুলে দিয়েছি। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারণেই পদত্যাগ করেছি। তার বেশি এখনই আমার কিছু বলা সম্ভব নয়। এদিকে সন্ধ্যায় তাঁকে প্রদেশ বিজেপি উপ-সভাপতি পদে দায়িত্ব দেন প্রদেশ সভাপতি ডা. মানিক সাহা। নতুন দায়িত্ব পেয়ে তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলানো কঠিন হয়ে উঠেছিল। ফলে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন সম্ভব হচ্ছিল না। তাই পদত্যাগ করেছি। সাথে তাঁর দাবি, বরাবরই সংগঠনের কাজে পছন্দ এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। তাই, দলের প্রদেশ উপ-সভাপতির দায়িত্ব পেয়ে আমি ভীষণ আনন্দিত। এই দায়িত্ব দেওয়ার জন্য তিনি প্রদেশ সভাপতিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এদিকে, নতুন অধ্যক্ষ নিয়ে ইতিমধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছে। সূত্রের দাবি, খয়েরপুর কেন্দ্রের বিধায়ক রতন চক্রবর্তীকে অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কারণ, তাঁর সংসদীয় রাজনীতির অসীম অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবে, উপাধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেনকেও অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব দেওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।