BRAKING NEWS

ত্ৰিপুরায় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা : মামলার স্বপক্ষে প্রমাণ ও ভিডিও রেকর্ডিং চেয়েছে উচ্চ আদালত

আগরতলা, ২ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : কোভিড বিধি লঙ্ঘনের দায়ে ধৃত ১৪ তৃণমূল কর্মীকে আদালতে সোপর্দ করার বদলে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়ার ঘটনায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেছে উচ্চ আদালত। শুধু তা-ই নয়, থানায় ধৃতদের ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য অন্যায় আবদারের বিষয়টির ভিডিও রেকর্ডিং এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার সংক্ৰান্ত মামলার স্বপক্ষে প্রমাণ চেয়েছে আদালত। পুলিশের দায়েরকৃত স্বতঃপ্রণোদিত মামলা বাতিল করতে তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিকের আবেদনের শুনানিতে এই আদেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি এএ কুরেশি। তিনি পরবর্তী শুনানির দিন ২৩ সেপ্টেম্বর ধার্য করেছেন।

অভিযোগ, গত ৮ আগস্ট খোয়াই থানায় ঢুকে কোভিড বিধি লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেফতার ১৪ জন তৃণমূল কর্মীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলীয় নেতৃবৃন্দ। তাঁরা টেবিল চাপড়ে পুলিশকে চোখ রাঙানি দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ ধৈর্য সহকারে সমস্ত পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অপরাধে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। খোয়াই পুলিশ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ দোলা সেন, পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, কুণাল ঘোষ, ত্রিপুরায় তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিক এবং প্রকাশ দাসের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অপরাধে মামলা দায়ের করেছে।


ওই মামলা বাতিল চেয়ে ত্রিপুরা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিক। তাঁর অভিযোগ, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে পুলিশ। জামিনযোগ্য ধারায় নথিভুক্ত মামলায় খোয়াই থানার পুলিশ ১৪ জন তৃণমূল কর্মীকে থানা থেকে জামিন দেয়নি। এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য জড়িত রয়েছে। তাই তিনি মামলাটি বাতিলের আবেদন জানিয়েছেন।

উচ্চ আদালত গত ১৮ আগস্ট উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে ২ সেপ্টেম্বর ওই মামলায় পরবর্তী শুনানির ধার্য করেছিল। ওই সময়ের মধ্যে পুলিশ তদন্তকার্য চালিয়ে যাবে। তবে, উচ্চ আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার পূর্বে চূড়ান্ত রিপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে জমা দেওয়া যাবে না। সাথে খোয়াই থানায় মামলার সম্পূৰ্ণ নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত।
আজ উচ্চ আদালতে ওই মামলার শুনানি হয়েছে। আবেদনকারীর কৌঁসুলি আদালতে সওয়াল করেন, তেলিয়ামুড়া থানায় দায়েরকৃত মামলা ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জামিনযোগ্য ধারায় মামলায় ধৃতদের আদালতে সোপর্দ করার প্রয়োজন ছিল না। তিনি বলেন, ধৃতদের প্রথমে ধলাই পুলিশ লাইনে রাখা হয়েছিল এবং পরে খোয়াই থানায় স্থানান্তর করেছিল। এদিকে, অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, তেলিয়ামুড়া থানায় রুজু মামলায় ধৃতরা জামিননামা দিতে অস্বীকার করেছিলেন। তাই তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়নি। ফলে, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করার জন্য তাঁদের খোয়াই নেওয়া হয়েছিল। তখনই আবেদনকারীরা থানায় গিয়ে অন্যায় আবদার করেন এবং প্রচুর ভিড় একত্রিত করে পুলিশের কাজে বাধা দেন।

উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি আরও কিছু প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, কোভিড বিধি লঙ্ঘনের দায়ে ধৃতদের সংশ্লিষ্ট আদালতের অনুমতি ছাড়া এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়ার ঘটনায় আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। সাথে তিনি বলেন, থানায় ধৃতদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য অন্যায় আব্দারের মতো ঘটনারও আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন। তাই, তিনি মামলায় স্বপক্ষে প্রমাণ এবং ভিডিও রেকর্ডিং আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পরবর্তী শুনানির দিন ২৩ সেপ্টেম্বর ধার্য করেছে আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *