BRAKING NEWS

ভারতের সকল নাগরিকই প্রথমে হিন্দু পরে অন্য কিছু : মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব

himanta-biswa-sharmaগুয়াহাটি, ১১ ফেব্রুয়ারি, (হি.স.) : বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশের বেতুলে আরএসএসপ্রধান মোহন ভাগবত যে ভাষণ দিয়েছেন সেই বক্তব্য প্রতিধ্বনিত হয়েছে অসমের শিক্ষা, অর্থ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মার মুখে| গুয়াহাটিতে চলমান ত্রিদবসীয় হিন্দু আধ্যাত্মিক ও সেবা সমারোহ উত্তর পূর্ব অধ্যায়ের দ্বিতীয় দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে হিমন্ত ভারতবর্ষের সকল নাগরিককেই জন্মসিদ্ধ হিন্দু বলে আখ্যা দিয়েছেন| তিনি বলেন, হিন্দুস্তানের সবাই প্রথমে হিন্দু তার পর অন্য কিছু| তা তিনি মুসলমানই হোন কিংবা শিখ বা খ্রিষ্টান| এ ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মন্ত্রী শর্মা| তাছাড়া ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে হিন্দু দর্শন ও তত্ত্ব ভালো করে হৃদঙ্গম করে নিজের নিজের জীবনশৈলীর সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ারও ডাক দিয়েছেন তিনি| বলেন, যদি কোনও ছাত্র বা ছাত্রী হিন্দুত্বের আধারে নিজের জীবন অতিবাহিত করে তা হলে তাঁর ব্যক্তিত্ব আপনাআপনিই বিকশিত হয়ে যাবে| নিশ্চিত প্রতিষ্ঠাও পাবে সে|
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, একবিংশ শতাব্দির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যুগে দেশের সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতাকে মানুষের মনে জাগ্রত করতে গুয়াহাটিতে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে হিন্দু আধ্যাত্মিক ও সেবা সমারোহ উত্তর পূর্ব অধ্যায়ের ত্রিদিবসীয় অনুষ্ঠান| গতকাল সকাল সাড়ে দশটায় আউনিআটি সত্রের সত্রাধিকার ড. পীতাম্বর দেবগোস্বামীর প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে| এরপর এক বিশাল শোভাযাত্রাও বের হয়| প্রদর্শনীর দ্বার উন্মোচন করেন নৃত্যাচার্য যতীন গোস্বামী| সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এক আলোচনাসভায় মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল অংশগ্রহণ করে ভারতীয় তথা হিন্দু দর্শনের ওপর ভাষণ দেন| তিনি তাঁর বক্তব্যে চিকাগোয় স্বামী বিবেকানন্দের ভাষণের প্রসঙ্গ টেনে এনে ভারত যে বিশ্ব দরবারে শ্রেষ্ঠ আসন নিতে চলেছে তার অবতারণা করেন| মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে সনাতন ধর্ম, এর সংস্কৃতি ও মহত্ত্বের ওপর আলোকপাত করে বক্তব্য পেশ করেন| এই সমারোহ চলবে রবিবার পর্যন্ত|
আজকের আলোচনাসভার পর বেলা দুটোয় শুরু হয় গুরুপূজন ও কুমারি পূজা| সারিবদ্ধ অসংখ্য গুরু স্থানীয় ব্যক্তিকে গন্ধ-পুষ্প-ধুনো সহযোগে পূজার্চনা করেছেন যুবক-যুবতীরা| অন্যদিকে আরও চার সারিতে বসা কুমারিদের পুজো করেছে বালক-কিশোররা| সত্রাধিকার পীতাম্বর দেবগোস্বামীর পৌরোহিত্যে এই অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন দুই পণ্ডিত ভবকৃষ্ণ মিশ্র ও উমাকান্ত দেবশর্মা|
হিন্দু আধ্যাত্মিক ও সেবা সমারোহ চত্বরে বিভিন্ন সংস্থা তাদের বিপণি খুলে জনসাধারণের মধ্যে আধ্যাত্মিকতা, ভারতীয় সংস্কৃতি ও পরিবেশ সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে| এতে অংশগ্রহণ করেছে গীতা প্রেস, ইসকন, প্পজাপিতা ব্রহ্মকুমারি, তামিলনাড়ুর পালনি ও কাঞ্চি থেকে আগত হিন্দু সমগ্র উন্নতি অভিযান (হিন্দু প্রগ্রেসিভ মুভমেন্ট), অসম সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট, স্বচ্ছ অসম সেনা, সোশাল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার, সেবা ভারতী পূর্বাঞ্চল, সত্য সাঁই রিসার্চ সেন্টার অসম, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ, রাষ্ট্র সেবিকা সমিতি, সরস্বতী সেবা ন্যাস তেজপুর, সরস্বতী স্মারক ট্রাস্ট শিলচর, সেউজি (সবুজ) ধরা বজালি, অসম হস্ততাঁত শিল্প, অসম সরকারি আয়ুর্বেদিক কলেজ, উত্তর কমলাবাড়ি সত্র মাজুলি, ইউনাইটেড অব যোগা অ্যান্ড নিউট্রে্‌শন সায়েন্সেস, পদ্মনারায়ণ কলাকেন্দ্র, জনজাতি ধর্ম সংস্কৃতি সুরক্ষা মঞ্চ, ফ্রেন্ডস অব ট্রাইবাল সোসাইটি, শ্রীহরি সসঙ্গ সমিতি হেরিটেজ এক্সপ্লোরার, কামরূপ জেলা দেব দামোদর সংঘ, জাগরণ সাহিত্য প্রকাশন, কেশব সেবা কেন্দ্র, আরোগ্‌ষ ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়া প্রভৃতি| তাছাড়া সমারোহ চত্বরে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য শিবির খুলেছে স্থানীয় মাড়োয়ারি হাসাপাতাল ও শংকরদেব নেত্রালয়|

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *