আঙ্কারা ও ইস্তানবুল, ৭ ফেব্রুয়ারি (হি.স.): চারিদিকে শুধুই ধ্বংসস্তূপ, ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য মৃতদেহ। ধূলিসাৎ অসংখ্য বহুতল, প্রকৃতির রোষে একেবারে বিধ্বস্ত তুরস্ক ও সিরিয়া। তিনটি বড়সড় ভূমিকম্প ও অজস্র আফটারশক সহ্য করার পর তুরস্ক ও সিরিয়ায় মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ৫০০০ ছাড়িয়ে গেছে। দুই দেশে আহত হয়েছেন ২৩ হাজারের বেশি মানুষ। সোমবার ভোর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে তিনবার বড়সড় ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক, কম্পন অনুভূত হয় সিরিয়াতেও। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৭.৮, ৭.৬ ও ৬.০। মঙ্গলবারও হালকা তীব্রতার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক।
টেলিভিশনে দেওয়া এক ব্রিফিংয়ে তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় বলেছেন, তুরস্কের মৃতের সংখ্যা ৩৪১৯ এ পৌঁছেছে।কমপক্ষে ২০ হাজার ৫৩৪ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তুরস্কে এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি জানান। এই কর্মকর্তা যোগ করেন, ২৫ হাজার কর্মী উদ্ধারকাজ করছেন। উদ্ধারকারীরা আহতদের পরিবহন ও অনুসন্ধান অভিযানে সহায়তার জন্য কমপক্ষে ১৮টি জাহাজ ও ৫৪টি বিমান ব্যবহার করছে।
এদিকে সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬০২-এ। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবারের ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩ হাজার ৬৪৮ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।ভয়াবহ ভূমিকম্পের জেরে তুরস্ক এবং সিরিয়ায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে বহু ঘরবাড়ি, কমপক্ষে ১,৫০০টি বহুতল ভেঙে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ হাজার বহুতল। দুই দেশে আহতের সংখ্যা ২৩ হাজারের বেশি। ভূকম্পনের জেরে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে দুই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত। চার দিকে শুধুই ধ্বংসের ছবি। হাসপাতালগুলিতে ভিড় বাড়ছে জখমদের।
সিরিয়া এবং তুরস্ককে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে বিভিন্ন দেশ। ভারতের তরফেও উদ্ধারকারী এবং চিকিৎসকদের দল পাঠানো হয়েছে। তুরস্কে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রথম দফায় ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে ভারত। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তল্লাশি উদ্ধারকারী পঞ্চাশ জনের একটি দল বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত ডগ স্কোয়াড ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং মেডিক্যাল টিম নিয়ে প্রথম ভারতীয় সি সেভেনটি নুরার ইতিমধ্যেই আদানা পৌঁছেছে। এক ট্যুইট বার্তায় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর বলেছেন দ্বিতীয় বিমানটিও সে দেশে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে। উল্লেখ্য প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ডক্টর পিকে মিশ্রা পৌরহিত্যে গতকাল এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে তুরস্কে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।