ঐক্যবদ্ধ থাকুন, বিরোধীদের উদ্দেশ্যে আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর, ‘অপারেশন সিন্দুর’ নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে বিস্তারিত বর্ণনা কেন্দ্রের

নয়াদিল্লি, ৮ মে : ঐক্যবদ্ধ থাকুন। দেশের সমস্ত বিরোধী দলের উদ্দেশ্যে এই আহ্বান রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিকে, বৃহস্পতিবার ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর বিষয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর সভাপতিত্বে এই সর্বদলীয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, বিজেপি সভাপতি জে.পি. নাড্ডা এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।

কংগ্রেসের পক্ষে রাহুল গান্ধী এবং মল্লিকার্জুন খাড়গে, তৃণমূলের পক্ষ থেকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডিএমকের টি আর বালু উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিরোধী নেতাদের মধ্যে ছিলেন সমাজবাদী পার্টির রামগোপাল যাদব, আপ-এর সঞ্জয় সিং, শিবসেনা (উদ্ধব)-এর সঞ্জয় রাউত, এনসিপি (শরদ পাওয়ার)-এর সুপ্রিয়া সুলে, এআইএমআইএম-এর আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এবং বিজেডির সসমিত পাত্র।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যৌথভাবে ‘অপারেশন সিন্দুর’ সম্পর্কে বিরোধীদের বিস্তারিত জানিয়েছেন। বুধবার ভোরে চালানো এই অভিযানে পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরে থাকা একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। কেন্দ্র জানিয়েছে, মুরিদকেতে লস্কর-এ-তৈবার সদর দপ্তর, বাহাওয়ালপুরে জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটি এবং আরও কয়েকটি জঙ্গি ঘাঁটি এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল। অভিযানকে ‘পরিমিত, দায়িত্বশীল এবং উত্তেজনা এড়িয়ে চলার কৌশলে পরিচালিত’ বলে বর্ণনা করেছে সরকার। জানানো হয়েছে, ২৬/১১ হামলার সাথে যুক্ত ডেভিড হেডলি ও আজমল কাসব যে ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল, তাও ধ্বংস হয়েছে।

পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, “যেকোনো পাল্টা হামলার জন্য ভারত সম্পূর্ণ প্রস্তুত।” এই বার্তা আরও জোরালোভাবে তুলে ধরেন উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং, যিনি জানান, “ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানের যে কোনো উস্কানির জবাব দিতে প্রস্তুত।”

সর্বদলীয় বৈঠকের পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, “ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহসিকতায় গর্বিত। জয় হিন্দ!” এই অভিযানের কয়েক ঘণ্টা আগে, জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে এক সেনা ও ১২ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হন। দেশব্যাপী নিরাপত্তা মহড়া শুরু হয়েছে, যেখানে বেসামরিক নাগরিক, প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক ও ফার্স্ট রেসপন্ডারদের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সাড়া দেওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর এই প্রথমবার সারা দেশে ব্ল্যাকআউট ও সাইরেন বাজানো হয়েছে।

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক পহেলগামের ঘটনার পর একেবারে তলানিতে পৌঁছেছে। ভারত সিন্ধু জলচুক্তি (IWT) স্থগিত করেছে, যা পাকিস্তানের চাষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জল সরবরাহ করত। ইসলামাবাদ এই সিদ্ধান্তকে ‘যুদ্ধের সমতুল্য’ বলে অভিহিত করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *