নয়াদিল্লি, ৭ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : তদন্ত চলাকালীন কোনও অভিযুক্তের ভার্জিনিটি টেস্ট বা কুমারীত্ব পরীক্ষা অসাংবিধানিক। ১৯৯২ সালের সিস্টার অভয়া হত্যা মামলার ক্ষেত্রে, সিস্টার সেফির ভার্জিনিটি টেস্টকে চ্যালেঞ্জ করে হওয়া মামলায় মঙ্গলবার এই রায় দিলেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি স্বর্ণ কান্তা শর্মা।
তিনি জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়া সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১-এর লঙ্ঘনকারী। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১-এ নাগরিকদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এর ফলে সিস্টার সেফির মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বলেও জানান তিনি। সেই সঙ্গে, আদালত সিস্টার সেফিকে তার বিরুদ্ধে চলা ফৌজদারি মামলার কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্ষতিপূরণ চাওয়ার অধিকারও দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের ২৭ মার্চ কেরলের কোট্টায়ামে সেন্ট পায়াস টেন্থ কনভেন্টের কুয়ো থেকে পাওয়া গিয়েছিল সিস্টার অভয়া নামে এক ২০ বছরের শিক্ষানবিশ সন্ন্যাসিনীকে। স্থানীয় পুলিশ এবং কেরল পুলিশের অপরাধ দমন শাখা প্রথমে ঘটনাটি আত্মহত্যার ঘটনা বলে মনে করেছিল। তবে, এই ঘটনা নিয়ে তীব্র জনরোষের মুখে তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছিল সিবিআই-কে। তদন্তের সময় ভার্জিনিটি টেস্ট করে দেখা গিয়েছিল একজন খ্রীষ্টিয় সন্ন্যাসিনী হওয়া সত্ত্বেও সিস্টার সেফি কুমারী নয়। আরও তদন্তে জানা গিয়েছিল, এই মামলার আরেক অভিযুক্ত ফাদার কোট্টুরের সঙ্গে, তার অবৈধ সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের কথা জানতে পেরে গিয়েছিলেন সিস্টার অভয়া। তাঁর মুখ বন্ধ করতেই তাঁকে হত্যা করেছিল সিস্টার সেফি এবং ফাদার কোট্টুর।
২০২০ সালে এক বিশেষ সিবিআই আদালত সিস্টার সেফিকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মূলত, সিস্টার সেফির ভার্জিনিটি টেস্টের ভিত্তিতেই, ফাদার কোট্টুরের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক প্রমাণ হয়েছিল আদালতে। সেই রায়ের বিরুদ্ধে কেরল হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন সিস্টার সেফি। উচ্চ আদালত আপাতত তাঁর সাজা স্থগিত রেখেছে। বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে। এর পাশাপাশি ২০০৯ সালে, তদন্ত চলাকালীন তার ভার্জিনটি টেস্ট করাকে চ্যালেঞ্জ করেছিল সিস্টার সেফি। এদিন সেই মামলারই রায় দিল দিল্লি হাইকোর্ট।