আগরতলা, ৭ ফেব্রুয়ারি(হি. স.) : ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে পশ্চিমবঙ্গের ঢোল পেটালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তাঁর পদযাত্রায় দলের মুষ্টিমেয় কর্মী-সমর্থকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। তবে, তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশ ছুয়েছে তা রাস্তার দুই ধারে উত্সাহী মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে।
কিন্তু, আজ তাঁর কথায় কিছুটা অহংকার ফুটে উঠেছে। কারণ বিজেপিকে নিশানা করতে গিয়ে তিনি ঝাঁঝালো সুরে দাবি করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেস মহীরুহ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক বট বৃক্ষে পরিণত হয়েছে। তাই গ্রেফতারির ভয় দেখিয়ে তৃণমূলকে থামানো যাবেনা। এদিকে, ত্রিপুরায় ক্ষমতা দখল সম্ভব নয় জেনেও তিনি আজ মানুষের কাছে সুযোগ চেয়েছেন। তাঁর কাতর আবেদন, ভিক্ষে নয়, ঋণ চাইছি। প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হলে সুযোগ ফিরিয়ে নেবেন।
আজ সকালে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন প্রাঙ্গণ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পদযাত্রা শুরু করেন। সারা শহর ঘুরে পুণরায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে এসেই তাঁর পদযাত্রা সমাপ্ত হয়েছে। সেখানেই তিনি জনসভায় ভাষণ দিয়েছেন এবং কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপিকে একসূত্রে গেঁথে সমালোচনার বাণে বিঁধেছেন।
এদিন নির্বাচনী জনসভায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে সবুজ সাথী, স্বাস্থ্য সাথী সহ একাধিক জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের তালিকা গুনিয়েছেন। তাঁর দাবি, কেন্দ্রের সহায়তায় নয়, তৃণমূল সরকারের ঐকান্তিক ইচ্ছায় পশ্চিমবঙ্গে গরীবের মুখে হাসি ফুটেছে। স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময়ে বাংলা যে উন্নয়নের ছোয়ার বাইরে ছিল, তৃণমূলের সরকার মানুষের দোয়ারে সেটা পৌছে দিয়েছে। তাঁর দাবি, সারা দেশে ৪০ শতাংশ বেকারত্বের হার বেড়েছে। অথচ, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকারের দৌলতে বেকারত্ব কমেছে।

আজ তিনি পশ্চিমবঙ্গে দলত্যাগীদের একহাত নিয়েছেন। তাঁর কটাক্ষ, যখন তোমার কেউ ছিল না, তখন ছিলাম আমি। ভোটের আগে সুযোগ বুঝে দল বদলে ফেলেছে। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় সিপিএমের সাথে কংগ্রেস হাত মিলিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও মিলিয়েছিল, মানুষ তাঁদের ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। তাঁর দাবি, সত্যিকারের কংগ্রেস ও সিপিএম এখন নেই। তাঁরা বদলে গেছে। তাই, অনেক আগেই বলেছিলাম, সিপিএম হল কংগ্রেসের বি টিম।
তিনি সুর চড়িয়ে বলেন, বাম জমানায় তাঁরা আমাকে অনেক মেরেছে। আন্দোলনে জন্ম আমার, তাই মার খেয়েও থেমে যাইনি। তাঁর দাবি, যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াইয়ে নেমে জীবন দিতে রাজি। কিন্তু কারোর সাথে কোন আপোষ করব না। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে কাজ করতে গিয়ে ভুল-ত্রুটি হয়েছে। আইন তার বিচার করবে। কিন্তু, তার বদলে ভয় দেখানো হচ্ছে। তাঁর কটাক্ষ, তৃণমূলের সাথে রাজনৈতিক লড়াইয়ে ব্যর্থ হয়ে সিবিআই-ইডিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এজন্য তিনি সতর্ক করে জোর গলায় বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস মহীরুহ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক বটবৃক্ষে পরিণত হয়েছে। কোনভাবেই তৃণমূলকে থামানো যাবে না। সাথে তাঁর পরামর্শ, কাকে ভোট দেবেন বলার প্রয়োজন নেই। নির্ভয়ে ভোটের বাক্সে মতামত ফেলে আসুন। তাঁর কাতর আবেদন, ভিক্ষে নয়, চাইছি ঋণ। ত্রিপুরার মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হলে সুযোগ ফিরিয়ে নেবেন।

