আগরতলা, ৩ ফেব্রুয়ারি(হি. স.) : মানুষের কল্যাণে নয়, ত্রিপুরায় অস্তিত্ব রক্ষায় বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস জোট বেঁধেছে। কিন্তু, বিজেপি ত্রিপুরাকে সারা বিশ্বে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য লড়াই করছে। অমরপুরে বিজয় সংকল্প জনসভায় অংশ নিয়ে এভাবেই বামগ্রেস জোটকে বিঁধলেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। তাঁর দাবি, অতীতের খুন-সন্ত্রাসী, রেশন চোর, কমিশনবাজ দুই দল একসাথে মিলেছে। কারণ, ত্রিপুরায় বিপ্লব কুমার দেব ও মানিক সাহার সরকার জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। সৎ ও স্বচ্ছ সরকার বেঈমানদের যুগের সমাপ্তি ঘটিয়েছে।
এদিন তিনি বলেন, পাঁচ বছর পূর্বে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চেয়েছিলেন, দেশের অন্য অংশে বিকাশের ছোঁয়া পৌছালে ত্রিপুরাতেও উন্নয়নের পরশ লাগতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর সেই স্বপ্নকেই বিপ্লব কুমার দেব ও মানিক সাহার নেতৃত্বে সরকার পূরণে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। তার প্রমাণ ইতিমধ্যেই মিলেছে। তাঁর দাবি, পাঁচ বছরে পুরনো ত্রিপুরা বদলে নতুন আকাঙক্ষার রাজ্যে পরিণত হয়েছে। ডাবল ইঞ্জিনের সরকার এই রাজ্যের ভাগ্য এবং চিত্র বদলে দিয়েছে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য বিশেষ চিন্তা করেন। তাই, এই অঞ্চলের উন্নয়নের গাড়ি এগিয়ে চলেছে, কখনোই থেমে যাবে না, দৃঢ় প্রত্যয়ের সুরে বলেন তিনি।

আজ বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি কেন্দ্রীয় বাজেটের বিশেষ প্রাপ্তিগুলি জনগণের কাছে সবিস্তারে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, অমৃতকালে সাধারণ বাজেটে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ৭৯০০০ কোটি টাকা, জনজাতি কল্যাণে ১৫০০০ কোটি টাকা এবং জনজাতি ছেলেমেয়েদের শিক্ষার প্রশ্নে ৩৮৮০০ শিক্ষক নিযুক্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তাঁর দাবি, গত নয় বছরে ভারত গোটা বিশ্বে দশম থেকে পঞ্চম অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। এবারের সাধারণ বাজেটে তা আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাঁর বক্তব্য, বাজেটে জনজাতি ক্ষেত্রে বরাদ্দ ৪ গুণ বৃদ্ধি হয়েছে।
তাঁর কথায়, ত্রিপুরায় বিজেপি জোট সরকার প্রতিষ্ঠার পর ২ লক্ষ ৭০ হাজার রান্নার গ্যাসের সংযোগ, ৩ লক্ষ ৮০ হাজার ঘর নির্মাণ, ১৩ লক্ষ আয়ুষ্মান কার্ড প্রদান, ৪ লক্ষ ৫০ হাজার শৌচালয় নির্মাণ সফলতার সাথে জনস্বার্থে উত্সর্গিত হয়েছে। তাঁর দাবি, সন্ত্রাসবাদে ক্ষতিগ্রস্ত ত্রিপুরায় এনএলএফটি-র সাথে কেন্দ্রীয় সরকারের চুক্তির মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, দীর্ঘকালের ব্রু শরণার্থী সমস্যার সমাধান ত্রিপুরায় তাঁদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। সাথে তিনি যোগ করেন, পর্যটনে বিকাশের মাধ্যমে ত্রিপুরার অর্থনৈতিক ভিত মজবুতের প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে।
তিনি দৃঢ় প্রত্যয়ের সুরে বলেন, ত্রিপুরার জন্য যাঁরা কখনোই ভাবেননি, বিধানসভা নির্বাচনে মানুষ তাঁদের কড়া জবাব দেবেন। কারণ, মানুষের কল্যাণে নয়, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস ত্রিপুরায় জোট বেঁধেছে। তাঁর দাবি, বিজেপি ত্রিপুরাকে সারা বিশ্বের দরবারে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য লড়াই চালিয়েছে। তাঁর মতে, যুবদের আকাঙক্ষার বাস্তবায়ন, মহিলাদের সম্মান, পর্যটন ও বাণিজ্যে বৃদ্ধির জন্য বিজেপি-কে পুণরায় ক্ষমতায় আনতে হবে।
তিনি আজ বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস-কে নিশানা করে বলেন, ত্রিপুরায় একসময় ঘরে ঢুকে বিরোধী কর্মীদের নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। পুলিশ তখন নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। অথচ আজ বিজেপি কার্যকর্তাদের পাশাপাশি বিরোধী দলের কর্মীদেরও সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। পরিবর্তিত ত্রিপুরায় এই চিত্র সর্বত্র দেখা যাচ্ছে। সাথে তিনি যোগ করেন, বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের জমানায় দুর্নীতি হয়েছে। রেশনে চুরি এবং কমিশন বাণিজ্য অবাধে চলেছে। তাই, আজ বিজেপির বিরুদ্ধে উভয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছে। কারণ, বিপ্লব কুমার দেব ও মানিক সাহার নেতৃত্বে সরকার জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। সৎ ও স্বচ্ছ সরকার বেঈমানদের যুগের সমাপ্তি ঘটিয়েছে। তাঁর আবেদন, আগামীদিনেও মানুষের অধিকার রক্ষা হোক, চাইলে বিজেপিকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনুন। লাল গুন্ডাদের হাত থেকে বাঁচতে হলে পদ্ম চিহ্নে বোতাম টিপুন।

