BRAKING NEWS

রেশনের জন্য চাষীদের কাছ থেকে চাল কিনতে খাদ্য ও কৃষি দপ্তরের মধ্যে টানাপোড়েন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ ফেব্রুয়ারি৷৷ চাল নিয়ে দুই দপ্তরের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে৷ রাজ্যের চাষীদের কাছ থেকে দশ হাজার মেট্রিক টন চাল ক্রয় করে গণবন্টন ব্যবস্থা তথা রেশনে সরবরাহ করার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ কিন্তু চাল ক্রয় করার দায়িত্ব নিয়েই কৃষি ও খাদ্য দপ্তরের মধ্যে টানাটানি শুরু হয়েছে৷ খাদ্য দপ্তরের বক্তব্য, কৃষকদের কাছ থেকে চাল ক্রয়ের দায়িত্ব কৃষি দপ্তরের৷ কিন্তু, কৃষি দপ্তর বলছে যেহেতু গণবন্টন ব্যবস্থার দায়িত্বে রয়েছে খাদ্য দপ্তর তাই তারাই কৃষকদের কাছ থেকে চাল কিনবে৷ ফলে, দুই দপ্তরের মধ্যে টানাপোড়েনে আসল উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হওয়ার ক্ষেত্রে সংশয় দেখা দিয়েছে৷ সূত্রের খবর, সম্প্রতি কেন্দ্র থেকে আধিকারিকরা এসে এফসিআই আধিকারিকদের নিয়ে রাজ্য সরকারের সাথে বৈঠক করেছে৷ ঐ বৈঠকে চাল ক্রয়ের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে৷ কিন্তু কোন দপ্তর কৃষকদের কাছ থেকে চাল ক্রয় করবে তা ঐ বৈঠকে স্থির হয়নি৷ কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের বক্তব্য, চাল ক্রয় করার দায়িত্ব কোন দপ্তর নেবে সেটা রাজ্য সরকারের এক্তিয়ার ভুক্ত৷ এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার কোন হস্তক্ষেপ করবে না৷

দীর্ঘদিন ধরেই ত্রিপুরা সরকারের তরফ থেকে কেন্দ্রের কাছে এই প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছিল যাতে রাজ্যের চাষীদের কাছ থেকে চাল ক্রয় করে রেশনে সরবরাহ করা হয়৷ গত ১৮ জানুয়ারি নয়াদিল্লীতে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে এই বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবন্টন মন্ত্রী রাম বিলাস পাশোয়ান৷ সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, কৃষকদের কাছ থেকে যে চাল ক্রয় করবে রাজ্য সরকার তার মূল্য কেন্দ্রীয় সরকার মিটিয়ে দেবে৷

ঐদিন সাক্ষাৎকালে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে রাজ্যের চাষীদের কাছ থেকে চাল ক্রয় করার বিষয়ে সম্মতি প্রদানের দাবী জানিয়েছিলেন৷ মুখ্যমন্ত্রীর ঐ দাবীতে পত্রপাঠ সম্মতি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবন্টন মন্ত্রী৷ পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের আধিকারীকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন এই বিষয়ে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য৷ এরই সাথে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছিলেন রাজ্যে ধান ভাঙার মিলের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেছিলেন আগামী এপ্রিল থেকে রাজ্যে গম সরবরাহ করা হবে৷ রাজ্যে বর্তমানে তিন লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্যশষ্যের প্রয়োজন জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন অনুযায়ী৷ এফসিআই এই খাদ্যশষ্য সরবরাহ করছে রাজ্যকে৷

কিন্তু এখন দুই দপ্তরের মধ্যে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কৃষকদের কাছ থেকে চাল কেনা শুরু হচ্ছে না৷ খাদ্য দপ্তরের জনৈক আধিকারিক জানিয়েছেন, কৃষক সংশ্লিষ্ট সমস্ত বিষয় কৃষি দপ্তরের এক্তিয়ারভুক্ত৷ ফলে, কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় করার ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে৷ এদিকে, কৃষি দপ্তরের বক্তব্য, কৃষকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সমস্ত বিষয় কৃষি দপ্তরের এক্তিয়ারভুক্ত হলেও ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়াবলি দপ্তরের হাতে নেই৷ ফলে, দুই দপ্তরের মধ্যে জটিলতার অবসানে রাজ্য প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ভীষণ চিন্তায় পড়েছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *