বিহারে ভোটার তালিকা পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে এডিআর, ইসিআই-র পদক্ষেপ চ্যালেঞ্জে রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে

নয়াদিল্লি, ৫ জুলাই : বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনার মাঝেই অ্যাসোশিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) শনিবার সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করেছে। ওই পিটিশনে তারা নির্বাচন কমিশনের বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধন (স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন-এসআইআর) প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে।

এডিআর-এর দাবি, নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত ইচ্ছাকৃত ও একপাক্ষিক। তাতে লাখ লাখ ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করছে এবং এর ফলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ন হতে পারে।

নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এডিআর জানিয়েছে, নির্বাচনের এত কাছাকাছি সময়ে এমন বিস্তৃত সংশোধন কার্যক্রম গণতন্ত্রের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। যতক্ষণ না একটি ন্যায্য ও নির্ভরযোগ্য যাচাই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হয় আদালত যেন তাতে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করে এবং পুরো প্রক্রিয়া স্থগিত রাখে। গত ২৪ জুন এই বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল। ওইদিন নির্বাচন কমিশন বিহারে বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধনের (এসআইআর) নির্দেশ জারি করেছিল।

ইসিআই-র নির্দেশ জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আরজেডি, কংগ্রেস, এআইএমআইএম, সিপিআই, সিপিএম সহ একাধিক বিরোধী দল এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ,
নির্বাচন কমিশন বিজেপির ইশারায় কাজ করছে। ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিরোধী ভোটারদের বাদ দেওয়া হবে।

বিরোধীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ জানিয়েছে, সংবিধানের ৩২৬ অনুচ্ছেদ ও আরপি এক্ট, ১৯৫০ অনুযায়ী এবং জুন ২০২৪ ও ২০২৫ সালের নির্দেশ অনুসারে এসআইআর পরিচালিত হচ্ছে। সমস্ত রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে তোলা প্রতিটি প্রশ্ন কমিশন পূর্ণাঙ্গভাবে উত্তর দিয়েছে।

এই সপ্তাহের শুরুতেই কংগ্রেস নেতা পবন খেরা এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন, আমরা এই ইস্যুতে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারি। কারণ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে পক্ষপাতিত্ব স্পষ্ট। এডিআর-এর পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করার পর এই বিতর্ক নতুন মোড় নিয়েছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই মামলার রায় বিহার নির্বাচনকে সরাসরি প্রভাবিত করতে পারে। আগামী দিনে এই বিষয়টি আরও রাজনৈতিক বিতর্ক এবং আইনগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চলেছে, বলেই ধারণা পর্যবেক্ষকদের।

Leave a Reply