নয়াদিল্লি, ২০ ফেব্রুয়ারি (হি. স.) : আদানি-হিন্ডেনবার্গ ইস্যুতে ফোর্বসের রিপোর্ট ফিরিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলায় আন্তর্জাতিক সংবাদ ম্যাগাজিন ফোর্বসে প্রকাশিত একটি রিপোর্টকে রেকর্ড হিসাবে গ্রহণের জন্য জমা দেওয়া হয়েছিল। আদানি গ্রুপের শেয়ার ব্যবসা নিয়েই বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। কিন্তু এদিন শীর্ষ আদালতের তরফে সেই রিপোর্টকে রেকর্ড হিসাবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করা হয়।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের তরফে আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলায় তদন্তে পর্যবেক্ষণের জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত সংরক্ষিত রাখে। আজ মামলাকারীদের মধ্যে একজন, ডঃ জয়া ঠাকুরের আইনজীবী বরুণ ঠাকুর শীর্ষ আদালতে ফোর্বসের রিপোর্ট জমা দেন এবং তা প্রমাণ হিসাবে রেকর্ড করার আবেদন জানান। তিনি জানান, আদানি-হিন্ডেনবার্গ বিতর্কের সময়েই এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় সাফ বলেন, “না, আমরা এই রিপোর্টকে রেকর্ড হিসাবে গ্রহণ করব না।”
এই মামলায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি, সুপ্রিম কোর্ট আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে স্টক ম্যানিপুলেশনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কোনও প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছিল। কেন্দ্রের তরফেও এই বিষয়ে কোনও আপত্তি জানানো হয়নি। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রের তরফে শীর্ষ আদালতের পরামর্শ মতো কমিটির সদস্যদের নামের একটি তালিকা তৈরি করে তা মুখবন্ধ খামে জমা দেওয়া হয়। তবে সেই মুখবন্ধ খাম গ্রহণ করেনি সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছিলেন, “আমরা এই মামলায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখতে চাই। যদি মুখবন্ধ খামে কেন্দ্রের পরামর্শ গ্রহণ করা হয়, তবে অন্য পক্ষ তা জানতে পারবে না। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে মামলায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখা প্রয়োজন”। এরপরে সুপ্রিম কোর্টের তরফেই একটি কমিটি গঠনের কথা বলা হয়।
উল্লেখ্য, জানুয়ারি মাসের শেষভাগে মার্কিন শর্ট সেলিং সংস্থা হিন্ডেনবার্গের তরফে একটি রিপোর্ট পেশ করা হয় আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার নিয়ে। সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়, আদানি গোষ্ঠী তাদের শেয়ার নিয়ে জালিয়াতি করেছে এবং অসাধু উপায়ে শেয়ার বাজারে নিজেদের শেয়ার দর বাড়িয়েছে। হিন্ডেনবার্গের এই রিপোর্ট পেশের পরই হু হু করে আদানির শেয়ার দরে পতন হয়। আদানির শেয়ারে এলআইসি, স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ারও অংশীদারী থাকায়, দেশের একটা বড় অংশের মানুষ তাদের আর্থিক সঞ্চয় নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান। এরপরই সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়ে তদন্ত চেয়ে একের পর এক মামলার আর্জি জমা পড়তে শুরু করে। এখনও অবধি আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলায় চারটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে।