ত্রিপুরায় বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় জনসংখ্যায় মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে, তার বিরুদ্ধে একমাত্র বিজেপি করা অবস্থান নিয়েছে : অমিত শাহ

আগরতলা, ৬ ফেব্রুয়ারি(হি. স.) : ত্রিপুরায় বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ওই অনুপ্রবেশকারীদের ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু, বিজেপি ওই অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছে। আজ দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় শান্তিরবাজারে বিজয় সংকল্প জনসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এভাবেই অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন।

সাথে তিনি বামফ্রন্ট কো কংগ্রেসের সাথে তিপরা মথাকেও একহাত নিয়েছেন। তাঁর দাবি, কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের সাথে অদৃশ্য সমঝোতা হয়েছে তিপরা মথার। বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বাহিনী তৈরিতে গোপন সহযোগী প্রদ্যোত কিশোরের দল। তিনি বলেন, তিপরা মথা-কে ভোট দেওয়ার অর্থই হল সিপিএম-কংগ্রেসকে সহযোগীতা করা।

তাঁর কথায়, সিপিএম, কংগ্রেস এবং তিপরা মথা একত্রে রয়েছে। ফলে, তিপরা মথা কিংবা কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া হলে সিপিএমই সরকার গঠন করবে। তাঁর দাবি, উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে হলে বিজেপিকে পুণরায় ক্ষমতায় আনতে হবে। কারণ, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ একমাত্র বিজেপিই।

এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শুরু থেকেই তিপরা মথাকে নিশানা করেছেন। তিনি তিপরা মথার নেতাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার সিপিএম হাজার হাজার মানুষের হত্যা করেছে, তাঁদেরকেই সমর্থন কিভাবে করছেন। তাঁর দাবি, গত ৫০ বছরে গরীবের কাছে উন্নয়ন পৌছেনি। মহিলাদের জন্য শৌচালয় অলীক স্বপ্ন ছিল। তেমনি রাজনৈতিক কারণে জনজাতি এলাকায় উন্নয়নের ধারা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।

এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ৫ বছরের বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকারের সাথে বামফ্রন্ট সরকারের ২৫ বছরের তুলনা টেনে আনেন। তাঁর দাবি, বিজেপি জোট সরকার মহিলাদের জন্য অনেক কাজ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ত্রিপুরায় শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অথচ, সিপিএমের শাসনে ত্রিপুরা সন্ত্রাস, বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী, মানব পাচার, মাদক পাচার এবং জনজাতিদের উপর অত্যাচার হয়েছে।

কিন্তু, ত্রিপুরায় সরকার পরিবর্তনের পর পরিস্থিতি দারুণভাবে বদলে গেছে। কারণ, উন্নয়নের নিরিখে বিজেপি ক্ষমতায় টিকে রয়েছে, বলেন তিনি। তাঁর দাবি, নতুন রাস্তা, পানীয় জলের সুব্যবস্থা, করোনা মোকাবিলায় দুইটি টিকা, শিল্প এবং জৈব চাষ ত্রিপুরায় রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা এবং বিভেদ দূর করেছে। তাঁর মতে, ত্রিপুরায় বিজেপি সিপিএমের ক্যাডার রাজের অবসান ঘটিয়েছে। তার বদলে সুশাসন উপহার দিয়েছে।

এদিন তিনি বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসকে নিশানা করে তিপরা মথার এক হাত নিয়েছেন। তাঁর কথায়, বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের সাথে তিপরা মথা অদৃশ্য সমঝোতা করেছে। বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে রাজনৈতিক বাহিনী গঠনে প্রদ্যোত কিশোরের দল গোপনে সহযোগিতা করছে। তাই, তিপরা মথা এবং কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার অর্থই হল সিপিএম-কে সরকার গঠনে সহায়তা করা।

সাথে তিনি বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ ইস্যুতে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন। তিনি ত্রিপুরায় অনুপ্রবেশ বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর দাবি, বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে দারুন প্রভাব ফেলেছে। তাতে, আখেরে জনজাতিদের ক্ষতি হয়েছে। তাঁর কটাক্ষ, কিছু রাজনৈতিক দল বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করছে। একমাত্র বিজেপি ওই সমস্যার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছে। তাঁর আবেদন, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজেপিকে ভোট দিন।

এদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শান্তিরবাজারে জনসভা শেষে খোয়াইতে বিজয় সংকল্প জনসভায় অংশ নিয়েছেন। সেখানেও তিনি ভোটারদের বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের জোট থেকে সতর্ক থাকার পপরামর্শ দিয়েছেন। সাথে তিনি বিজেপিকে বিপুল ভোটে জয়ী করার আবেদন জানিয়েছেন।