BRAKING NEWS

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ত্রিপুরায় প্রত্যেক বাড়িতে পানীয় জল পৌছে দেওয়া সম্ভব হবে : পানীয় জল ও স্বাস্থ্য বিধান দফতরের মন্ত্রী

আগরতলা, ১৯ অক্টোবর (হি. স.) : ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ত্রিপুরায় প্রতিটি বাড়িতে পানীয় জল পৌছে দেওয়া লক্ষ্য। তাই, মিশন মুডে কাজের নির্দেশ দেওয়া হলেও বাস্তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজের অগ্রগতি কি অবস্থায় রয়েছে পর্যালোচনা করলেন পানীয় জল ও স্বাস্থ্য বিধান দফতরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। আজ তিনি পশ্চিম ও সিপাহিজলায় কাজের অগ্রগতির পর্যালোচনা করেছেন। তাতে তিনি নিশ্চিত, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ত্রিপুরায় প্রত্যেক বাড়িতে পানীয় জল পৌছে দেওয়া সম্ভব হবে।


পর্যালোচনা সভায় পানীয় জল ও স্বাস্থ্যবিধান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রতিটি গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছানোর জন্য ২০১৯ সালে জল জীবন মিশনের সূচনা করেন। এই মিশনে রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছানোর জন্য লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ত্রিপুরা সরকার মিশন মুডে কাজ করছে। ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত জলজীবন মিশনে ৩৫ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।


সভায় তিনি পানীয় জল সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে কাজের গুণগতমান বজায় রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। পর্যালোচনা সভায় পানীয় জল ও স্বাস্থ্যবিধান মন্ত্রী সিপাহীজলা জেলার ৭টি ব্লকের কিছু কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজগুলিতে আগামী দুই মাসের মধ্যে ১০০ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দেন। এই কাজ করতে গিয়ে কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে ও কাজের গুণগতমান বজায় রাখার জন্য স্থানীয়স্তরের জনপ্রতিনিধি ও দপ্তরের আধিকারিকদের মধ্যে সমন্বয় রেখে কাজ করার জন্য তিনি নির্দেশ দেন। পর্যালোচনা সভায় পানীয় জল ও স্বাস্থ্যবিধান মন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা হচ্ছে জনজাতি অধ্যুষিত পাহাড়ী এলাকা। পাহাড় ও সমতল এলাকায় মানুষের কাছে পরিশ্রুত পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার জন্য সরকার জলজীবন মিশনে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে সবার জন্য ঘর ও সবার জন্য পানীয় জল। তিনি বলেন, রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে পরিশ্রুত পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে মিশন মুডে কাজ চলছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে পরিশ্রুত পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হবে।


পর্যালোচনা সভায় পানীয় জল ও স্বাস্থ্যবিধান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার ৯টি ব্লকের জলজীবন মিশনের কাজের অগ্রগতির খোঁজ খবর নেন। তিনি বলেন, জেলায় প্রত্যেক বাড়িতে আগামী ৫ মাসের মধ্যে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করতে হবে। তিনি এই কর্মসূচি বাস্তবায়ণের উপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেন। বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রান্তিক এলাকাগুলিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। অ্যাসপিরেশনাল ব্লকেও পানীয় জলের উৎস তৈরীর ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাছাড়াও তিনি জলজীবন মিশনে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার কাজে পঞ্চায়েত সমিতি, বিএসি’র প্রতিনিধি, বিদ্যুৎ নিগম এবং পানীয় জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় রেখে কাজ করার পরামর্শ দেন। চলতি অর্থবছরে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় ১ লক্ষ ১১ হাজার ৫৩৪টি পরিবারে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত জেলার জিরানীয়া ব্লকে ৬,৬২২টি, বেলবাড়ি ব্লকে ৩,৯১০টি, পুরাতন আগরতলা ব্লকে ৪,৭৯৪টি, মান্দাই ব্লকে ৩,৯৬৯টি, মোহনপুর ব্লকে ৫,২৯৮টি, বামুটিয়া ব্লকে ৫,৮৩৬টি, লেফুঙ্গা ব্লকে ২,০৪২টি, হেজামারা ব্লকে ৯,৪৬১টি ও ডুকলি ব্লকে ১২,২৭২টি পরিবাকে পরিশ্রুত পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।


সভায় জানানো হয়েছে, সিপাহীজলা জেলায় জলজীবন মিশনে ৩৪ হাজার ৩৩৭টি পরিবারকে এখন পর্যন্ত পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চড়িলাম ব্লকে ৫ হাজার ৯৪৫টি, বিশালগড় ব্লকে ৫ হাজার ৯৮৭টি, জম্পুইজলা ব্লকে ৪ হাজার ৯৭৪টি, নলছড় ব্লকে ২ হাজার ৮২৮টি, মোহনভোগ ব্লকে ১ হাজার ৬২৯টি, বক্সনগর ব্লকে ৪ হাজার ৬৬২টি, কাঁঠালিয়া ব্লকে ৮ হাজার ৩১২টি পরিবারে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও চড়িলাম ব্লকে ৮ হাজার ৭৬৫টি, বিশালগড় ব্লকে ১৯ হাজার ৬৫৩টি, জম্পুইজলা ব্লকে ১৪ হাজার ৩৮৪টি, নলছড় ব্লকে ১১ হাজার ৮২৫টি, মোহনভোগ ব্লকে ৩ হাজার ৪০১টি, বক্সনগর ব্লকে ৭ হাজার ৫৬৪টি এবং কাঁঠালিয়া ব্লকে ১০ হাজার ২৫৫টি মোট ৭৫ হাজার ৮৪৭টি পরিবারে জলজীবন মিশনে পানীয় জল সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে। জেলায় ১ লক্ষ ১০ হাজার ১৮৪টি পরিবারে পানীয় জল সংযোগ দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *