BRAKING NEWS

উত্তরাখণ্ডে বৃষ্টিতে মৃত্যু কমপক্ষে ২৫, নৈনিতালেই সর্বাধিক প্রাণহানি

দেহরাদূন, ১৯ অক্টোবর (হি.স.): উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি ও বন্যায় মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ২৫ জনের। আহতের সংখ্যা অনেক। বিভিন্ন স্থানে জলের তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়ি ও সেতু। উদ্ধারকাজের জন্য তৈরি রাখা হয়েছে তিনটি হেলিকপ্টার। প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি সর্বাধিক নৈনিতালে। গত দু’দিন ধরেই উত্তরাখণ্ডের নৈনিতাল, চামোলি-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তাঘাট এমনকি বাড়িতেও জল ঢুকে পড়েছে। যার জেরে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টিতে উপচে পড়েছে নৈনিতাল হ্রদ, জল ঢুকে পড়েছে নৈনিতালের বহু বহুতল ও বাড়িতে। রাস্তা জলমগ্ন। নৈনিতাল জেলার রামগড়ের একটি গ্রামে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে বাড়ি। কয়েকজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। নৈনিতালের পরিস্থিতি ভীষণ উদ্বেগজনক। রাজ্যের বিপর্যয় ব্যাবস্থাপনা সচিব এস এ মুরুগেসান জানিয়েছেন, বিগত ২৪ ঘন্টায় প্রায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে পাউরি ও চম্পাওয়াতে সোমবার ৫ জনের মৃত্যু হয়। আলমোরা, নৈনিতাল ও উধম সিং নগর জেলার ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিনই নৈনিতাল জেলার মুক্তেশ্বরে ডিগ্রি কলেজের কাছে দেওয়াল ভেঙে মৃত্যু হয় ৫ জন শ্রমিকের।

বৃষ্টিতে জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় ফুঁসছে বিভিন্ন নদী। উত্তরাখণ্ডের চম্পাওয়াত জেলায় চলথি নদীর উপর নির্মিত একটি সেতু জলের স্রোতে ভেসে গিয়েছে। উত্তরাখণ্ডের চামোলিতে ভারী বৃষ্টি চলছে কয়েকদিন ধরে। ফুঁসছে নন্দাকিনী নদী। সোমবারই কেদারনাথ মন্দির থেকে ফেরার পথে বৃষ্টির জন্য আটকে পড়েন অনেকজন পুণ্যার্থী। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও পুলিশ ২২ জন পুনার্থীকে উদ্ধার করেছে। তাঁদের গৌরী কুন্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। কলকাতার বাসিন্দা ১০ জন আটকে পড়েছিলেন রুদ্রনাথ ট্রেক রুটের কালচন্থ-এ, তাঁদের বন দফতরের তৎপরতায় উদ্ধার করে গোপেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের জলাধারগুলি জলে ভরে যাওয়ায় নানক সাগর ও উধম সিংহ নগর জলাধার থেকে জল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। তার ফলে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ইতিমধ্যেই চারধাম যাত্রা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। সেখানে আটকে থাকা পর্যটকদের নিজেদের রাজ্যে ফেরানোর বন্দোবস্ত করছে সরকার।

এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় উত্তরাখণ্ড সরকারকে সমস্ত ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মঙ্গলবারই উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি ও উত্তরাখণ্ডের মন্ত্রী অজয় ভাটের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সামগ্রিক পরিস্থিতি তাঁদের কাছ থেকে শোনেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন দুপুরে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি জানিয়েছেন, “রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবগত করা হয়েছে। বহু স্থানে বাড়ি ও সেতু ভেঙে পড়েছে। ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এখনও অবধি। এদিন আকাশপথে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর সঙ্গে ছিলেন ডিজিপি অশোক কুমার। ডিজিপি জানিয়েছেন, ২৪-২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সর্বাধিক প্রাণহানি নৈনিতালে। যেমন ট্রি রিসোর্টে আটকে পড়েছেন প্রায় ২০০ জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *