নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২০ সেপ্ঢেম্বর৷৷ রাজ্যে মাছের উৎপাদন ব’দ্ধি পেয়েছে৷ বায়োফ্লক পদ্ধতিতে ও ক্যাজ কালচারের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে৷ পাশাপাশি মৎস্য চাষীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে বি’ানসম্মতভাবে মৎস্যচাষে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে৷ সেই ক্ষেত্রে মৎস্য দপ্তরকে মাছ চাষে যুক্তদের সুুদক্ষ করে তোলার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে৷ এতে রাজ্যের মাছের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আর্থসামাজিক অবস্থারও উন্নতি সাধন হবে৷ আজ সচিবালয়ের ১ নং সভাকক্ষে মৎস্য দপ্তরের পর্যালোচনাসভায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথা বলেন৷ পর্যালোচনাসভায় মৎস্য দপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্মের সার্বিক আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সভায় মৎস্য দপ্তরের মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া, মুখ্যসচিব কুমার অলক, মৎস্য দপ্তরের সচিব দীপা ডি. নায়ার, সচিব পি কে গোয়েল, মৎস্য দপ্তরের অধিকর্তা দিলীপ কুমার চাকমা সহ দপ্তরের পদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ নেন৷
সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের মৎস্য চাষীদের কল্যাণে সরকারের গৃহীত পরিকল্পনাগুলি যথাযথ রূপায়নের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন আরো বাড়াতে হবে৷ এজন্য সুুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা রেখে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে কাজ করার পরামর্শ দেন৷ তিনি মৎস্য চাষে আগ্রহী জনগণকে উৎসাহ প্রদানের জন্য দপ্তরকে মিশন মুডে প্রচার করার জন্য পরামর্শ দেন৷ এক্ষেত্রে তিনি বাংলা ও ককবরক দুই ভাষাতেই প্রচার করা যেতে পারে বলে অভিমত ব্যাক্ত করেন৷ তিনি বলেন, এতে জাতি-জনজাতি উভয় সম্পদায়ের মানুষের মধ্যেই মৎস্য চাষের সুুফল সম্পর্কে অবগত করানো যাবে এবং মৎস্য চাষে আগ্রহ বাড়ানো সম্ভব হবে৷ তিনি সুুখসাগর জলাকে মাছচাষের উপযুক্ত করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দপ্তরের সচিবকে নির্দেশ দেন৷ তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট জায়গাতে বিশাল মৎস্যচাষের সুুযোগ রয়েছে৷ এই ক্ষেত্রে দপ্তরকে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সদর্থক ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন৷ এতে মাছ উৎপাদনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকার মৎস্যচাষীদের অর্থসামাজিক অবস্থারও উন্নতি ঘটবে৷ তিনি বায়োফ্লক পদ্ধতির মাধ্যমে আরও বেশী পরিমানে মৎস্য চাষ ব’দ্ধির কথা উল্লেখ করেন৷ এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বি’ান সম্মতভাবে সঠিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মৎস্য চাষীদের আরো দক্ষ করে তোলার প্রয়োজন৷
তিনি বায়োফ্লক প্রকল্পকে মিশন মুডের আওতায় এনে কাজ করার জন্য দপ্তরকে পরামর্শ দেন৷ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে অর্ণামেন্টাল মাছ চাষের ক্ষেত্রে পেশাদারিত্ব থাকা এবং উৎপাদন বাড়ানো দরকার বলে অভিমত ব্যক্ত করেন৷ এই বিষয়ে দপ্তরকে আরো সক্রিয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন৷ তিনি রাজ্যে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত একটি মডেল মাছ বাজার নির্মাণের জন্য দপ্তরকে পরামর্শ দেন৷ এই প্রসঙ্গে তিনি নাবার্ডের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে প্রকল্প বাস্তবায়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন৷
মুখ্যমন্ত্রী মৎস্য সখীদেরকে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে আরো বেশী সুুদক্ষ করে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন৷ এতে মৎস্য চাষে তাদের আরো বেশি ’ান সম’দ্ধ হবে পাশাপাশি মাছের উৎপাদনও ব’দ্ধি করা যাবে৷ এক্ষেত্রে তিনি বলেন, প্রথমত দপ্তরকে একটি লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা উচিৎ কি পরিমাণ মৎস্য সখীর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এবং তার একটি তালিকা প্রস্তুত করা৷ এই বিষয়ে তিনি দপ্তরের সচিবকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন৷ তিনি মাছ উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি বাজারজাত করনের উপরও মনোযোগি হওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন৷ তিনি ক্যাজকালচার বাড়ানোর জন্যও গুরুত্ব আরোপ করেন৷ এ প্রসঙ্গে তিনি সাবম এলাকায় জলাশয় ব’দ্ধির মাধ্যমে মৎস্য চাষ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে বলেন৷ তিনি বলেন, সাবম এলাকায়ও মৎস্য চাষের বিশাল সুুযোগ রয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী তেলাপোয়া মাছ চাষে উদ্যোগী হওয়ার জন্য দপ্তরের সচিবকে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার জন্য বলেন৷ তিনি বলেন, খব কম সময়েই এই মাছ চাষে লাভবান হওয়া যায়৷ তিনি ডম্বর এলাকায় মৎস্য চাষ ব’দ্ধির উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন৷ সভায় মৎস্য দপ্তরের সচিব দিপা ডি নায়ার পর্যালোচনা সভায় দপ্তরের গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া পদক্ষেপগুলি সচিত্র প্রতিবেদনের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন৷
পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী হস্ততাঁত, হস্তকারু ও রেশম শিল্প দপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করেন৷ তিনি ত্রিপুরার উৎপাদিত আনারস গাছের পাতা থেকে সিল্ক প্রস্তুত করণের উপর দপ্তরের সচিবকে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণের উদ্যোগ নিতে বলেন৷ তিনি দপ্তরের উদ্যোগে নিত্য নতুন পণ্য তৈরীর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন৷ তিনি বলেন, এমন কিছু নিত্য নতুন জিনিস বানানো প্রয়োজন যার মাধ্যমে রাজ্যের নাম বর্হিরাজ্যে সমাদ’ত হয়৷ এই জন্য তিনি ক্লাস্টার তৈরী করে কাজ করার পরামর্শ দেন৷ তিনি বলেন, যে পণ্যের অধিক চাহিদা রয়েছে দপ্তরকে সেই পণ্য বানানোর উপর জোর দেওয়া উচিৎ৷ এই প্রসঙ্গে তিনি ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী রিসা, বসার জন্য মুড়া বানানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন৷ মুখ্যমন্ত্রী পণ্য দ্রব্যের প্যাকেটিং-এর মানউন্নয়নের দপ্তরের সচিবকে নির্দেশ দেন৷ তিনি বলেন, রাজ্যে প্রচুর উদ্যোগী লোক রয়েছে৷ তাদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে দল ভিত্তিক ভাবে নিত্য নতুন পণ্য তৈরির স’জনশীল চিন্তা দপ্তরকে করতে হবে৷ তিনি, স’জনশীল কারীগরদের ও এফ পি-তে অন্তর্ভক্ত করার পরামর্শ দেন৷ এই বিষয়ে তিনি দপ্তরের সচিবকে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলেন৷ পর্যালোচনাসভায় এছাড়াও দপ্তরের মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া, মুখ্যসচিব কুমার অলক, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সচিব পি কে গোয়েল সহ দপ্তরের আধিকারিকগণ আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন৷

