নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩১ আগস্ট৷৷ ত্রিপুরায় মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার৷ শিশু ও কিশোরদের সুস্বাস্থ্যের লক্ষ্যে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে৷ আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত ‘সুস্থ শৈশব-সুস্থ কৈশোর’ অভিযানের রাজ্যভিত্তিক অনুষ্ঠানের সূচনা করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় ১৩ লক্ষ শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের ১৫ দিনব্যাপী বিশেষ অভিযানের আওতায় এনে এই বয়ঃসীমার বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ এরমধ্যে রয়েছে কৃমিনাশক কর্মসূচি, ভিটামিন-এ পরিপূরক কর্মসূচি, আয়রন ফলিক অ্যাসিড পরিপূরক কর্মসূচি ও তীব্রতর ডায়ারিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি৷ আশা, অঙ্গনওয়াড়ি, এমপিডব্লিউ ও এএনএম কর্মীরা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে শিশু ও কিশোরদের প্রয়োজনীয় ঔষধ ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরামর্শ দেবেন৷ সকলের জন্য স্বাস্থ্য সুনিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে শিক্ষা দপ্তর ও সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সহযোগিতায় এই কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও যত্নে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে৷ এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য নবপ্রজন্মের রোগমুক্ত সুন্দর ও সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ নির্মাণ করা৷ তিনি বলেন, আজকের শিশুরাই আগামীদিনের চালিকাশক্তি৷ একজন ছাত্রের উচ্চশিক্ষার ভিত যেমন প্রাথমিক স্তর থেকে নির্মিত হয় তেমনি শিশুদের ভবিষ্যৎ সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই শৈশব এবং কৈশোরকে কেন্দ্র করে এই কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷
তাঁর মতে, সুস্বাস্থ্যের অন্যতম শর্ত পরিশ্রুত পানীয়জল পান করা৷ এই লক্ষ্যেই ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতি বাড়িতে পরিশ্রুত পানীয়জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ চলছে৷ জনকল্যাণমুখী বিভিন্ন প্রকল্পের সহায়তায় ত্রিপুরার সমস্ত ক্ষেত্রেই উন্নয়নের নিরিখে সফলতা এসেছে৷ তাঁর কথায়, রাজ্যের মূল ব্যক্তি কাজ করলেই সমস্ত ব্যক্তিদের কাজের মানসিকতা তৈরি হয়৷ বিগত দিনের সঙ্গে তুলনা টানলে পরিসংখ্যানগত দিক থেকে তা সহজে অনুমেয়৷ কিন্তু বিগত দিনে এর ঘাটতি ছিলো৷ বর্তমানে রাজ্যে তৈরি হয়েছে কর্মসংসৃকতি ও কাজের মানসিকতা৷
তিনি বলেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নতিকরণ, হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টারে রূপান্তর, ই-পরিষেবা সহ বিভিন্ন ভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবা ও পরিকাঠামো উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে সবার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষার সুযোগ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে রাজ্যব্যাপী কাজ চলছে৷ বর্তমানে সঠিক ব্যবস্থাপনার ফলে আয়ুষ্মান ভারত সহ জনকল্যাণে বিভিন্ন প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন হচ্ছে রাজ্যে৷
তাঁর দাবি, স্বাস্থ্য পরিষেবায় উন্নতির ফলে একদিকে যেমন কমেছে বহির্রাজ্যে রেফারের সংখ্যা তেমনি বহু জটিল অস্ত্রোপচার হচ্ছে রাজ্যে৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতা ও সঠিক ব্যবস্থাপনার ফলে সুকলে মেয়েদের পড়াশুনার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে৷ যার ফলশ্রুতিতে ছাত্রীদের সুকলমুখী হওয়ার সংখ্যা ক্রমেই উর্ধমুখী৷ স্বাস্থ্যক্ষেত্রের উন্নয়নের পাশাপাশি রোজগার তৈরির ক্ষেত্রে বিশেষ করে মহিলা ক্ষমতায়নে রাজ্যের স্বসহায়ক দলগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে৷ রাজ্যের অর্থনীতির বুনিয়াদকে শক্তিশালী করতে মহিলাদের অংশীদারিত্ব বাড়াতে তাদের আত্মনির্ভর করার উপর জোর দিয়েছে সরকার৷