নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ এপ্রিল৷৷ বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার এক বিবৃতিতে গতকালের ঘটনার প্রেক্ষিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ তিনি বিবৃতিতে বলেন, গতকাল, ২৬ শে এপ্রিল রাতে আগরতলায় অবস্থিত ‘‘মানিক্য কোর্ট’’ নামক বাড়ীতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান লন্ডভন্ড করতে পশ্চিম ত্র্রিপুরা জেলা শাসক যে কান্ড করলেন, প্রচার মাধ্যমে আজ তা না দেখলে কারো পক্ষে বিশ্বাস করা সম্ভব হতো না৷ কনের আত্মীয়, বর, পুরোহিত, আমন্ত্রিত অতিথি, এমনকি পুলিশ কর্মীদের কেউ কেউ জেলা শাসকের দ্বারা নানা ভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন৷
অনেককে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ কনের ভাই একজন ডাক্তার৷
তিনি এই বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের অনুমোদন চেয়ে চিঠির অনুলিপি এবং সরকারের অনুমোদন ইত্যাদি সম্বলিত তথ্য জনগণের জ্ঞাতার্থে সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরেছেন৷ সবকিছু দেখে আমি স্তম্ভিত৷ এ একাধারে ক্ষমতার দম্ভের এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের নির্লজ্জ প্রকাশ৷ জেলা শাসকের মত গুরুদায়িত্বপূর্ণ পদে আসীন কোন ব্যক্তির কাছ থেকে এই আচরণ একেবারেই বেমানান৷ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা শাসকের এই অপ্রত্যাশিত, অভাবনীয় আচরণের প্রতিবাদ জানাচ্ছি ও নিন্দা করছি৷ আমাদের বিশ্বাস, সরকার নিশ্চয়ই জেলা শাসকের এই আচরণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবে৷ কনে ও বর সহ বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজক পরিবার দু’টির সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিক সহানুভূতি জ্ঞাপন করছি৷
এদিকে সিপিএম রাজ্য কমিটি এক বিবৃতিতে বলছে, গত রাতে আগরতলা শহরের প্যালেস কম্পাউন্ড এলাকায় একটি ম্যারেজ হলে বরকে এবং বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সহ উপস্থিতদের দৈহিক নিগ্রহ, বর-কনেসহ অনেককে গ্রেপ্তার করানোর ঘটনায় সি পি আই (এ) ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদকমন্ডলী বিস্মিত৷ কভিড সংক্রমণ মোকাবেলায় প্রশাসনের জারি করা নৈশ কারফিউ ও অন্যান্য বিধি-নিষেধ অমান্য করার অভিযোগে জেলা শাসক পুলিশ নিয়ে হানাদারি চালিয়েছেন বলে কিছু কিছু প্রচার মাধ্যমে জেলা শাসক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, যা সম্প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে৷ বিয়ের আয়োজকদের পক্ষ থেকে নিয়ম-বিধি অনুযায়ী পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা শাসকের কাছে লিখিত অনুমতি চাওয়া হয়েছিল৷
আবেদনে আচার মেনে কোন্ সময় বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু হবে লেগ্ণ ইত্যাদি) এবং কতজন উপস্থিত থাকবেন তাও উল্লেখ ছিল৷ জেলা শাসকের অফিস তা বিবেচনা করে ২৬ এপ্রিল অনুমতিপত্র দেয় এবং স্বয়ং জেলা শাসকের তাতে স্বাক্ষর রয়েছে৷ বর সহ অন্যান্যদের দৈহিক নিগ্রহ, বর-কনেসহ অনেককে গ্রেপ্তার করিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানটি পন্ড করে দেয়া অমার্জনীয় অপরাধ৷ রাজ্যে গত তিন বছর ধরে যে ফ্যাসিস্টসুলভ বর্বরতা চলছে, ২৬ এপ্রিল রাতে রাজধানী শহরের বুকে জেলা শাসকের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে উন্মস্ততা তার আরেকটি জুলত্ত উদাহরন৷ সি পি আই (এম) রাজ্য সম্পাদকমন্ডলী বিয়ের অনুষ্ঠানে জেলা শাসকের এইবর্বর আচরনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছে৷ সংশ্লিষ্ট জেলা শাসকের বিরুদ্ধে অবিলম্বে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছে৷