বৃষ্টিতে এখন আর শহরের রাস্তাঘাট জলমগ্ণ হয় না, দাবি আগরতলাবাসীর

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ জুলাই৷৷ যুগের ধারাবাহিক পরিবর্তনেও তিলোত্তমা শহর আগরতলাবাসী সেই তিমিরেই ছিলেন৷ তবে ২০১৮ সালে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর বর্তমানে বৃষ্টির জমা জলের তাণ্ডব থেকে অনেকাংশে মুক্তি পেয়েছেন নিগমবাসী৷ মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েই প্রথম বর্ষায় হাঁটু জলে নেমে নিজের বিধানসভা এলাকা পরিদর্শন করে সমস্যা কত গভীরে উপলব্ধি করেছিলেন বিপ্লব কুমার দেব৷ সেদিন বানভাসি আগরতলা থেকে পুরবাসীকে চিরতরে মুক্তি দেওয়ার মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি আজ প্রায় নববই শতাংশ পূরণ হয়েছে বলে দাবি স্থানীয় জনগণের৷ এ বছর বর্ষা শুরু হলেও, আগরতলার রাস্তাঘাট জলে ডুবে যেতে দেখা যাচ্ছে না৷


দশকের পর দশক ধরে প্রতি বর্ষায় আগরতলা শহর জলমগ্ণ হয়ে পড়ত৷ বামেদের দাবি ছিল, শহর আগরতলা কড়াইয়ের মতো, বৃষ্টি হলে রাস্তায় জল জমবেই৷ মূলত, জল নিষ্কাশনি ব্যবস্থায় গলদের জন্যই বৃষ্টি হলে আগরতলা বানভাসি হয়ে পড়ত, আজ তা প্রমাণিত হয়েছে৷ ত্রিপুরায় ২০১৮ সালে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে৷ বামফ্রন্ট সরকার পরাস্ত হয়ে বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার ত্রিপুরায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই বিপ্লব কুমার দেব প্রথম বর্ষায় নিজ বিধানসভা কেন্দ্রে হাঁটু জলে নেমে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেছিলেন৷ দুভর্োগের শিকার স্থানীয় জনগণের সাথে সরাসরি কথা বলেছিলেন তিনি৷ তাঁদের ওই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের সেদিনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷

সে-মোতাবেক মুখ্যমন্ত্রী আগরতলা স্মার্ট সিটি মিশন এবং নগরোন্নয়ন দফতরকে নির্দেশ দেন, শহর জলমগ্ণ হয়ে পড়ার স্থায়ী সমাধান করতে হবে৷ তাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আগরতলার ড্রেনগুলি পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়ে যায়৷ নিকাশি ব্যবস্থা আধুনিক এবং বিজ্ঞানসম্মতভাবে গড়ে তোলা হয় মাত্র আড়াই বছরের মধ্যেই৷ অত্যাধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করে ড্রেনগুলি পরিষ্কারের ফলে এখন বৃষ্টির জল আর দমে থাকে না৷ তাছাড়া, পাম্প হাউসগুলিও অত্যন্ত তৎপরতার সাথে প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে৷ এরই মধ্যে সমস্ত কভার ড্রেনের অসমাপ্ত কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে৷ ফলে, রাস্তায় জল জমে যাওয়ার সমস্যা বহুলাংশে কমেছে৷


এ-বিষয়ে বনমালিপুর এলাকার বাসিন্দা জনৈক তপন কুমার দাস বলেন, আগরতলার ড্রেন জবরদখল করে মানুষ বাড়িঘর করেছিলেন৷ এখন সে সব দখলমুক্ত হয়েছে৷ ফলে, ড্রেন পরিষ্কার হচ্ছে সঠিকভাবে৷ তাঁর কথায়, বহু বছর বর্ষার সময় রাস্তায় জল জমে যাওয়ায় জরুরি কাজ থাকলেও কোনও উপায় ছিল না৷ বাড়িতে বন্দি হয়ে থাকতে হত আমাদের৷ বর্ষাকাল আমাদের জন্য আতঙ্ক ছিল৷ কিন্তু এখন সেই ভোগান্তি থেকে অনেকটা মুক্তি পেয়েছি, বলেন তিনি৷ একই এলাকার বাসিন্দা প্রণব চৌধুরীর দাবি, এখন বৃষ্টি হলে ভোগান্তি নেই বললেই চলে৷ মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বহুলাংশে পূরণ হয়েছে৷ তাঁর মতে, ইচ্ছে করলেই এই সমস্যার ১০০ শতাংশ সমাধান সম্ভব নয়৷ তাতে, যাদুমন্ত্রের প্রয়োজন রয়েছে৷

তিনি বলেন, এখন ড্রেনগুলির গভীরতা বেড়েছে৷ প্রতিনিয়ত ড্রেন পরিষ্কারের ফলে গভীরতা ১ ফুট থেকে বেড়ে ৩ ফুট হয়েছে৷ তিনি মনে করেন, প্রশাসনের ২৪ ঘণ্টা নজরদারির জন্যই এখন দীর্ঘ বছরের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দিকে এগিয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *