নয়াদিল্লি, ১৪ ফেব্রুয়ারি (হি. স.) : এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ারবাস-এর চুক্তির ভূয়সী প্রশংসা করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ। মঙ্গলবার বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থা এয়ারবাসের সঙ্গে ২৫০টি বিমান ক্রয়ের বিষয়ে এক চুক্তি স্বাক্ষর করে টাটা গোষ্ঠীর আওতাধীন এয়ার ইন্ডিয়া। এই উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে মিলিত হন দুই রাষ্ট্রনেতা ।এদিনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই চুক্তিকে ভারত-ফ্রান্স সম্পর্কের প্রতীক বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে ফরাসী প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ভারত-ফ্রান্স কৌশলগত সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে এই চুক্তি।
এই চুক্তির জন্য ইমনুয়েল ম্যাক্রঁকে বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি জানিয়েছেন, এই চুক্তি ভারতের অসামরিক বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে সাফল্য এবং আকাঙ্খার প্রতিফলন। অসামরিক বিমান পরিবহণ ভারতের বিকাশের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে জানান তিনি। আরও বলেন ভারত সরকারের জাতীয় পরিকাঠামো কৌশলের অন্যতম অংশ হল অসামরিক বিমানবন্দর। তিনি জানান, গত ৮ বছরে ভারতের মোট বিমানের সংখ্যা ৭৪ থেকে বেড়ে ১৪৭ হয়েছে। সরকারের ‘উড়ান’ প্রকল্পে প্রান্তিক এলাকাগুলিকে বিমান-যোগে জুড়ছে। নরেন্দ্র মোদী বলেন, “অদূর ভবিষ্যতে অসামরিক বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ বাজার হতে চলেছে। এর জন্য আগামী ১৫ বছরে ২০০০-এর থেকে বেশি বিমান লাগবে। এই বাড়তি চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে এই চুক্তি।” এই চুক্তি ভারত-ফ্রান্স কৌশলগত সম্পর্কের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
এদিনের ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে সরাসরি ‘ডিয়ার নরেন্দ্র’ বলে সম্বোধন করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। ম্যাক্রঁ জানান, ভারতের হাত ধরে যৌথভাবে অনেক সাফল্য অর্জন করেছে ফ্রান্স। মহাকাশ, সাইবার, প্রতিরক্ষা, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, বায়োটেক, পরমাণু শক্তির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে গিয়েছে ফ্রান্স। কোভিড মহামারির শেষে এই সহযোগিতার সম্পর্ককে আরও বাড়বে বলে আশাবাদী ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ।
প্রসঙ্গত, এদিনের বৈঠকে দুই রাষ্ট্রপ্রধান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন টাটা সন্স-এর চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন, এয়ারবাসের সিইও গিয়োম ফওরি, টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারপার্সন রতন টাটা, কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।
এন চন্দ্রশেখরন জানান, এয়ার ইন্ডিয়া সংস্থা এয়ারবাসের সঙ্গে মোট ২৫০টি বিমান ক্রয়ের জন্য চুক্তি করছে। এর মধ্যে ৪০টি হল দূরপাল্লার বৃহদাকার এ৩৫০ বিমান, বাকিগুলি ছোট আকারের। চন্দ্রশেখরন জানান, এই চুক্তির ফলে টাটা গোষ্ঠী এবং এয়ারবাসের মধ্যে ৩৬০ ডিগ্রির সম্পর্ক গড়ে উঠল। আর গিয়োম ফিউরির মতে এয়ার ইন্ডিয়ার পুনরুত্থানে সহায়তা করছে এয়ারবাস। এটা এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ারবাসের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। তিনি আরও জানান, এয়ারবাসের ভারত সংক্রান্ত পরিকল্পনার মূল ভিত্তি হল ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’। প্রধানমন্ত্রীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ দৃষ্টিভঙ্গীর প্রতি আস্থাশীল এয়ারবাস।