কেশপুর, ৪ ফেব্রুয়ারি (হি স)। “আমি সংবাদমাধ্যমকে অনুরোধ করব যদি আপনাদের মধ্যে নিরপেক্ষতা থাকে, বিবেকবোধ থাকে আমার মিটিংয়ে আজকে আমার ছবি দিতে হবে না। এদের দুজনের ছবি দিন।” শনিবার কেশপুরের সভামঞ্চে এই মন্তব্য করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তার একটু আগেই অভিষেক ডেকেছিলেন শেখ হসিনউদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে। আবাস যোজনায় টাকা পেলেও ঘর তৈরির জন্য বাড়তি খরচের ভয়ে ফিরিয়েও দিয়েছিলেন তিনি। করেন না তৃণমূল। করেন না কোনও দলই। এ কথা জানিয়েছিলেন খোদ অভিষেক। অথচ, হসিনউদ্দিনের রয়েছে মাত্র ছোট্ট একটা এক চালা ঘর। সেই ছবিও দেখিয়েছিলেন অভিষেক। নিয়েছিলেন তাঁর মেয়ের বিয়ের যাবতীয় খরচের দায়িত্ব। এরপরই পঞ্চায়েত ভোটে তাঁকেই দল মুখ করতে চলেছে বলে ঘোষণা করেন অভিষেক।
ঠিক এরপরই কেশপুরের গোলার গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মঞ্জু দলবেরা ও তাঁর স্বামী অভিজিৎ দলবেরাকে ডেকে নেন অভিষেক। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে এলাকায় তৃণমূলের বুথ সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন অভিজিৎ। অভিষেকের দাবি, দলের সঙ্গে যোগ রয়েছে, দায়িত্বেও রয়েছেন তারপরেও আবাস যোজনার ঘর নিতে চাননি এই দম্পতি।
অভিজিৎ-মঞ্জুকে পাশে নিয়েই সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে অভিষেক বলেন, “সারাদিন খবরে দেখানো হচ্ছে তৃণমূলের বুথ সভাপতি, পঞ্চায়েত সদস্য ফুলেফেঁপে উঠেছে! এই দুজনকে দেখে কী মনে হয় আপনাদের?” কারণ হিসাবে অভিষেক বলেন, “মঞ্জু দেবী পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে বলেছেন আমার স্বামী বুথ সভাপতি, আমি পঞ্চায়েতের মেম্বার, আমি তৃণমূল করি, আমি ঘর নেব না।” এরপরই মঞ্জু দেবীর বাড়ির একটি ছবি সকলের সামনে তুলে ধরেন অভিষেক।
প্রসঙ্গত, আবাস যোজানার সার্ভের কাজ শুরু হতেই সাম্প্রতিককালে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক শিবির। কোথাও সমীক্ষার কাজে যাওয়া সরকারি কর্মীদের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ, তো কথাও আবার তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের ঘর পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে লাগাতার বিক্ষোভের ছবি দেখতে পাওয়া গিয়েছে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে।
বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান থেকে দিদির দূতেরা। এমনকী সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের এক পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের প্রাসাদোপম বাড়ির ছবি সামনে এসেছিল। কিন্তু, তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম ছিল আবাস যোজনার তালিকায়। এই ছবি সামনে আসতেই শোরগোল শুরু হয়েছিল গোটা রাজ্যে। বিরোধীদের অভিযোগ, আবাসে ঘর দিতে মানা হচ্ছে না কোনও সরকারি শর্তই। ‘শর্ত’ একটাই, করতে হবে ঘাসফুল, থাকতে হবে সবুজ ছাতার তলায়।