BRAKING NEWS

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্যই কোভিড মোকাবিলা সম্ভব হয়েছে, টিকাকরণে ১০০ কোটি অতিক্রমের জন্য ধন্যবাদ দিয়ে বলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ২২ অক্টোবর (হি. স.) : আজ মনে হচ্ছে কোভিড মোকাবিলা করা অনেকটাই সহজ৷ তবে, শুরুতে এমনটা ছিলনা৷ অবশ্য, সবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যোগ্য নেতৃত্বের জন্য৷ এভাবেই আবেগতাড়িত হয়ে করোনার টিকাকরণে ১০০ কোটির মাইল ফলক অতিক্রম করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানালেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ সাথে তিনি সমগ্র ত্রিপুরাবাসীকে করোনার প্রকোপ থেকে বাঁচার জন্য সতর্কতা অবলম্বনের আবেদন জানিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, কোভিডকে জীবনের অঙ্গ করে নেওয়া উচিত৷ তবে, টিকাকরণ হলেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে৷ এদিন তিনি কোভিড মোকাবিলায় ত্রিপুরা সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।

আজ সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব দৃঢ়তার সাথে বলেন, বিনামূল্যে কোভিডের টিকাকরণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে আজ দেশ করোনার প্রকোপ মোকাবিলায় সক্ষম হয়েছে৷ ভারত কোভিডের টিকাকরণে ১০০ কোটির মাইল ফলক অতিক্রম করেছে৷ তিনি বলেন, ভারতে এখন পর্যন্ত ১০০ কোটি ৬১ লক্ষ ৫২ হাজার ৯১৪টি টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে৷ তাতে, ৭১ কোটি ৯ লক্ষ ১৫ হাজার ৫৬৪ প্রথম ডোজ এবং ২৯ কোটি ৫২ লক্ষ ৩৭ হাজার ৩৫০ দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে৷ তাঁর দাবি, কোভিড মোকাবিলার সাথে দেশকে স্বনির্ভরতার দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী৷ তাই, কোভিড মুক্তির রাস্তা খুঁজে বের করা সম্ভব হয়েছে৷

তাঁর কথায়, শুধু টিকাকরণেই থেমে থাকেনি ভারত সরকার৷ সময়ের মধ্যে দেশে অক্সিজেনের ঘাটতিও মেটানো সম্ভব হয়েছে৷ তিনি বলেন, গত ৭ অক্টোবর পিএম কেয়ার তহবিল থেকে সারা দেশে ১২২২টি অক্সিজেন প্ল্যান্টের উদ্বোধন হয়েছে৷ তার মধ্যে ত্রিপুরায় ২২টি অক্সিজেন প্ল্যান্টের সূচনা হয়েছে৷ তাঁর দাবি, ইতিপূর্বে ত্রিপুরায় মাত্র ৩টি অক্সিজেন প্ল্যান্ট ছিল যার উত্পাদন ক্ষমতা ছিল ১.৯৭ এমটি৷ বর্তমানে ২২টি অক্সিজেন প্ল্যান্টে উদপাদন ক্ষমতা বেড়ে হয়েছে ১৮ এমটি৷

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, সুনির্দিষ্ট রণকৌশলের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করোনার প্রকোপ মোকাবিলা করেছেন৷ কোভিডের প্রথম ঢেউ-এ জনতা কারফিউ, তারপর লকডাউন, ধাপে ধাপে আনলক, কন্টেইন্মেন্ট জোন এসবের মাধ্যমে অর্থনীতির গতি সচল রেখে কোভিড যুদ্ধে ব্রতী হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ অবশ্যই, গোটা দেশ ওই মহাযুদ্ধে সহযোগিতা করেছেন নির্দ্বিধায়৷

তিনি বলেন, কোভিড মোকাবিলায় দেশে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিকাঠামো ৩ থেকে ৪ গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে৷ ত্রিপুরায় স্বাস্থ্যক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত শক্তি অনেকটাই বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে৷ কারণ, কেন্দ্রের ঢালাও সহযোগিতা সেই অবস্থানে পৌছাতে সাহায্য করেছে৷ তাঁর দাবি, সারা দেশের সাথে ত্রিপুরায় ১৬ জানুয়ারী থেকেই কোভিডের টিকাকরণ শুরু হয়েছে৷ ৬টি ধাপে সমগ্র ত্রিপুরাবাসীর টিকাকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷

তাঁর কথায়, প্রথমে স্বাস্থ্য কর্মী, তারপর সামনের সারির যোদ্ধা, ষাটোর্ধ প্রবীণ নাগরিক, তারপর ৪৫ বছরের উর্ধে, ৪৫ বছরের উর্ধে সকলে এবং সবশেষে ১৮ উর্ধদের টিকাকরণের মাধ্যমে ত্রিপুরায় কোভিড মোকাবিলা করা হয়েছে৷ তাঁর দাবি, ৯০ শতাংশ টিকাকরণে দেশের বিভিন্ন রাজ্যগুলির মধ্যে ত্রিপুরা অন্যতম অবস্থানে রয়েছে৷ এমনকি, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে ত্রিপুরা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে৷

ত্রিপুরায় টিকাকরণের সাফল্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে এখন পর্যন্ত ৪০ লক্ষ ২১ হাজার ৭০৬টি করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ১৫ লক্ষ ১৮ হাজার ৯১৬ জনের সম্পুর্ন টিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে। অন্তত টিকার একটি ডোজ নিয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা ২৫ লক্ষ ২ হাজার ৭৯০। সাথে তিনি যোগ করেন, বিশেষ টিকাকরণ অভিযানের মাধ্যমে ওই দুর্গম পথ পেরিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, ত্রিপুরায় ১৩৪২টি টিকাকরণ কেন্দ্রে কোভিডের টিকা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ অভিযানের অন্তর্গত ২৪ থেকে ২৬ মার্চ ২.২৬ লক্ষ, ২১ থেকে ২২ জুন ৩.৪৮ লক্ষ, ২১ থেকে ৩১ জুলাই ২.২২ লক্ষ এবং ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর ৪৪ হাজার ১৩৬ জনকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, টিকাকরণে প্রায়োরিটি গ্রুপ তৈরী করা হয়েছিল। সাংবাদিক সহ বিভিন্ন বর্গের মানুষের ওই গ্রুপের অন্তর্গত টিকাকরণ করা হয়েছে।

তাঁর কথায়, ত্রিপুরায় ১২ হাজার সরকারী কর্মচারীদের সাথে নিয়ে বিশেষ অভিযানের অন্তর্গত মানুষের বাড়ি বাড়ি স্বাস্থ্যের খোজ নেওয়া হয়েছে। তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তাছাড়া, মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব প্রকল্পের মাধ্যমে ১৮ বছরের কম বয়সীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রায় ১৩ লক্ষ এমন ছেলেমেয়েদের জন্য ভিটামিন-এ, কৃমি নাশক ঔষুধ, ফলিক অ্যাসিড এবং ডায়েরিয়ার ঔষুধ বাড়িতে পৌছে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।

আজ তিনি অনেকটাই আবেগের সুরে বলেন, এখন মনে হচ্ছে কোভিড মোকাবিলা অনেকটাই সহজ। কিন্ত, শুরুতে এমনটা পরিস্থিতি ছিল না। তিনি বলেন, হেপাটাইটিস-বি, টিবি রোগের টিকা আবিষ্কার হওয়ার অনেক বছর পর ভারতে তা পাওয়া গেছে। অথচ, কোভিডের টিকা আবিষ্কারের একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তা বিশ্বের দরবারে পৌছে দিয়েছেন। তাই, স্বস্তির নি:শ্বাস  ফেলতে আমরা সক্ষম হয়েছি।

তাঁর আবেদন, কোভিডের টিকাকরণ হয়েছে তবুও আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ, এখনো মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁর পরামর্শ, কোভিডকে জীবনের অঙ্গ করে নেওয়া উচিত। কিন্ত, সতর্কতার সাথে সাবধানতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি। তিনি প্রত্যয়ের সুরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কোভিড মোকাবিলা এক ঐতিহাসিক ঘটনা। তাই তাঁকে সমগ্র ত্রিপুরাবাসীর পক্ষ থেকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাঁর দাবি, দেশবাসী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মতো যোগ্য নেতৃত্ব পেয়েছেন বলেই কোভিড মোকাবিলা সম্ভব হয়েছে। সাথে তিনি যোগ করেন, ত্রিপুরায় অক্সিজেনের কোন ঘাটতি নেই, এমনকি কোভিডের তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত পরিকাঠামো রয়েছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *