BRAKING NEWS

School is in dilapidated condition : বেহাল দশায় পরিণত সুতারমুড়া উচ্চ বিদ্যালয়, হেলদোল নেই শিক্ষা দপ্তরের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ডেস্ক, ৯ জুন।। প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকায় বেহাল দশায় পরিণত সুতারমুড়া উচ্চ বিদ্যালয়। হেলদোল নেই শিক্ষা দপ্তরের। বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। শিক্ষক সমাজের মেরুদন্ড এবং একটি দেশের উন্নতির হাতিয়ার। আমাদের পাহাড়ি রাজ‍্য ছোট্র ত্রিপুরার বুকে বেশির ভাগ দরিদ্র অংশের মানুষের বসবাস হওয়ায় শিক্ষার তাগিদে বেশির ভাগ শিশু সরকারী স্কুলে ছুটে। কৈশোর হোক বা যৌবন প্রত‍্যেকটা স্তরে সরকারী বিদ‍্যালয়, বিশ্ববিদ‍্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা আকাশ ছুঁয়ার স্বপ্ন দেখে । চড়িলাম বিধানসভার অন্তর্গত সুতারমুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শংকর দেবনাথ এর দুর্নীতি মূলক কর্মকান্ডের জন্য বেহাল অবস্থায় পরিণত ওই বিদ্যালয়টি । দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের ওই প্রধান শিক্ষক শংকর দেবনাথ এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠে আসছে।

সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সাংবাদিকরা শনিবার সুতারমুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে গেলে ওই বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসএমসি কমিটির চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা শিক্ষকের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন। অভিযোগ ওই শিক্ষক শংকর দেবনাথ নিজের মর্জি মাফিক বিদ্যালয়ে আসেন। ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিভিন্নভাবে ভয় দেখিয়ে নিজের ইচ্ছে মত ওই বিদ্যালয়কে পরিচালনা করছেন। যার ফলে ওই বিদ্যালয় বর্তমানে একপ্রকার বেহাল অবস্থায় পরিণত । অভিযোগ ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শংকর দেবনাথের বাড়ির নিকট ওই বিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞান শিক্ষকের বাড়ি। জানা যায় ওই বিজ্ঞান শিক্ষকের বাইকে চড়ে প্রধান শিক্ষক শংকর দেবনাথ বিদ্যালয়ে যাতায়াত সহ, উক্ত বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অফিশিয়াল মিটিং -এ যাওয়ার জন্য ওই বিজ্ঞান শিক্ষকের বাইক ব্যবহার করছেন দিনের পর দিন। তবে শুধু এখানেই থেমে নেই, ওই প্রধান শিক্ষক শংকর দেবনাথের কর্মকান্ড। অভিযোগ, যদি কোন কারনে ওই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক ছুটি নেন বা স্কুলে না আসেন, তাহলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শংকর দেবনাথও বিদ্যালয়ে আসে না। অন্যদিকে জানা যায়, এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষকের স্বল্পতা রয়েছে যার দরুন ছাত্র-ছাত্রীরা নিয়মিত ক্লাস করতে পারে না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ছাত্রছাত্রীরা শ্রেণিকক্ষে বসে থাকে। এমতাবস্থায় ওই প্রধান শিক্ষক শঙ্কর দেবনাথের বিদ্যালয়ের অন্য আরেকজন শিক্ষক নিয়ে বেরিয়ে পড়ার বিষয়টা কতটা যুক্তিযুক্ত এটাই প্রশ্ন শুভ বুদ্ধি মহলে। যদিও শনিবার ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে সাংবাদিকরা ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যখন অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে যায়, তখন সাংবাদিকদের সাথে ফোনে কথা বলতে গিয়ে ওই প্রধান শিক্ষক নিজেই তা স্বীকার করেন।


শনিবার পুরো ঘটনার সত্যতা সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানালেন উক্ত বিদ্যালয়ের এসএমসি কমিটির চেয়ারম্যান উমাকান্ত দেববর্মা। অপরদিকে ওই প্রধান শিক্ষকের পৌরহিত্যে পরিচালিত বিদ্যালয় এর অন্তর্গত ছাত্রী নিবাসটিও‌ বর্তমানে বেহাল দশায় পরিণত । অভিযোগ বিদ্যালয়ের ছাত্রী নিবাসের দায়িত্বে থাকা দুই মহিলা পরিচারিকাকেও ওই প্রধান শিক্ষক বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে থাকেন। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ওই দুই পরিচারিকা মহিলা জানায় বিদ্যালয়ের কিচেন গার্ডেনিং এর কাজ এবং জঙ্গল পরিষ্কার এর কাজ সহ সমস্ত কাজ তাদের দিয়ে করানো হয়।যদি ওই দুই পরিচারিকা মহিলা কাজ করতে অসম্মতি প্রকাশ করেন তাহলে উনাদের কাজ থেকে বহিষ্কার করে দেয়ারও হুমকি দেন ওই প্রধান শিক্ষক।সব থেকে অবাক করার বিষয় হচ্ছে গত দুই বৎসর যাবৎ উক্ত বিদ্যালয়ের অন্তর্গত ছাত্রী নিবাসটিতে বিকল হয়ে আছে জলের পাইপ লাইন, যার দরুন ছাত্রীদের শৌচাগার ব্যবহারের জল বাইরে থেকে নিতে হয়। এমনকি খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে স্নান করতে হয় ছাত্রী নিবাসে থাকা সমস্ত ছাত্রীদের।

শুধু তাই নয়, বিদ্যালয় এর অন্তর্গত ছাত্রী নিবাসে নেই কোন ধরনের পাখার ব্যবস্থা। যে পাখাগুলি রয়েছে সেগুলো বেহাল দশায় পরিণত । যার ফলে ভোগান্তির শিকার ছাত্রী নিবাসে থাকা ছাত্রীরা । অন্যদিকে ওই ছাত্রী নিবাসে সঠিকভাবে লাইটের ব্যবস্থাও নেই। উল্লেখ্য লকডাউন চলাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য ১২ টি বাইসাইকেল আসে। প্রধান শিক্ষক শঙ্কর দেবনাথ ৩ টি বাইসাইকেল ৩ জন ছাত্রীকে দিয়ে, বাকি নয়টি বাইসাইকেল দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে তালা দিয়ে রেখেছেন বদ উদ্দেশ্য নিয়ে। যদিও পরবর্তী সময় স্থানীয়দের তৎপরতায় লুকিয়ে রাখা সাইকেলগুলো ছাত্রীদের মধ্যে বন্টন করে দিতে বাধ্য হয় ওই প্রধান শিক্ষক। চড়িলাম বিধানসভার অন্তর্গত সুতারমুড়া উচ্চ বিদ্যালয়টি রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী যিষ্ণু দেববর্মনের নিজের বিধানসভা এলাকা। উপ মুখ্যমন্ত্রীর নিজের বিধানসভা এলাকায় বিদ্যালয়ের এই বেহাল অবস্থা নিয়ে উপমুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়েও বিভিন্ন প্রশ্ন উঠছে। এখন দেখার বিষয় এসব বিষয় নিয়ে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করে দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তর ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *