নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ সেপ্ঢেম্বর৷৷ ২০২১-২২ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় সরকার ত্রিপুরার জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা গ্রামীণ প্রকল্পে ১.৫৯ লক্ষ ঘর অনুমোদন দিয়েছে৷ এই পদক্ষেপ সকল অনুমোদিত গ্রামীণ পরিবারের সরকারি ঘর পাওয়ার অধিকারকে নিশ্চিন্ত করবে৷ কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গত ২৮ থেকে ৩০ আগস্ট ত্রিপুরা সফরে এসে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে এই অর্থ বছরে আরও ঘরের আনুমোদন দেওয়া হবে যদি অতি সত্বর ১.৫৯ লক্ষ ঘর রাজ্যে তৈরি করা হয়৷
ত্রিপুরা সরকারের গ্রামোন্নয়ন দফতর তাই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই ১.৫৯ লক্ষ ঘর নির্মাণের পদক্ষেপ নিয়েছে৷ গ্রামোন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত সচিব ড় টি কে দেবনাথ বলেন, ঘর পাওয়ার উপযুক্ত পরিবারগুলিকে আগামী ৫ সেপ্ঢেম্বর ঘরের অনুমোদন দেওয়া হবে৷ অনুমোদন পাওয়ার পর সুবিধাভোগীকে আধার নম্বর ও আধার ব্যবহারের সম্মতি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, রেশনকার্ডের নকল, এমজিএন রেগার কার্ডের নকল, জমির দলিলের নকল গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে জমা দিতে হবে৷ সঙ্গে সুবিধাভোগীর মোবাইল নম্বরও দিতে হবে৷
তিনি আরও বলেন, ঘরের জন্য বরাদ্দ টাকা, ঋণের ব্যবস্থা ও ঘর নির্মাণের সময়সীমা কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার (৯০:১০) প্রতিটি ঘরের জন্য ১৩০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছেন যা মোট তিনটি কিস্তিতে সুবিধাভোগীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কাজের গতি অনুসারে দেওয়া হবে৷ তিনি জানান, ঘর নির্মাণের জন্য প্রথম কিস্তিতে দেওয়া হবে ৪৮,০০০ টাকা৷ প্রথম কিস্তির টাকা দিয়ে সুবিধাভোগীকে ন্যূনতম ঘরের লিন্টেল পর্যন্ত যথাযথভাবে তুলতেই হবে৷ কাজের গতি পঞ্চায়েত কিংবা ব্লক অফিসের কর্মীরা প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করবেন৷ যদি কোন সুবিধাভোগী প্রথম কিস্তির টাকা দিয়ে উপযুক্তভাবে ঘর নির্মাণের কাজ না করে থাকেন তবে পরবর্তী কিস্তির টাকা পাওয়ার প্রশ্ণই উঠে না৷ উপরন্তু প্রথম কিস্তির টাকা ঐ সুবিধাভোগী থেকে আদায় করা হবে৷
তিনি বলেন, দ্বিতীয় কিস্তিতে দেওয়া হবে ৫০,০০০ টাকা৷ দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দিয়ে ঘরের ছাদ পর্যন্ত তৈরি করতে হবে৷
যদি দ্বিতীয় কিস্তির টাকা যথাযথভাবে ঘরের জন্য খরচ করা না হয় এবং কাজ ছাদ পর্যন্ত না পৌছে তবে প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা সুবিধাভোগীর কাছ থেকে আদায় করা হবে৷ তৃতীয় কিস্তিতে দেওয়া হবে ৩২,০০০ টাকা৷ তৃতীয় কিস্তির টাকা দিয়ে সুবিধাভোগীকে ঘরের কাজ সম্পন্ন করতে হবে৷ তাঁর কথায়, এই প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা এমজিএন রেগা থেকে সবর্োচ্চ ৯৫ দিনের টাকা (২১২ টাকা প্রতি দিন হিসেবে) অতিরিক্ত পাবেন যদি উপরিউক্ত কাজের গতি যথাযথ হয়৷ এ ছাড়াও কোন সুবিধাভোগী ইচ্ছে করলে বাসস্থান বন্ধক রেখে ব্যাঙ্ক থেকে ৭০,০০০ টাকা ৯ বার্ষিক সুদে ঋণ নিতে পারেন৷ তিনি বলেন, সুবিধাভোগীরা নির্মাণ সামগ্রী, শ্রমিকের সংস্থান অতি অবশ্যই ঘর অনুমোদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে করে নেবেন ঘরটি যথাযথভাবে তারাতারি সুসম্পন্ন করার জন্যে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, এই ঘরগুলি নির্মাণের জন্য আরও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাভোগীরা পেতে পারেন যেমন পাকা শৌচালয়, গ্যাস চুলা, বিদ্যুৎ সংযোগ, পানীয়জলের সংযোগ৷ এই সুবিধাগুলি যদি কোন সুবিধাভোগী পূর্বে পেয়ে থাকেন তবে আবার পাওয়ার প্রশ্ণ উঠে না৷
গ্রামোন্নয়ন দফতর জেলা, ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তরের সকল আধিকারিক ও কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ঘরের অনুমোদন, সকল আধিকারিক ও কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে৷ তাতে সুবিধাভোগীদের ঘর নির্মাণে পরোক্ষ সহায়তা, কাজের গতি পর্যালোচনা করা যাবে৷ নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে ঘর তৈরি করা, ঘরের আয়তন ও নির্মাণ শৈলী বজায় রাখা এবং দ্রুত কিস্তির টাকা দেওয়া সুনিশ্চিত করতে হবে, বলেন তিনি৷ গ্রামোন্নয়ন দপ্তর সুনির্দিষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছে এই ব্যাপারে কোন প্রকার দুর্নীতি সহ্য করবে না৷ অতি ছোট আকারের দুর্নীতির খবর মিললেও দুর্নীতিকারীর বিরুদ্ধে তৎক্ষনাৎ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সতর্ক করেছেন তিনি৷

