Tripura in the midst of politics : রাজনীতির মারপ্যাঁচে ত্রিপুরার ভাগ্য কোন পথে?

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ সেপ্ঢেম্বর৷৷ বিধানসভা নির্বাচনের আরও প্রায় দেড় বছর বাকি রয়েছে৷ এরই মধ্যে নির্বাচনের লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মাঠে নেমে পড়েছে৷ যারা ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন তারা জেগে উঠেছেন৷ কংগ্রেসের মতো দলও ময়দানে ঝাপিয়ে পড়তে চেষ্টা চালাচ্ছে৷ তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে ব্যাস্ত ছিল৷ এখন ত্রিপুরার নেতাদের নিয়া ময়দানে নেমেছে৷ দরদ যেন উথলাইয়া পড়ছে৷ তৃণমূলের রাজনৈতিক অভিসন্ধী হচ্ছে এখানে যদি দুই একটা আসই পেতে পারে তাহলে তাদের সর্বভারতীয় দলের পরিচয় বহাল রাখা সম্ভব হবে৷ ত্রিপুরায় ক্ষমতা দখলের আশ্বাস দিচ্ছে জনগণকে৷ কিন্তু, তাদের এই আশ্বাস বিশ্বাসে স্থাপিত হচ্ছে না৷


এদিকে, বিজেপির বিদ্রোহী শিবিরও মৃয়মান৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব তিনজনকে মন্ত্রী বানিয়ে প্রাথমিক স্ট্রোক করেছেন৷ অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কোন পথে যাবে সেটা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না৷ ছন্নছাড়া বিরোধী শিবির রাজ্যের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারেনি৷ পরিবর্তনপন্থীরা এখন দিকবিদিক জ্ঞানশূণ্য হয়ে ছুটাছুটি করছে৷
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব তিনজনকে মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছে, তা দলের হাইকমান্ডের অনুমোদন ছিল৷ তাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বিপ্লব দেবের উপর হাইকমান্ডের আস্থা ষোলআনায় রয়েছে৷ বিপ্লব দেবের বিকল্প নাই৷ বিক্ষুব্ধ নেতা সুদীপ রায় বর্মন বিজেপির বিশ্বাসভাজন হতে পারেনি৷ তাঁকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করছে হাইকমান্ড৷ এটাও জানা গিয়েছে, সুদীপ বর্মন মন্ত্রিত্বের লোভ প্রত্যাখান করেছেন৷ একটা পথ খোলা আছে সুদীপ বর্মনের সামনে৷ সেটা হচ্ছে তৃণমূল৷ চারমাস পর তৃণমূলে যোগ দেবেন সুদীপ? নাকি নির্বাচনের প্রাক্কালে? যদি সেটা না হয় তাহলে তাঁরা না ঘরকা-না ঘাটকা হয়ে যাবে৷ সুদীপপন্থীরা অথৈ জলে ভাসবে৷


এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নতুন করে ভাবাচ্ছে৷ একথা স্বীকার করতে হবে যে বর্তমানে শাসক দলের মধ্যে যারা বিক্ষুব্ধ তাদের অবস্থা এতটাই করুন যে তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারই প্রশ্ণ চিহ্ণের মুখে৷ এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব অগ্ণিপরীক্ষার মধ্যে আছেন৷ দল ও সরকার কতটা মানুষের কাছে পৌঁছতে পেরেছে৷ মানুষের চাহিদা, অভাব, অভিযোগ কতখানি লাঘব করতে পেরেছেন৷ মোটের উপর সংকট কতটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন৷


নির্বাচনের আরও দেড় বছর বাকি৷ একথা ঠিক রাজনীতিতে শেষ বলে কোন কথা নেই৷ রাজ্যের বর্তমানে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সেখানে বিরোধী শিবির অনেকটাই বেকায়দায় রয়েছে৷ কংগ্রেস এবং সিপিএম অতলে তলিয়ে গেছে৷ উঠে আসা অসম্ভব৷ কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল দলকে ক্রমেই নীচে টানিয়ে নিয়ে যাচ্ছে৷ হাইকমান্ডের নির্দেশে কিছুদিন অন্তর অন্তর নেতা আসছেন৷ প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্বদের একসূত্রে গাঁথার চেষ্টা করছেন৷ নেতারা ফিরে যেতেই শুরু হয়ে যায় পিছনে ছুরি মারার প্রক্রিয়া৷ এভাবে এই দলটি জনভিত্তি হারিয়ে ফেলেছে৷
প্রধান বিরোধী দল সিপিএমের অবস্থাও প্রায় একই৷ সাংগঠনিক ভিত নষ্ট হয়ে গেছে৷ মাঝে মধ্যে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধ বিভিন্ন নীতির বিরোধীতা করে রাজধানী সহ বিভিন্ন মহকুমায় বিক্ষোভ মিছিল সংগঠিত করছে সিপিএম৷ বিবৃতি আর সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার সর্বস্ব হয়ে পড়েছে লাগাতর ২৫ বছর ত্রিপুরায় শাসন করা কমিউনিস্ট দলটি৷
অন্যদিকে, মহারাজ প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মনের তিপ্রা মথা এডিসি দখল করলেও জনগণ তাদের প্রতি ততটা আস্থাশীল নন৷ উন্নয়নমূলক কাজকর্মের ক্ষেত্রে এডিসি প্রশাসনের তেমন কোন উদ্যোগ নজরে আসছে না৷ পাহাড়ীদের মধ্যে হতাশার ছাপ৷ এই পরিস্থিতিতে তিপ্রা মথার ভবিষ্যতও প্রশ্ণের উর্ধে নয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *