নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ ফেব্রুয়ারি৷৷ সন্ধ্যা রাতে ফিল্মি কায়দায় রাজধানী আগরতলার রাজপথে শিশু সহ দুই মহিলাকে অপহরণের ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থার ওপর প্রশ্ণ উঠেছে৷ শুক্রবার সাড়ে আটটা নাগাদ শিশু সহ দুই মহিলাকে অপহরণের চেষ্টা করেন অটো চালক৷ পথচারীরা তাদের উদ্ধার করতে সক্ষম হন৷ পথচারীদের রোষের মুখে পড়ে অটো চালক গুরুতর আহত হয়েছেন৷ পুলিশ অটোটি আটক করেছে৷ আহত অটো চালককে জিবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ এই ঘটনায় আগরতলা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে৷
জানা গেছে, শান্তিপাড়ার বাসিন্দা সুব্রত বিশ্বাসের স্ত্রী মিঠু দে বিশ্বাস(৩০) তার দুই শিশুসন্তান ও শাশুড়িকে সাথে নিয়ে ডাঃপরিতোষ গাঙ্গুলির কাছে গিয়েছিলেন৷ সাড়ে আটটা নাগাদ ডাক্তার দেখিয়ে বেরিয়ে রাস্তায় অটোটে উঠেন তারা৷ অটোটি তাদের নিয়ে মোটরস্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়৷ কিন্তু শান্তিপাড়া ঢোকার মুখে এসে অটোটি না দাঁড়িয়ে কাসারি পট্টির দিকে বাঁক নেয়৷ তখনই মিঠু দে বিশ্বাস অটো চালককে জিজ্ঞেস করেন এই রাস্তা দিয়ে কেন তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ অটো চালক তাদের জানান, ভুলবশতঃ এই রাস্তায় বাঁক নেওয়া হয়েছে৷ তাদেরকে যথা স্থানে নামিয়ে দেওয়া হবে৷ কিন্তু জ্যাকসন গেইট এসে অটোটি সোজা চলতে থাকে৷ তখনই তাদের সন্দেহ হয় অটো চালকের মতলব ঠিক নয়৷ ওরিয়েন্ট চৌমুহনীতে আসতেই মিঠু দে বিশ্বাসের শাশুড়ি দীপ্তি বিশ্বাস অটো থেকে ঝাঁপ দেন৷ তাকে অটো থেকে পড়তে দেখে স্থানীয় জনগণ ছুটে আসেন এই ভেবে হয়ত দুর্ঘটনাবশতঃ তিনি পড়ে গেছেন৷ তখন দীপ্তিদেবী স্থানীয় জনগণদের জানান, অটোতে তার বউমা ও দুই বাচ্চাকে অটো চালক অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে৷ সঙ্গে সঙ্গে অটোটি ধাওয়া করে বেশ কয়েকজন৷ পালিয়ে যাওয়ার সময় অটোটি কয়েকটি বাইককে ধাক্কা দেয়৷ অবশেষে উমাকান্ত সুকল এবং ফায়ার ব্রিগেড চৌমুহনীর মাঝামাঝি রাস্তায় গিয়ে অটোটিকে ধরে ফেলে জনগণ৷ অটো থেকে মিঠু দে বিশ্বাস ও তার দুই সন্তানকে উদ্ধার করে অটো চালককে উত্তম মধ্যম দেওয়া হয়৷ সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিম আগরতলা থানায় ঘটনাটির বিষয়ে জানানো হয়৷ পুলিশ এসে অটো ও অটোর চালককে আটক করে নিয়ে যায়৷ জানা গেছে, অটোর চালক স্বপন শীল(৫০) আনন্দনগরের বাসিন্দা৷ জনতার মারধরে অটো চালক গুরুতর আহত হওয়ায় পুলিশ তাকে জিবি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেছে৷
এই ঘটনায় পশ্চিম আগরতলা থানায় অপহরণের একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ পুলিশ জানিয়েছে, এই অপহরণের ঘটনার নেপথ্যে কি লুকিয়ে রয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব নয়৷ কারণ, অটো চালকের কাছ থেকে কোন বয়ান লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হয়নি৷ কিন্তু সন্ধ্যারাতে অপহরণের ঘটনায় রাজধানী আগরতলায় জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে৷ একই সাথে রাজধানী আগরতলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ণ উঠেছে৷ দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা এবং দুই শিশুকে অপহরণের ঘটনাটি কোন ভাবেই খাটো করে দেখা যাবে না বলে মনে করছে তথ্যভিজ্ঞ মহল৷ পাশাপাশি এই অপহরণের পেছনে কি রহস্য তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে৷ পুলিশ জানিয়েছে এই অপহরণের ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে৷ অটো চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই ঘটনায় রহস্য উন্মোচিত হবে বলে পুলিশ নিশ্চিত৷