ইস্তানবুল, ১ জানুয়ারী (হি.স.) : ইস্তাম্বুলের নাইটক্লাবে বর্ষবরণের রাতে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৯, আহত ৪০ জন বর্ষবরণের রাতে তুরস্কের প্রধান ও অভিজাত নগরী ইস্তাম্বুলের একটি জনাকীর্ণ নাইটক্লাবে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা । ১৬ জন বিদেশি নাগরিক সহ নিহত ৩৯ জন। আহত হয়েছেন প্রায় ৪০ জন। সান্টা ক্লজের পোশাকে রবিবার গভীর রাতে রেইনা ক্লাবের বর্ষবরণের উত্সবে সামিল নিরীহ মানুষের ওপর ওই নৃশংস হামলা চালায় আততায়ীরা । ঘটনার সময় নাইট ক্লাবে ৭০০ জন ছিলেন। শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ।
স্থানীয় সময় রাত দেড়টা নাগাদ সান্তাক্লজের পোশাক পরে নাইট ক্লাবে নিউ ইয়ারের পার্টিতে প্রবেশ করে এক সশস্ত্র জঙ্গি।ঘটনার সময় নাইট ক্লাবে ৭০০ জন ছিলেন। নাইটক্লাবে ঢুকেই এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে । আততায়ীদের আচমকা গুলিবৃষ্টিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩৯ জনের। জখম ৪০। হামলা থেকে বাঁচতে সংলগ্ন নদীতে ঝাঁপ দিলেন অনেকে। উৎসবে সামিল মানুষের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। প্রাণে বাঁচতে অনেকে বসফরাস প্রণালীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। হামলার খবর পেয়েই নাইটক্লাবটি ঘিরে ফেলে পুলিশ।
এক প্রত্যক্ষ্যদর্শী জানিয়েছেন, সিরিয়ার আলেপ্পোয় রাশিয়ার হস্তক্ষেপের জেরেই এই হামলা বলে গুলি চালানোর সময় চিৎকার করে জানিয়েছিল হামলাকারী।
প্রাদেশিক সরকার এই ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী হামলা বলেই জানিয়েছে। প্রাদেশিক গভর্নর বলেছেন, ক্লাবে ঢোকার আগে আততায়ী এক পুলিশ কর্মী ও সাধারন মানুষকে হত্যা করে। তার সঙ্গে ছিল লং-ব্যারেল বন্দুক। গভর্নর বলেছেন, রাত পৌনে দুটো নাগাদ বর্ষবরণের উত্সবে সামিল নিরীহ মানুষের ওপর ওই আততায়ী নৃশংস হামলা চালায়।পুলিশ নাইট ক্লাবটি ঘিরে ফেলে নিকেশ করে আততায়ীকে । আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হামলার তীব্র নিন্দা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের উপ মুখপাত্র মার্ক টোনার বলেছেন, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা তুরস্কের পাশে আছি। জঙ্গিরা নিরীহ মানুষদের হত্যা করছে, এটা খুবই লজ্জাজনক।’ এখনও পর্যন্ত কোনও সংগঠন হামলার দায় না নিলেও, আই এস এবং কুর্দ জঙ্গিরা এই হামলা চালিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা তুরস্ক প্রশাসনের।
গত বছর বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলার সাক্ষী থেকেছে তুরস্ক। মাত্র দু’সপ্তাহ আগেই আঙ্কারায় রুশ রাষ্ট্রদূতকে গুলি করে হত্যা করে এক পুলিশকর্মী। আলেপ্পোর বদলা নিতেই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি করে সে। তার আগে গত ১০ ডিসেম্বর ইস্তাবুলের ফুটবল স্টেডিয়ামের বাইরে জোড়া বিস্ফোরণ ঘটায় কুর্দ জঙ্গিরা। তাতে প্রায় ৪৪ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া আরও একাধিক হামলা হয়েছ তুরস্কে সব মিলিয়ে ২০১৬-তে ইস্তানবুল ও আঙ্কারায় আইএস জঙ্গি বা কুর্দিস বিদ্রোহীদের একাধিক হামলায় ১৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে।