নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ জুলাই৷৷ স্বপ্ণের রেল যাত্রা অবশেষে শুরু হচ্ছে৷ ৩১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে আগরতলা থেকে দূরপাল্লার যাত্রীরেল পরিষেবা চালু হবে৷ রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভাকর প্রভু আগরতলা থেকে দূরপাল্লার যাত্রীরেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন৷ এই বিষয়ে শুক্রবার মহাকরণে পরিবহণ মন্ত্রী মানিক দেকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ের নির্মাণ শাখার জেনারেল ম্যানেজার এইচ কে জগ্গি রাজ্যের পরিবহণ সচিব সমরজিৎ ভৌমিককে টেলিফোনে জানিয়েছেন ৩১ জুলাই আগরতলা থেকে দূরপাল্লার যাত্রীরেল পরিষেবার আনুষ্ঠানিক সূচনার দিন চূড়ান্ত হয়েছে৷ রেলমন্ত্রী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসবেন৷ একই সাথে আগরতলা-আখাউড়া রেল প্রকল্পের শিলান্যাসও তিনি করবেন৷
তবে, যাত্রীরেলের আনুষ্ঠানিক সূচনা লগ্ণে আগরতলা থেকে সরাসরি কোথায় যাওয়া সম্ভব হবে সেই বিষয়ে এখনও কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি রেলওয়ে কর্তারা৷ পরিবহণ মন্ত্রী বলেন দুই একদিনের মধ্যে সমস্ত কিছু চূড়ান্ত হয়ে যাবে৷ আগরতলা থেকে সরাসরি কলকাতা না দিল্লী, সেই বিষয়েও রেলওয়ের তরফে এই মুহুর্তে কিছু জানা যায়নি৷ অবশ্য শনিবার পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ের চীফ একাউন্টস অফিসার এ এস গারোর এবং নির্মাণ শাখার মুখ্য বাস্তুকার হরপাল সিং পরিবহণ মন্ত্রী সহ প্রশাসনের পদস্থ আধিকারীকদের সাথে বৈঠক করবেন৷ আশা করা যাচ্ছে আগামীকাল যাত্রীরেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের কার্যসূচী এবং এক্সপ্রেস রেল ও তার গন্তব্যস্থল সম্পর্কে সমস্ত তথ্য জানা যাবে৷ পরিবহণ মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, শুক্রবার রেলওয়ের আধিকারীকদের সাথে রেলমন্ত্রীর সফর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে৷ ঐ বৈঠকে মুখ্যসচিব এবং পরিবহণ সচিব উপস্থিত ছিলেন৷ এদিকে, রেলওয়ে সূত্রে খবর, ২৯ জুলাই সন্ধ্যার মধ্যে এক্সপ্রেস রেলটি ১৫টি বগি নিয়ে আগরতলা স্টেশনে এসে পৌঁছবে৷ সূত্রের দাবি, সূচনালগ্ণে আগরতলা থেকে দিল্লী পর্যন্ত সপ্তাহে দুইদিন রেল চালানো হবে৷ যতদূর ধারণা করা হচ্ছে রাজধানী ক্যাটাগরীর ট্রেন দেওয়া হতে পারে৷
এদিকে, শুক্রবার দুপুরে রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর সাথে দেখা করেন রাজ্যের তিন সাংসদ৷ জীতেন্দ্র চৌধুরী, শংকর প্রসাদ দত্ত এবং ঝর্ণা দাস বৈদ্য এদিন রেলমন্ত্রীর সাথে দেখা করলে তিনি তাঁদের জানান ৩১ জুলাই আগরতলা থেকে দূরপাল্লার যাত্রীরেলের আনুষ্ঠানিক সূচনা হবে৷ এই খবর পেয়ে রাজ্যের তিন সাংসদ রেলমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ পাশাপাশি দূরপাল্লার যাত্রীরেলে হিন্দী ও বাংলার পাশাপাশি সমস্ত স্টেশন থেকে ককবরকেও ঘোষণা হয় সেই ব্যবস্থা চালু করার অনুরোধ জানানো হয়েছে রেলমন্ত্রীর কাছে৷
উল্লেখ্য, এর আগেও দুইবার দূরপাল্লার যাত্রীরেলের আনুষ্ঠানিক সূচনার প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তা সম্ভব হয়ে উঠেনি৷ মাইগ্রেনদিসায় পাহাড় লাইন বিপর্যস্ত হয়ে পরায় এই রুটে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল৷ সম্প্রতি মাইগ্রেনদিসায় তিনশ মিটার ডাইভারশন করে যে ট্রেক বসানো হয়েছে সেই পথে সফলতার সাথে যাত্রী ও পণ্যবাহী রেল চলাচল শুরু হয়েছে৷ পাহাড় লাইন চালু হতেই ত্রিপুরার দীর্ঘদিনের স্বপ্ণ পূরণের প্রস্তুতি নেয় রেল মন্ত্রক৷ ফলে, দেরীতে হলেও অবশেষে রাজ্যবাসী আগরতলা থেকে দূরপাল্লার যাত্রীরেল পরিষেবার সুযোগ পেতে চলেছেন৷
2016-07-23