খোয়াই জেলার পৃথক জায়গায় শিশু, কিশোরী ও গৃহবধূ ধর্ষিতা

নিজস্ব প্রতিনিধি, তেলিয়ামুড়া/ খোয়াই, ২২ জুলাই৷৷ খোয়াই জেলার পৃথক স্থানে তিনজন ধর্ষিতা হয়েছে৷ এর মধ্যে একটি সাত বছরের শিশুও রয়েছে৷ কিশোরী ও গৃহবধূকে গণধর্ষণ করা হয়েছে৷ এই ব্যাপারে তেলিয়ামুড়া ও চাম্পাহউড় থানায় পৃথক মামলা হয়েছে৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলার জনগণের মধ্যে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে৷


সংবাদে প্রকাশ, মঙ্গলবার তেলিয়ামুড়া থানায় এক শিশু কন্যাকে ধর্ষণ করার মতো গুরুতর অভিযোগ লিপিবদ্ধ হয়েছে৷ যদিও এই ঘটনাটি ঘটে আনুমানিক এক পক্ষকাল পূর্বে৷ নরপশুর দ্বারা জোরপূর্বক শিশুকন্যাকে ধর্ষণের ঘটনায়এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে৷ পুলিশ এই ঘটনার বিবরণ দিয়ে জানায়, তেলিয়ামুড়া থানাধীন জারুলং বাড়ি গ্রামের বাসিন্দা জৈনক উপজাতি সম্প্রদায়ের ব্যক্তির সাত বছরের শিশু কন্যাকে একই গ্রামের বাসিন্দা রাজেন্দ্র দেববর্মার ছেলে ধনঞ্জয় দেববর্মা (২৪) ধর্ষণ করে৷ ঐদিন সকালে শিশুকন্যা নদীর পাশে প্রাকৃতিক কার্য সারতে গেলে অভিযুক্ত যুবক পাশের জঙ্গলে শিশুটিকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যায় ও ধর্ষণ করে৷ ঘটনার পর ভয় ভীতি প্রদর্শন করে এই ব্যাপারে কাউকে কিছু যদি জানায় তবে প্রাণ নাশ করা হবে৷ এতদিন ভয়ে কাউকে কিছু না বললেও সোমবার এই শিশুকন্যা তার মাকে সমস্ত বিষয় জানায়৷ পরে গ্রামের মুরুববীদের ঘটনাটি জানালে এই ব্যাপারে সালিশি সভার মাধ্যমে মীমাংসা করতে চাইলেও মীমাংসা হয়নি ঘটনার৷ ফলে এক প্রকার বাধ্য হয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযুক্তের নাম ধাম দিয়ে তেলিয়ামুড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়৷ তেলিয়ামুড়া থানায় দায়ের করা মামলা নম্বর ৭৭/২০২০৷পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওই যুবক শিশু কন্যার মাসিকেও ধর্ষণ করার চেষ্টা করে৷ যদিও চিৎকার চেঁচামেচি করে ঐ জায়গা থেকে পালিয়ে আসে শিশুর মাসি৷ পুলিশ অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছে৷


রাজ্যে এবার গণধর্ষণের শিকার এক উপজাতি কিশোরী৷ উপজাতি কিশোরীর বয়স ১৭৷ ঘটনা মহকুমা শহর তেলিয়ামুড়ায়৷ এই খবর দিয়ে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার আনুমানিক সাতটা নাগাদ মুঙ্গিয়াকামী থানাধীন পানবাড়ি এলাকার কোচরাই পাড়ার বাসিন্দা ১৭বছরের কিশোরীর সাথে চাকমাঘাট এলাকার বাসিন্দা রামপ্রসাদ সরকারের ছেলে রূপেস সরকারের প্রণয় ঘটিত সম্পর্ক ছিল৷ মঙ্গলবার বিকেলে রূপেস সরকার (২০) মেয়েটিকে চাকমাঘাট স্থিত একটি ইকো পার্কের খবর দিয়ে নিয়ে আসে৷ কিছুক্ষণ পরে কিশোরীর বাড়িতে ফেরত পাঠাতে রুপেস চাকমাঘাটস্থিত অটো স্ট্যান্ডে নিয়ে আসে৷ এই সময়ে রূপেসের পরিচিত কাসেম মিঞা (৩৫), জায়েদ মিঞা(২২) দুইজনে গাড়ি নিয়ে অটো স্ট্যান্ডে এলে ঐ নাবালিকাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য রুপেশ তাদের অনুরোধ জানায়৷ সেই অনুরোধ অনুযায়ী কাসেম নাবালিকাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাদের একটি গাড়িতে তুলে৷ যদিও জাহেদ মিঞা এই কিশোরীর নিকটাত্মীয়৷

পরে জাহিদ মিঞা ও কাসেম মিঞার সাথে আরো তিন যুবক আহমেদ আলি (২৩), গনি মিয়া (২৪), সহ অপর এক যুবক তাদের সঙ্গী হয়৷ মেয়েটিকে নিয়ে এই পাঁচজন দুটি নম্বরবিহীন গাড়িতে তার মধ্যে একটি মারুতি অল্টো এবং একটি ওয়াগনার গাড়ি করে নিয়ে যায়৷ অভিযোগ, এই মেয়েটিকে বাড়ির উদ্দেশ্যে না নিয়ে গিয়ে তাকে তেলিয়ামুড়া থানাধীন খাসিয়ামঙ্গলের দিকে একটি জঙ্গলে নিয়ে যায়৷ জানা যায়, গাড়ির মধ্যেই সংঘবদ্ধভাবে পাঁচজন জোর পূর্বক ভাবে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে৷ এই ঘটনার পর মেয়েটিকে নিয়ে দুটি গাড়ি তেলিয়ামুড়া নেতাজি নগরস্থিত ইউবিআই ব্যাংক সংলগ্ণ স্থানে রাত আনুমানিক সাড়ে আটটা নাগাদ ফেলে দিয়ে যায়৷ পরে ধর্ষিত কিশোরীর তার প্রেমিক রুপেসের মোবাইলে ফোন করে সমস্ত ঘটনা জানায় এবং তাকে আসতে বলে৷ সাথে সাথেই প্রেমিক রুপেস নেতাজি নগর ইউবিআই ব্যাংক সংলগ্ণ স্থানে এসে বাইকে করে মেয়েটিকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিলে মেয়েটি বাড়িতে যেতে অস্বীকার করে৷ তেলিয়ামুড়া থানায় আসে৷ ঘটনার বিবরণ ও অভিযুক্তদের নাম ধাম দিয়ে অভিযোগ করে৷ মামলা নম্বর হল ৭৯/২০২০৷ তবে মূল অভিযুক্তরা পলাতক৷ পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নাবালিকার প্রেমিক রূপেস সরকারকে তেলিয়ামুড়া থানায় নিয়ে আসে৷


অন্যদিকে, গণধর্ষণের শিকার এক সন্তানের জননী৷ ঘটনা চাম্পাহাউর থানাধীন ধনিয়া ছড়া এলাকায়৷ এই ঘটনার সাথে জড়িত দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে চাম্পাহাউর থানার পুলিশ৷ অভিযুক্তদের নিজ বাড়ি থেকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়৷ ধৃতরা হল সোনিয়া খারিয়া এবং লালবাবু খারিয়া৷ ধৃতদের বুধবার খোয়াইয়ের এসডিজেএম আদালতে তোলা হলে মাননীয় বিচারক অভিযুক্তদের ১৪ দিনের জেল হাজতে থাকার নির্দেশ দেন৷ ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, গত ১৮ জুলাই দুপুর নাগাদ স্বামীর অনুপস্থিতিতে দুই অভিযুক্ত মহিলার ঘরে প্রবেশ করে জোরপূর্বক মহিলাকে ধর্ষণ করে৷ ঘটনার পর পালিয়ে যাবার সময় মহিলাকে কাউকে কিছু বললে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়ে যায়৷ হুমকির ভয়ে মহিলা কাউকে কিছু না বললেও একুশে জুলাই মহিলা তার স্বামীকে বিস্তারিত ঘটনা সম্পর্কে জানায়৷ তারপর মহিলার স্বামী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের করেছে৷ এদিন রাতে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে চাম্পাহাউর থানার পুলিশ৷ বুধবার অভিযুক্তদের আদালতে তোলা হলে তাদের ১৪ দিনের জেল হাজতে পাঠায় বিচারক৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *