রাজ্যে করোনা আক্রান্তে সর্বোচ্চ রেকর্ড, নতুন ১৭১ জন, বিএসএফ পরিবারে ৮২

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা/চড়িলাম, ১৮ জুলাই৷৷ রাজ্যে করোনা সংক্রমণের সর্বোচ্চ রেকর্ড৷ একদিনে ১৭১ জন করোনা সংক্রমিতের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে৷ এর মধ্যে বিএসএফ পরিবারেই রয়েছে ৮২ জন৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্যুইট করে একথা জানিয়েছেন শনিবার৷ তিনি জানিয়েছেন, এদিন ৪১৮৪ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল৷ অন্যদিকে, এদিন রাজ্যের বিভিন্ন কোভিড কেয়ার সেন্টার থেকে ৫১ জন করোনা রোগীকে সুস্থ হওয়ায় ছুটি দেওয়া হয়েছে৷


মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন আক্রান্তদের মধ্যে ২ জন বিমানযাত্রী, ৮ জন সংস্পর্শে আসা, ৪ জন কন্টেইমেন্ট জোনে, ১০ জন উপসর্গভিত্তিক, ১৪৬ জন এন্টিজেন্ট টেস্টের মাধ্যমে৷ এই ১৪৬ জনের মধ্যে ৮২ জন বিএসএফ পরিবারের৷ এই ৮২ জন বিএসএফের মধ্যে ১৩৩ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের ৪০ জন, ১৪৫ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের ৪০ জন, ৬৪ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের ১ জন এবং ১৩০ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের ১জন জওয়ানের শরীরে করোনা সংক্রমনের সন্ধান মিলেছে৷ এছাড়া আরও একজন করোনা সংক্রমিতের সন্ধান মিলেছে৷
এদিন করোনা আক্রান্তের জেলা ভিত্তিক তথ্যে দেখা গিয়েছে, ধলাই জেলায় ৮৫ জন, সিপাহীজলায় ৩৪ জন, গোমতী জেলায় ১৭ জন, পশ্চিম জেলায় ১২ জন, দক্ষিণ জেলায় ৭ জন, উত্তর জেলায় ৭ জন, ঊনকোটি জেলায় ৫ জন এবং খোয়াই জেলায় ৪ জন৷

সিপাহীজলা জেলায় আরও ১টি নতুন কোভিড কেয়ার সেন্টার খোলা হবে৷ বিশ্রামগঞ্জের জেলা প’ায়েত রিসোর্স সেন্টারে এই কোভিড কেয়ার সেন্টারটি চালু হবে আগামী ২০ জলাই থেকে৷ আজ সিপাহীজলা জেলাশাসকের কনফারেন্স হলে কোভিড-১৯ সংক্রমণজনিত পরিস্থিতি নিয়ে এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ উল্লেখ্য, সিপাহীজলা জেলায় ইতিমধ্যেই লালসিংমুড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বিশ্রামগ’ আইটিআই এবং মেলাঘরের সাগরমহল ট্যুরিস্ট লজে আগেই কোভিড কেয়ার সেন্টার খোলা হয়েছিলো৷ আজকের সভায় জেলার কোভিড-১৯ পরিস্থিতির সার্বিক পর্যালোচনা করা হয়েছে৷ সভায় বিধায়ক সুুভাষ চন্দ্র দাস, সিপাহীজলা জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুুপ্রিয়া দাস দত্ত, সহকারী সভাধিপতি পিন্টু আইচ, বিভিন্ন প’ায়েত সমিতির চেয়ারম্যান, জেলাশাসক সি কে জমাতিয়া, অতিরিক্ত জেলাশাসক উদয়ন সিনহা, অতিরিক্ত জেলাশাসক তমাল মজমদার, সিপাহীজলা জেলার সি এম ও ডা. রঞ্জন বিশ্বাস, জেলার তিন মহকুমার মহকুমাশাসক, ব্লকের বিডিওগণ এবং তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সহধিকর্তা পাঞ্চালী দেববর্মা উপস্থিত ছিলেন৷


তাছাড়াও সভায় আরক্ষা দপ্তর ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন৷ সভায় সিপাহীজলা জেলার কোভিড-১৯ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য চড়িলাম ব্লকের বিডিও জয়ন্ত চক্রবর্তীর নেত’ত্বে ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে৷
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সিপাহীজলা জেলাশাসকের এক আদেশে জেলার ৩টি মহকুমার বিভিন্ন এলাকাকে কনটেইনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে৷ সিপাহীজলা জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তার আদেশমূলে ১৭ জলাই থেকে ১৪ আগষ্ট পর্যন্ত বিশালগড় ব্লকের অরবিন্দনগর গ্রাম প’ায়েতের ২টি পরিবারের ১৫ জন এবং মেলাঘর পুরপরিষদ এলাকার ২, ৩, ৫, ৬, ৮,১০ এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মাষ্টারপাড়া, চণ্ডীপুর, মেলাঘর থানা, পদ্মঢেপা, ঠাকুরপাড়া, ইন্দিরানগর, রাজঘাট এলাকাগুলিকে কনটেইনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে৷ মেলাঘর পুর এলাকায় কনটেইনমেন্ট জোন এলাকায় ২ হাজার ৭২৩টি পরিবারের ১০ হাজার ৮১৮ জন মানুষ রয়েছেন৷


তাছাড়া আজ জেলার সোনামুড়া এবং জম্পইজলা মহকুমার বিভিন্ন এলাকাকে ১৮ জলাই থেকে ১৫ আগষ্ট পর্যন্ত কনটেইনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে৷ এই আদেশ অনুযায়ী কাঁঠালিয়া ব্লকের মধ্যে কান্তিনগর গ্রাম প’ায়য়েতের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ১১৮টি পরিবারের ২৭৫ জন মানুষ এবং জম্পইজলা ব্লকের কেন্দ্রাইছড়া এডিসি ভিলেজের জরমনি পাড়ার ২৭ টি পরিবারের ৮৮ জন এবং বুদ্ধিচন্দ্রপাড়ার১৮টি পরিবারের ৭৩ জন মানুষ সহ মোট ৪৫টি পরিবারের ১৫১ জন মানুষের বসবাসরত এলাকাকে কনটেইনমেন্ট জোন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে৷


এদিকে, চড়িলাম বিধানসভার অন্তর্গত লাল সিংমুড়া কোভিড-১৯ সেন্টার থেকে শনিবার সকালে সিপাহীজলা জেলার সাতজন পজিটিভ সুস্থ হওয়া রোগীকে ছেড়ে দেওয়া হয়৷তারা এই জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পজিটিভ ছিলো৷সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার আনন্দই ছিলো তুলনাহীন৷স্পষ্ট ভাবে একথা জানান সাংবাদিককে তারা এই কোভিড কেয়ার সেন্টারে বহুদিন খুব আনন্দেই কাটিয়েছে৷ তারা শনিবার যার যার বাড়ি ফিরতে পেরে আরও আনন্দ ও মনে উৎফুল্লতা লক্ষ্য করা গেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *