১৭ জুলাই থেকে ৭ দিন সম্পূর্ণ লকডাউন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ জুলাই৷৷ আনলক ২.০ চলাকালীন করোনা মোকাবিলায় ত্রিপুরা সরকার কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে৷ গ্রামীণ এলাকায় বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১ কিমি এলাকায় এবং পুর নিগম এলাকায় বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে আধা কিমি এলাকায় ৭ দিনের জন্য সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে৷ আগামী ১৭ জুলাই থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে৷ তাতেও করোনা-র প্রকোপে লাগাম ধরা সম্ভব না হলে ত্রিপুরা সরকার আরও কঠোর হবে বলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী রতনলাল নাথ৷ সাথে তিনি যোগ করেন, এখন থেকে আরটিপিসিআর এবং অ্যান্টিজেন টেস্ট মিলে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭ হাজার পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷


এদিন তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলায় ত্রিপুরা সরকার আরও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে৷ কারণ, সীমান্ত এলাকায় করোনা-র প্রকোপ মানুষের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তাতে প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ তাই, জনস্বার্থে কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে৷ তাঁর কথায়, ত্রিপুরায় ১১৬টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ২২টি সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে৷ ত্রিপুরা সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রত্যেক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এলাকায় ২৫ জনের অ্যান্টিজেন কিট দিয়ে এবং ৫ জনের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে৷ তাতে, প্রতিদিন প্রায় ৪ হাজার পরীক্ষা হবে৷

এছাড়া বিমানবন্দরে প্রত্যেক যাত্রীর লালারস সংগ্রহ করা হবে এবং চোরাইবাড়ি দিয়ে যাঁরা আসবেন তাঁদের অ্যান্টিজেন কিট দিয়ে পরীক্ষা করা হবে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, এখন থেকে হাসপাতালে ভরতি অর্থাৎ ইনডোরের প্রত্যেক রোগীর নমুনা পরীক্ষা করা হবে৷ অ্যান্টিজেন কিট দিয়ে পরীক্ষায় কোভিড-১৯ রিপোর্ট যদি নেগেটিভ আসে তবু ওই রোগীকে হাসপাতালে ভরতি করা হবে৷ এছাড়া অন্য আউটডোরের রোগীদের পাঠানো হবে কোভিড সেন্টারে৷ বলেন এতে সবমিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৭ হাজার পরীক্ষা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ আইনমন্ত্রীর মতে, এক্ষেত্রে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা, গাড়ির চালক, ব্যবসায়ী এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের পরীক্ষায় অগ্রাধিকার দেওয়া হবে৷


আইনমন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ছে৷ তাই, নতুন ল্যাব টেকনিশিয়ান নিযুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ত্রিপুরা সরকার৷ তিনি বলেন, প্রতি জেলায় অতিরিক্ত ১০ জন এবং উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ১২ জন ল্যাব টেকনিশিয়ান নিযুক্তির সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ তাঁদের মাসিক ২০ হাজার টাকা সাম্মানিক দেওয়া হবে৷ আগস্ট পর্যন্ত ওই ল্যাব টেকনিশিয়ানরা নিযুক্ত থাকবেন৷ তিনি আরও বলেন, ত্রিপুরায় আরটিপিসিআর যন্ত্র আরও ২টি এসেছে এবং আরও ১টি কিছুদিনের মধ্যে আসবে৷ ফলে, এখন নমুনা পরীক্ষার সামর্থ্য বেড়ে গেছে৷ তাঁর দাবি, টিএমসি, উদয়পুর এবং ধর্মনগরে ১টি করে আরটিপিসিআর যন্ত্র বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে৷


মন্ত্রীর কথায়, ১৭ জুলাই থেকে পুর নিগম এলাকার সীমান্ত থেকে আধা কিমি জুড়ে ৭ দিনের জন্য সম্পূর্ণ লকডাউন থাকবে৷ তেমনি, গ্রামীণ এলাকার সীমান্ত থেকে ১ কিমি জুড়ে ৭ দিনের জন্য সম্পূর্ণ লকডাউন পালন করা হবে৷ এ-ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকরা সীমানা নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করবেন৷ তাঁর দাবি, জরুরি পরিষেবা, গ্রোসারি দোকান, ব্যাঙ্ককে লকডাউনের আওতার বাইরে থাকবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *