নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ জুলাই৷৷ মেঘালয়ে বাঙালিদের উপর অত্যাচার নিগ্রহের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার ত্রিপুরায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে আমরা বাঙালি৷ তেমনি, ক্ষোভে ফেটে পড়েছে কলকাতার বাঙালি ছাত্র যুব সমাজ৷ ৫ দফা দাবি পূরণে এদিন মেঘালয় এবং ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ করেছে আমরা বাঙালি দল৷ দাবি পূরণ না হলে অস্তিত্ব রক্ষা তথা অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্ণে আমরা বাঙালি দল নিকট ভবিষ্যতে বাংলার অঞ্চল জুড়ে বিরাট আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে৷ একইভাবে, বাঙালি ছাত্র যুব সমাজও বাঙালি নির্যাতন বন্ধ করতে পদক্ষেপ ও দোষীদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে৷
বাঙালি ছাত্র যুব সমাজের কেন্দ্রীয় সচিব তপোময় বিশ্বাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, শিলঙে ৬ জন বাঙালি যুবক আক্রান্ত হয়েছেন৷ স্থানীয় দুষৃকতী অরিন্দম দেব, শুভর্ষী দাস পুরকায়স্থ, সপ্তর্ষি দাস পুরকায়স্থ, পিনাক দেব, পৃথ্বীশ দেব এবং বিশাল ঘোষকে মেরে জখম করেছে৷ শুধু তা-ই নয়, স্থানীয় ছাত্র সংগঠন ফতোয়া জারি করে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, অবিলম্বে বাঙালি-রা মেঘালয় ছেড়ে চলে না গেলে রক্তগঙ্গা বইবে৷ তিনি মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রীর এ-বিষয়ে হস্তক্ষেপ চেয়েছেন৷ বাঙালির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হোক, দাবি জানিয়েছেন৷
আমরা বাঙালি ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি-র সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্রপাল এদিন বলেন, মেঘালয়ে বাঙালিদের উপর ক্রমাগত নির্যাতন বাড়ছে৷ তাঁর দাবি, মার্চের গোড়ায় মেঘালয়ের রাজধানী শিলঙের অদূরে ইছামতি ও বালাগড় বাজারে স্থানীয় মেঘালয়ের খাসি জনজাতি মানুষ বাঙালিদের দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্ণিসংযোগ করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ ধবংস করেছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালিরা কর্তৃপক্ষের কাছে তার ক্ষতিপূরণ ও বিচার চাইলে মেঘালয় সরকার উল্টো বাঙালিদের বিভিন্ন অপরাধজনিত মামলায় জড়িয়ে দিয়েছে৷ তাঁর অভিযোগ, ৩ জুলাই শিলঙে কিছু বাঙালি যুবক বাস্কেটবল খেলতে শুরু করলে আগে থেকেই উপস্থিত ২০/২৫ জনের মতো জনজাতি অংশের যুবক লোহার রড সহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে৷ তাতে ৬ জন বাঙালি যুবক মারাত্মকভাবে জখম হন এবং তারা এখনো চিকিৎসাধীন৷
এদিন তিনি সুর চড়িয়ে বলেন, মেঘালয়ে বাঙালিদের বেঁচে থাকার সাংবিধানিক অধিকার বার বার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে গৌরাঙ্গবাবু মেঘালয় সরকার তথা ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দাবি রাখেন, অবিলম্বে মেঘালয়, অসম, ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চল তথা গোটা ভারতবর্ষে বাঙালি নির্যাতন ও সাংবিধানিক অধিকার হরণের চক্রান্ত বন্ধ করা হোক৷
গত মার্চ মাসে ইছামতি ও বালাগড় বাজারে যারা বাঙালিদের দোকানপাট ধবংস করেছে ও সম্প্রতি শিলঙে বাঙালি খেলোয়াড়দের মেরে জখম করেছে, তাদেরকে আইনানুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা করতে হরে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণ ক্ষতিপূরণ ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে৷ ভিত্তি সালের অজুহাতে ভারতের ভূমিপুত্র কোনও বাঙালিকে রাষ্ট্রহীন করা চলবে না৷ এছাড়া, বাঙালি সমস্যা সমাধানে সংবিধানের ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী বাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চল নিয়ে সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চল বাঙালিস্তান গঠন করতে হবে৷ তাঁর হুঁশিয়ারি, অস্তিত্ব রক্ষা তথা অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্ণে আমরা বাঙালি দল নিকট ভবিষ্যতে বাংলার অঞ্চল জুড়ে বিরাট আন্দোলন গড়ে তুলবে৷