রাজ্যে দাবি দিবস পালন বামেদের, কিছু স্থানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ জুলাই৷৷ রাজ্যে বামেরা দাবি দিবস পালন করেছেন৷ সারা ত্রিপুরায় ৭ দফা দাবির ভিত্তিতে আন্দোলন সংগঠিত করেছে সিপিএম-এর নেতৃত্বে চার বাম দল৷ তবে কিছু কিছু স্থানে আন্দোলনে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে বামফ্রন্ট অভিযোগ করেছে৷ আজ মঙ্গলবার ত্রিপুরা বামফ্রন্ট কমিটি এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ জানানোর সাথে আন্দোলনে শামিল হওয়ার জন্য সকলকে অভিনন্দন জানিয়েছে৷


বিবৃতিতে বামফ্রন্ট বলেছে, জনগণের আশু ও জরুরি ৭-দফা দাবিতে ত্রিপুরা বামফ্রন্ট কমিটি রাজ্যব্যাপী দাবি দিবস পালনের আহ্বান জানিয়েছিল৷ ত্রিপুরার সবকয়টি মহকুমায় এক বা একাধিক স্থানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বামফ্রন্টের কর্মী-সমর্থক-দরদি এবং বিপন্ন জনগণ শান্তিপূর্ণভাবে দাবি দিবস পালন করেছেন৷ তাই, ত্রিপুরা বামফ্রন্ট কমিটি দাবি দিবসে অংশগ্রহণকারীদের সংগ্রামী অভিনন্দন জানাচ্ছে৷

এদিন বামফ্রন্ট কমিটি অভিযোগ এনে বলেছে, সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অন্তত চারটি মহকুমা তথা বিলোনিয়া, কমলপুর, জিরানিয়া ও মোহনপুরে গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগঠিত করতে কোথাও পুলিশ বাধা দিয়েছে৷ আবার কোথাও পুলিশের উপস্থিতিতে বিজেপি-আশ্রিত সমাজবিরোধীরা অংশগ্রহণকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে৷ মোহনপুর মহকুমার যুবতারা এলাকায় দাবি দিবস পালন করে বাড়ি ফেরার পথে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ বিজেপি গুণ্ডাদের হাতে আক্রান্ত হন এবং চার জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হয়েছে৷


বামফ্রন্ট মনে করে, বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের জনৈক মন্ত্রীর প্রকাশ্য অবিবেচক মন্তব্য দলীয় সমাজদ্রোহীদের গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা চালাতে উৎসাহিত করেছে৷ তাই, ত্রিপুরা বামফ্রন্ট কমিটি দাবি দিবস উদযাপনে পুলিশের বাধা দান ও অংশগ্রহণকারীদের ওপর সমাজদ্রোহী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং এ সব ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছে৷


বামেদের দাবি, করোনা, লকডাউন, ১৪৪ ধারা জারি ইত্যাদির মাধ্যমে ত্রিপুরা সরকার জনগণের প্রতিবাদী কণ্ঠ স্তব্ধ করার প্রয়াস চালাচ্ছে৷ সরকারের এই অপপ্রয়াস আগামী দিনে বৃহত্তর গণআন্দোলন দমনে ব্যর্থ হবে৷ ত্রিপুরা বামফ্রন্ট কমিটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণতান্ত্রিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা শান্তিপূর্ণভাবে প্রয়োগের স্বার্থে অবিলম্বে রাজ্য থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে৷

এদিকে, মঙ্গলবার মোহনপুরের ধ্রুবতারা এলাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর শাসকদলের লোকজনরা হামলা সংঘটিত করেছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে৷ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় ১২ জন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন সিপিআইএম পশ্চিম জেলা কমিটির সম্পাদক পবিত্র কর৷ আন্দোলনকারীদের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তিনি৷ বিষয়টি তিনি জেলা পুলিশ সুপার এবং রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক এর নজরোনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন৷ পুলিশের সামনেই এই হামলার ঘটনা সংগঠিত করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷ হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে পবিত্র বাবু বলেন, হামলা সংঘটিত করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না, বরং আন্দোলন আরো তীব্র আকার ধারণ করবে বলে উল্লেখ করেন পবিত্র বাবু৷ বামেদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপর হামলা সংঘটিত করে গণতান্ত্রিক অধিকার এবং রাজনৈতিক অধিকার হরণের চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে৷ ভয়-ভীতি হামলা হুজ্জোতি উপেক্ষা করে আন্দোলন আরও তীব্রতর আকার ধারণ করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সিপিআইএম পশ্চিম জেলা সম্পাদক পবিত্র কর৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *