মাধ্যমিকে পাশের হার বেড়ে ৬৯.৪৯ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ জুলাই৷৷ ত্রিপুরায় মাধ্যমিকের নতুন সিলেবাসের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে৷ এ-বছর মাধ্যমিকে পাশের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯.৪৯৷ গত বছর পাশের হার ছিল ৬৪.৬০ শতাংশ৷ আজ শুক্রবার ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের মিলনায়তনে সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা করেছেন পর্ষদ সভাপতি ড় ভবতোষ সাহা৷ করোনা-প্রকোপের মধ্যে মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশ করতে পেরে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি৷



পর্ষদ সভাপতি বলেন, করোনা-প্রকোপে আমাদের দেশ তথা সারা বিশ্ব আজ বিপর্যস্ত৷ একই কারণে পর্ষদকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন পরীক্ষা আকস্মিকভাবে ২৩ মার্চ থেকে স্থগিত রাখতে হয়েছিল৷ যা গত ২৯ জুন বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে৷ তাঁর কথায়, এই প্রেক্ষাপটে একমাত্র নুতন সিলেবাসের মাধ্যমিক পরীক্ষা গ্রহণ সম্পূর্ণ হয়েছিল৷ যার ফল আমরা আজ প্রকাশ করছি৷



লকডাউন পরিস্থিতিতেও পরীক্ষক, স্ক্রুটিনাইজার, প্রধান পরীক্ষকগণ পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে যে সহায়তা করেছেন তার জন্য পর্ষদ সভাপতি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন৷ তিনি জানান, এ-বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় নতুন সিলেবাসের পরীক্ষা ৩ মার্চ শুরু হয়েছিল৷ সমাপ্ত হয়েছে ২১ মার্চ৷ সাথে তিনি যোগ করেন, এ-বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৫০,২৬৫ জন নাম নথিভুক্ত করেছিল৷ তাদের মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছে ৪৮,৪৯৯ জন৷ ওই সকল পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছেলে ২২,৮৩৬ এবং মেয়ে ২৬,১৫৮ রয়েছে৷ তিনি বলেন, গত বছর পরীক্ষার জন্য নাম নথিভুক্ত করেছিল ৪৬,৫৭১ জন এবং পরীক্ষা দিয়েছে ৪৪,৭৪৭ জন৷



ড় সাহা বলেন, এ-বছর ১০৫২টি সুকলের ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে৷ তারা রাজ্যের ৭৭টি পরীক্ষাকেন্দ্রভুক্ত মোট ১৫৮টি বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়েছে৷ তাঁর দাবি, এ-বছর পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন শুরু হয়েছিল ২৪ এপ্রিল এবং সমাপ্ত হয়েছে ২২ মে৷ তিনি জানান, এ-বছর ৩৬ জন শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে৷ তাদের মধ্যে দৃষ্টিহীন ৯ জন (এর মধ্যে একজন মেয়ে)৷ শারীরিক প্রতিবন্ধীদের মধ্যে একজন ছেলে অকৃতকার্য হয়েছে৷



পর্ষদ সভাপতির কথায়, এ-বছর মাধ্যমিক-নিয়মিত পরীক্ষার্থীর পাশের হার ৬৯.৪৯ শতাংশ৷ গত বছর পাশের হার ছিল ৬৪.৬০ শতাংশ৷ এদিন তিনি পাশের হারের নিরিখে আরও বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, তফশিলি উপজাতি পরীক্ষার্থীদের পাশের হার ৫৮.৩৭ শতাংশ, গত বছর ছিল ৪৫.৮৪ শতাংশ৷ তফশিলি জাতি পরীক্ষার্থীদের পাশের হার ৭৩.৩৫ শতাংশ, গত বছর ছিল ৬৬.৭১ শতাংশ৷ তিনি জানান, এডিসি-তে এ-বছর বিদ্যালয়সমূহের পাশের হার ৪৮.৫৩ শতাংশ, গত বছর ছিল ৪৯.৮০ শতাংশ৷



পর্ষদ সভাপতি আজ জেলাস্তরেও মাধ্যমিকে পাশের হার সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন৷ তিনি বলেন, জেলাস্তরে গোমতি জেলা পাশের হারে সবর্োচ্চ স্থান পেয়েছে৷ গোমতি জেলায় ৭৭.৪৬ শতাংশ পাশের হার হয়েছে৷ গত বছর ছিল ৬৯.৫৪ শতাংশ৷ সাথে তিনি যোগ করেন, ধলাই জেলায় পাশের হার সর্বনিম্ন৷ ধলাই জেলায় ৫২.৯২ শতাংশ পাশের হার৷ গত বছর ছিল ৪৯.৬১ শতাংশ৷ এছাড়া, দক্ষিণ জেলায় ৭৫.৭২ শতাংশ, পশ্চিম জেলায় ৭৪.৪৭ শতাংশ, সিপাহিজলা জেলায় ৭১.৩২ শতাংশ, উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ৬৬.১৬ শতাংশ, ঊনকোটি জেলায় ৬৫.৩৯ শতাংশ এবং খোয়াই জেলায় ৬০.৮৩ শতাংশ পাশের হার রয়েছে৷



প্রত্যাশিতভাবে এ-বছরও মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি ছিল৷ এ-বছর প্রতি ১,০০০ ছাত্রের মধ্যে ছাত্রী সংখ্যা ১,১৪৫৷ পর্ষদ সভাপতি জানিয়েছেন, এ-বছর ১০০ শতাংশ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সফল সুকলের সংখ্যা ৮০টি, যা গত বছর ছিল ৫৩টি৷ একইভাবে, এ-বছর ১০০ শতাংশ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অসফল সুকলের সংখ্যা ৫টি, যা গত বছর ছিল ৩৪টি৷ তিনি জানান, এ-বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের জন্য এক ছাত্র বহিষৃকত এবং একজন ছাত্রকে রিপোর্টেড এগেনস্ট হয়েছে৷ তিনি বলেন, এ-বছর সংশোধনাগার থেকে কোনও পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়নি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *