করোনা : অনুপ্রবেশ ঠেকাতে লাঠি নিয়ে উন্মুক্ত সীমান্ত প্রহরায় আমিরনের নেছা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ এপ্রিল৷৷ করোনা মোকাবিলায় ত্রিপুরার উন্মুক্ত সীমান্তে লাঠি নিয়ে প্রহরা দিচ্ছেন গ্রামপ্রধান আমিরনের নেছা৷ কারণ বাংলাদেশে করোনা-র প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে৷ স্বাভাবিকভাবে এর প্রভাব ত্রিপুরায় পড়তে পারে, সেই আশংকা উড়িয়ে দেওয়ার অবকাশ নেহ৷ তাই ত্রিপুরায় এখন বিএসএফ-এর পাশাপাশি গ্রামবাসীও উন্মুক্ত সীমান্ত প্রহরায় নিজেদের সমর্পণ করেছেন৷
ত্রিপুরা-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সিপাহিজলা জেলার এনসিনগর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান আমিরনের নেছা উন্মুক্ত সীমান্ত পাহারার তদারকি করছেন৷ সীমান্তে লাঠি হাতে নিয়ে চেয়ারে বসে থাকেন তিনি৷ একজনও বাংলাদেশি যাতে গ্রামে ঢুকতে না পারেন, তার জন্য গ্রামবাসীদের উদ্বুদ্ধ করছেন ওই গ্রামপ্রধান৷ সিপাহিজলার পুলিশ সুপার কৃষ্ণেন্দু চক্রবর্তী ওই পঞ্চায়েত প্রধানকে তাঁর অভূতপূর্ব ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন৷


ত্রিপুরায় এখনও বহু সীমান্ত উন্মুক্ত৷ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ হয়নি৷ শুধু সিপাহিজলা জেলায় ৪টি স্থানে ৮.৪ কিমি এলাকা জুড়ে সীমান্ত উন্মুক্ত রয়েছে৷ শুধু তা-ই নয়, এনসিনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৩ কিমি সীমান্ত উন্মুক্ত৷ সিপাহিজলার পুলিশ সুপার কৃষ্ণেন্দু চক্রবর্তী বলেন, করোনা মোকাবিলায় জনসচেতনতা এবং সহযোগিতা সবচেয়ে জরুরি৷ সোনামুড়া মহকুমার এনসিনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আমিরনের নেছা সমগ্র ত্রিপুরার জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন৷ তিনি প্রতিদিন লাঠি নিয়ে সীমান্তে চেয়ার নিয়ে বসে থাকেন৷ কারণ, একজন বাংলাদেশিও যাতে ত্রিপুরায় প্রবেশ করতে না পারেন, সেই লক্ষ্যে এই উদ্যোগ তিনি নিয়েছেন৷ শুধু তা-ই নয়, গ্রামবাসীদের এ-বিষয়ে উদ্বুদ্ধও করছেন তিনি৷ পুলিশ সুপার বলেন, বিএসএফ-কে সাথে নিয়ে আমি নিজে গিয়ে তাঁর এই মহতি কাজের জন্য তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এসেছি৷


এদিকে, এখন থেকে বিএসএফ-এর পাশাপাশি টিএসআর জওয়ানরাও সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের ভিতরে টহল দেবেন৷ এ-বিষয়ে কৃষ্ণেন্দু চক্রবর্তী বলেন, সীমান্ত নিকটবর্তী গ্রামের ভেতরে টহল দেওয়ার জন্য টিএসআর মোতায়েন করা হয়েছে৷ প্রত্যেক গ্রামে সেন্টি পোস্ট বসানো হয়েছে৷ এতে কঠোর নজরদারি চালানো যাবে৷


প্রসঙ্গত, ত্রিপুরার নিকটবর্তী বাংলাদেশের ছয়টি জেলায় করোনা-র প্রকোপ দেখা দিয়েছে বলে খবব৷ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী তাই এই মুহূর্তে কোনও বাংলাদেশি নাগরিককে রাজ্যে আশ্রয় না দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন৷ জননিরাপত্তার প্রশ্ণে মুখ্যমন্ত্রী সমগ্র ত্রিপুরাবাসীর প্রতি এই আবেদন রেখেছেন৷ তাতে আমিরনের নেছাদের মতো মানুষের মহতী উদ্যোগ ত্রিপুরাকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়ক হবে বলেই বিশ্বাস তথ্যভিজ্ঞ মহলের৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *