খোয়াইয়ে গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা, উদয়পুরে গর্ভধারীনী মাকে নৃশংসভাবে কোপাল ছেলে

নিজস্ব প্রতিনিধি, খোয়াই/ উদয়পুর,২৯ সেপ্ঢেম্বর৷৷ রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা প্রশ্ণের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে৷ একই দিনে পৃথক স্থানে গৃহবধূকে কুপিয়ে

দেবাশিষ দে-কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ ছবি নিজস্ব৷

হত্যা এবং মাকে হত্যার লক্ষ্যে এলোপাথাড়ী কোপানোর ঘটনা ঘটল৷

আবারও এক গৃহবধূ খুন৷ শ্বশুরবাড়িতে গৃহবধূকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে৷ ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাত সাড়ে সাতটা নাগদ খোয়াইয়ের উত্তর দূর্গানগর এলাকায়৷ ঐ এলাকার বাসিন্দা সুখেন বিশ্বাসের স্ত্রী রিংকু দত্ত বিশ্বাস(৩৫) কে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে৷ মৃতার স্বামী জাম্বুরা সুকলের শিক্ষক৷ জানা গিয়েছে, এদিন সন্ধ্যায় বাড়িতে ছিলেন স্বামী ও শ্বাশুড়ি৷ দেবর বাড়ির বাইরে ছিলেন৷ আটটা নাগাদ গহবধূকে ডাকতে যান শ্বাশুরি৷ ঘরে ঢুকেই দেখতে পান পুত্রবধূর রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে রয়েছে৷ মৃতার গলায় ও পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ণ রয়েছে৷ সাথে সাথেই হৈচৈ চিৎকার চেচামেচি শুরু হয়ে যায়৷ খবর দেওয়া হয় খোয়াই থানায়৷ পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে৷ এই ব্যাপারে একটি খুনের মামলা নেওয়া হয়েছে৷ পুলিশ তদন্ত করে দেখছে কিভাবে এই ঘটনা ঘটল এবং কারা এর সাথে জড়িত৷

এদিকে, দিনদুপুরে গর্ভধারীনী মাকে হত্যার লক্ষ্যে নৃশংসভাবে কুপিয়ে রক্তাক্ত করল ছেলে৷ ঘটনাটি ঘটেছে উদয়পুর শহরের প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলো এলাকায়৷ এই ঘটনায় শহরে চাঞ্চল্য ও বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে৷ এই যুগের ‘পরশুরামের’ এহেন আচরণের বিরুদ্ধে সকল অংশের মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে৷

ঘটনার বিবরণে জানা গিয়েছে, এই এলাকার বাড়াটিয়া সূত্রে বাসিন্দা  মলিনা রাণী দে (৬০) তার তিন ছেলেকে নিয়ে স্থানীয় কাজল দাসের বাড়িতে ভাড়া থাকেন৷ বড় ছেলে তহশিলদারের চাকুরী করেন৷ মধ্যম ছেলে ও ছেলে বেকার৷ ছোট ছেলে দেবাশিষ দের সঙ্গে প্রায়শই তার মার বিবাদ লেগেই থাকে৷ এনিয়ে অনেকবার থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে৷ তাদের প্রত্যেকবারই মিলিয়ে দেওয়া হত পুলিশের তরফ থেকে৷ মরিনারানীর নামে উদয়পুর সুইমিং পুল এলাকায় একটি জমি আছে৷ ছোট ছেলের সঙ্গে ঝামেলার সূত্রপাত এই জমি থেকেই বলে জানা গিয়েছে৷ সে প্রায়শই এই জমি তার নামে লিখে দেবার জন্য তার মাকে চাপ দিত৷  শুক্রবার রাতে তাদের মধ্যে আবার ঝগড়া হয়৷ তখন মলিনাদেবীর ছোট ছেলে দেবাশিষ ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়৷ চিৎকার শুনে মলিনাদেবীর ঘরের পার্শ্ববর্তী লোকজন এসে খবর দেয় অগ্ণিনির্বাপক বাহিনীর কাছে৷ তারা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে৷ জানা গিয়েছে, তার মাকে মারার লক্ষ্যেই সে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল ঘরে৷ শনিবার সকাল নয়টা নাগাদ তাদের ঘরে চিৎকার শুনে এলাকার লোকজন জড়ো হয়৷ তারা গিয়ে দেখতে পায় দেবাশিষ তার মা মলিনা দেবীকে এলোপাথারী দা দিয়ে আঘাত করছে৷ তা দেখে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন৷ খবর দেওয়া হয় থানায়৷ এর আগেই বাড়িতে থাকা বড় ছেলে প্রদিপ দে তার ভাইয়ের হাত থেকে মাকে রক্ষার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছিল৷ কিন্তু, দেবাশিষের হাতে দা থাকায় তিনিও কাছে যেতে পারছিল না৷ ঘটনা দেখে রাস্তার লোকজন সহ ছুটে গিয়ে বাঁশ দিয়ে আঘাত করে দেবাশিষকে দূরে সরিয়ে তার মাকে উদ্ধার করে এবং উদয়পুর হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ পুলিশ গিয়ে দেবাশিষকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়৷ মলিনাদেবীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে গোমতী জেলা হাসপাতাল থেকে হাপানিয়াস্থিত টিএমসিতে পাঠানো হয়৷ জানা গিয়েছে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন মলিনাদেবী৷ অন্যদিকে, অভিযুক্ত দেবাশিষকে পুলিশ থানায় রেখে জেরা করছে৷ পুলিশ জানিয়েছে সে নেশায় আসক্ত৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা উদয়পুর শহরে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *