গুয়াহাটি, ০৯ ফেব্রুয়ারি, (হি.স.) : টিচার ইলিজিবিলিটি টেস্ট, সংক্ষেপে টেট হচ্ছে এক যোগ্যতার পরীক্ষা। টেট উত্তীৰ্ণ হলেই চাকরি হয়ে যাবে তা নয়। পোৱা নুবুজায়। এই মন্তব্য শিক্ষামন্ত্ৰী ড. হিমন্তবিশ্ব শৰ্মার। টেট উত্তীৰ্ণ প্রার্থীদের কেন সংস্থাপন দেওয়া হচ্ছে না বলে আজ বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বিধায়ক আব্দুল খালেক সরকারের কাছে জানতে চাইলে এর জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এ কথাগুলি বলেন।
অসম বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে আজ জিরো আওয়ারে বিধায়ক আব্দুল খালেক টেট উত্তীর্ণদের সংস্থাপন প্ৰসঙ্গে উত্থাপন করে বলেন, রাজ্যে এখনও বহু টেট উত্তীৰ্ণ প্ৰাৰ্থী আছেন। কিন্তু তাঁরা সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত। প্ৰাথমিক, উচ্চ প্ৰাথমিক ছাড়াও হাইস্কুল ও মাদ্ৰাসা টেট উত্তীৰ্ণ বহু প্ৰাৰ্থী বেকারত্ব জীবন কাটাচ্ছেন। তাই টেট উত্তীৰ্ণ প্ৰাৰ্থীদের শীঘ্ৰ নিয়োগের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি জেলা ভিত্তিক টেট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করারও দাবি জানান বিধায়ক আব্দুল খালেক।
এর উত্তর জবাব দিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, টেট হচ্ছে শিক্ষক পদের জন্য এক যোগ্যতার পরীক্ষা। এর সঙ্গে নিশ্চিত চাকরির কোনও সম্পৰ্ক নেই। টেট উত্তীৰ্ণ হলেই যে বাধ্যতামূলকভাবে সরকারি চাকরি দিতে হবে তা নয়। তাছাড়া টেট উত্তীৰ্ণ মানে চাকরির সাক্ষাৎকারে উত্তীৰ্ণ হয়ে যাওয়া বোঝায় না। শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য কেবল টেট উত্তীৰ্ণই নয়, বিএড বা অন্যান্য আনুসঙ্গিক বিষয়াবলিও যাচাই করা হয়। টেট উত্তীৰ্ণদের নিয়োগ সম্পৰ্কে মন্ত্ৰী আরও জানান, যত পদ খালি হবে তার বিপরীতে সমসংখ্যক প্রার্থী নিয়োগ লাভ করবেন।
এদিকে মাদ্ৰাসার টেট উত্তীৰ্ণ প্ৰাৰ্থী প্ৰসঙ্গ উত্থাপন করে মন্ত্ৰী জানান, মাদ্ৰাসায় শূন্য পদ আছে ১২০টি। তার বিপরীতে উত্তীৰ্ণ হয়েছেন ২২ হাজার প্ৰাৰ্থী। এক্ষেত্রে সবাই নিযুক্তি কী করে দেওয়া হবে?
অন্যদিকে সপ্তম বেতন কমিশনের পর সরকার এখন নতুন পদ সৃষ্টি করি অতিরিক্ত বোঝা বহন করার অবস্থায় নেই বলেও মন্ত্ৰী শর্মা জানান। তিনি বলেন, সপ্তম বেতন কমিশনের কাৰ্যকর করে কৰ্মচারীদদের বকেয়া প্রদান, সরকারি বিভিন্ন বিভাগের শূন্য পদদুলি শীঘ্ৰ পূরণ করা, সৰ্বশিক্ষার প্ৰতি গুরুত্ব ও এতে কর্মরতদের নিয়োগ নিশ্চিত করার বিষয়ের ওপর প্ৰাথমিক অগ্ৰাধিকার দিচ্ছে সরকার। এর পরই রাজস্ব অনুসারে প্ৰাদেশীকরণ বা নতুন পদ সৃষ্টির বিষয়ে সরকার বিবেচনা করবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
অসমে বহু ভুয়ো ডিগ্ৰিধারী শিক্ষকদের রক্ষা করছেন একাংশ আধিকারিক : শিক্ষামন্ত্রী
গুয়াহাটি, ০৯ ফেব্রুয়ারি, (হি.স.) : রাজ্যের বহু উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভুয়ো পিএইচ.ডি ডিগ্ৰিধারী শিক্ষক কাজ করছেন। আর, এঁদের রক্ষণাবেক্ষণ দিচ্ছেন বিভাগেরই একাংশ আধিকারিক। অসম বিধানসভায় আজ বৃহস্পতিবার এক প্ৰশ্নের জবাবি ভাষণে বিস্ফোরক এই তথ্য ফাঁস করেছেন খোদ শিক্ষামন্ত্ৰী ড. হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা। তিনি জানান, ভুয়ো পিএইচ.ডি ডিগ্রি হাসিল করে রাজ্যের বহু কলেজে শিক্ষকতা করছেন বহু ব্যক্তি এমন তথ্য তাঁর হাতে এসেছে।
লেংটিশিঙা কলেজের অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলামের পিএইচ.ডি ডিগ্রি সম্পর্কে গোলকগঞ্জের বিধায়ক বিজেপির অশ্বিনী রায় সরকারের এক প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। বিধায়কের অভিযোগ, জহিরুল ইসলাম নামের অধ্যাপক তথা অধ্যক্ষের দাখিলিকৃত শিক্ষাগত যোগ্যতার নথিপত্রে বহু অসংগতি রয়েছে। তাঁর পিএইচ.ডি ডিগ্ৰির তথ্যও সন্দেহের আবর্তে। বিধায়ক বলেন, অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম তাঁর পিএইচ.ডি ডিগ্ৰিটি ২০১৩ সালের এপ্ৰিলে মগধ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাভ করেছেন বলে দেখিয়েছেন। সাধারণত পিএইচ.ডি-র জন্য কম করেও দুই বছর সময়ের প্ৰয়োজন। কিন্তু তিনি তাঁর কলেজে একদিনও অনুপস্থিত না থেকে কী করে এই ডিগ্ৰি লাভ করেছেন তা বিচার্যের বিষয়।
অশ্বিনী রায় সরকারের প্ৰশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্ৰী বলেন, অধ্যক্ষ প্রদত্ত পিএইচ.ডি ডিগ্ৰিটি মেনে নেওয়ার মতো বিষয় নয়। এক্ষেত্রে তাঁকে বিভাগীয় কতিপয় আধিকারিক রক্ষণাবেক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী। তবে এ ব্যাপারে গুরুত্ব সহকারে অধ্যয়ন করে বিহীত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে জানান, গোটা ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে সব দোষীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। তিনি জানান, কেবল জহিরুল ইসলামই নন রাজ্য এমন বহু ভুয়ো ডিগ্রিধারী শিক্ষক রয়েছেন। তাঁদের খুঁজে বের করা হবে।