লখনউ, ২৫ ফেব্রুয়ারি (হি.স.): প্রয়াগরাজের ঘটনায় শুন্য-সহনশীলতা নিয়ে কাজ করছে উত্তর প্রদেশ সরকার। শনিবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। পাল্টা সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। অখিলেশ বলেছেন, পুলিশ সম্পূর্ণ ব্যর্থ এবং বিজেপিই দায়ী। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, “প্রয়াগরাজের ঘটনায় শুন্য-সহনশীলতা নিয়ে কাজ করছে সরকার। কিন্তু যে অপরাধী ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাকে কি সমাজবাদী পার্টি লালন-পালন করেনি? সমাজবাদী পার্টি কী তাকে সাংসদ করেনি? আমরা এই মাফিয়াদের রেহাই দেব না।” যোগী আরও বলেছেন, “যে মাফিয়া এই কাজ করেছে সে এখন রাজ্য থেকে পলাতক, মাফিয়া যেই হোক, আমাদের সরকার রাজ্যে ‘মাফিয়া রাজ’ থাকতে দেবে না।”
পাল্টা সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বলেছেন, যেভাবে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে, তাতে এটা স্পষ্ট যে এই সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে এবং গ্যাং ওয়ার-এর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এটাই কী রামরাজ্য যেখানে প্রকাশ্যে গুলি চালানো হচ্ছে? পুলিশ সম্পূর্ণ ব্যর্থ এবং বিজেপি দায়ী।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে উত্তর প্রদেশে বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) বিধায়ক রাজু পাল খুন হয়েছিলেন। অভিযোগ উঠেছিল কুখ্যাত দুষ্কৃতী তথা প্রাক্তন সাংসদ আতিক আহমেদের বিরুদ্ধে। সেই মামলার সাক্ষী ছিলেন উমেশ পাল। তাঁর জীবনহানি হওয়ার আশঙ্কায় প্রশাসন থেকে দু’জন পুলিশ কর্মীকে দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার একটি সাদা রঙের এসইউভিতে বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ান উমেশ। রাস্তার ভিড়ের মধ্যে মিশে ছিল হামলাকারীরা। উমেশ গাড়ি থেকে নামতেই এক দুষ্কৃতী পিছন থেকে এসে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দৌড়ে একটি গলির মধ্যে ঢুকে যান উমেশ। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। দুই দেহরক্ষীর উপর গুলি চালিয়ে উমেশকে পর পর গুলি করে খুন করা হয়। তার পই বোমা ছুড়তে ছুড়তে এলাকা ছাড়ে দুষ্কৃতীরা। উমেশের পাশাপাশি এক পুলিশ কর্মীও প্রাণ হারিয়েছেন।
প্রয়াগরাজের সিপি রমিত শর্মা বলেছেন, বেশ কয়েকটি মামলার প্রধান সাক্ষী উমেশ পালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং শুক্রবার প্রয়াগরাজের সুলেম সারায় এলাকায় শুটআউটে তাঁর দুই পুলিশ বন্দুকধারী গুরুতর আহত হন। উমেশ ও বন্দুকধারীদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করে দুষ্কৃতীরা। গুরুতর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য এসআরএন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় উমেশের মৃত্যু হয়। পরে একজন পুলিশ বন্দুকধারীর মৃত্যু হয়। আমরা এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছি। তদন্ত চলছে। প্রয়াগরাজ পুলিশ জানিয়েছে, উমেশ পাল হত্যা মামলায় অর্ধ ডজনের বেশি সন্দেহভাজনকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছে গ্যাংস্টার আতিক আহমেদের দুই ছেলে। উমেশ পালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত এক পুলিশ সদস্যও নিহত হয়েছেন এবং একজন আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন।