শিকাগো, ৩ জুলাই — যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের একটি নাইটক্লাবের বাইরে গোলাগুলি ও ভয়াবহ হামলা চালানোর ফলে ৩ জন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনাটি ঘটেছে আর্টিস লাউঞ্জ নাইটক্লাবের বাইরে, যেখানে পার্টির পর এক র্যাপারের অ্যালবাম রিলিজ পার্টি শেষে মানুষ বের হচ্ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, এটি ছিল একটি ড্রাইভ-বাই শুটিং (গাড়ি থেকে গুলি চালানো), যেখানে একাধিক ব্যক্তি লক্ষ্যবস্তু হয়েছিলেন।
এ হামলাটি ঘটেছিল আর্টিস লাউঞ্জ নামক এক প্রখ্যাত নাইটক্লাবের বাইরে, যেখানে র্যাপার মেলো বাকজ-এর অ্যালবাম রিলিজ পার্টির পর ভিড় বের হচ্ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীরা গাড়ি থেকে বের হয়ে দ্রুত গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। একাধিক ভিডিও বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে একটি চলন্ত গাড়ি থেকে গুলি চালানোর শব্দ শোনা যায় এবং ঘটনাস্থলে ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়।
এটি প্রথমবার নয় যে আর্টিস লাউঞ্জ বা তার পূর্বসূরি হাশ লাউঞ্জ একাধিক সহিংসতার সাক্ষী হয়েছে। গত নভেম্বর ২০২২ সালে, ওই একই জায়গায় একটি ম্যাস শুটিং ঘটেছিল, যেখানে একজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছিলেন। ঐ সময় পুলিশ নাইটক্লাবটি বন্ধ করে দেয়, পরে আবার আর্টিস লাউঞ্জ হিসেবে নতুনভাবে চালু করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র সহিংসতা একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, তবে সম্প্রতি একাধিক বন্দুকধারী হামলা সত্ত্বেও এ বিষয়ে কার্যকর কোনো সমাধান এখনও বের হয়নি। ২০২৩ সালে, অ্যাকটিভ শুটার (অস্ত্রধারী হামলা) ঘটনার কারণে ১০৫ জন নিহত হন, এমন তথ্য দিয়েছে এপি। এছাড়া সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এর সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ৪৭,০০০ মানুষ গণ-হত্যা ও গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতার এক অস্বস্তিকর চিত্র তুলে ধরে।
শিকাগো পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং নিরাপত্তা ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অতীতের মতোই এই ধরণের সহিংসতা রোধে নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তবে এখনও পর্যন্ত এর কোন কার্যকরী সমাধান পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার পর আর্টিস লাউঞ্জ বন্ধ করা হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে পুলিশ এখনও কোন অফিসিয়াল ঘোষণা দেয়নি, তবে এটি স্পষ্ট যে এই এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠছে। শহরের জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতারা একে অপরকে দোষারোপ করতে শুরু করেছেন, তবে একযোগিতায় কাজ না করলে এই ধরনের সহিংসতা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই ঘটনা পুনরায় প্রমাণিত করে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র সহিংসতা এক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখন নাগরিকরা একে অপরের জীবন রক্ষার্থে নিরাপত্তার আশ্বাস পাওয়ার জন্য মর্মান্তিকভাবে নিজেদের সর্বস্ব বিলিয়ে দিচ্ছেন, তখন সরকারের পক্ষ থেকে আরও কার্যকরী পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।