নয়াদিল্লি, ৯ জুন : সৌদি আরব ভারতসহ ১৪টি দেশের নাগরিকদের উপর ভ্রমণ বা কাজের ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে—এমন সংবাদ প্রকাশ্যে আসার পর ভারত সরকার সেই খবরকে “ভুল ও বিভ্রান্তিকর” বলে দাবি করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, সৌদি সরকার এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রকের এক শীর্ষস্থানীয় সূত্র জানিয়েছেন, “প্রতি বছর হজ মৌসুমে ভীড় নিয়ন্ত্রণে সৌদি সরকার স্বল্প-মেয়াদী ভিসায় অস্থায়ী বিধিনিষেধ আরোপ করে থাকে। এ বছরও সেই রকম সাময়িক নিয়ম জারি হয়েছে, যা হজ শেষ হলে স্বাভাবিক হবে।”
এর আগে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল, সৌদি আরবের মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রক ১৪টি দেশের জন্য ব্লক ওয়ার্ক ভিসা প্রদান সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে। এই ভিসা এমন এক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সৌদি কোম্পানিগুলি নির্দিষ্ট সংখ্যক বিদেশি কর্মী নিয়োগের অনুমতি পায়।
এতে ভারতের পাশাপাশি যে দেশগুলি প্রভাবিত হয়েছে সেগুলি হল: পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া, মিশর, আলজেরিয়া, সুদান, ইথিওপিয়া, তিউনিসিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, জর্ডান, ইয়েমেন ও মরক্কো। এই নিষেধাজ্ঞা জুন ৩০, ২০২৫ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার ফলে নতুন কর্মী নিয়োগে বিলম্ব হতে পারে, পাশাপাশি যাঁরা ইতিমধ্যেই অনুমোদিত ব্লক ভিসা পেয়েছেন কিন্তু সৌদি আরব পৌঁছাননি, তাঁদের ভ্রমণে বাধা আসতে পারে। এতে নির্মাণ ও গৃহপরিচারিকা সহ বিদেশি শ্রমিক-নির্ভর খাতগুলি বেশ প্রভাবিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত ‘সৌদিকরণ’ নীতির অংশ হতে পারে, যার লক্ষ্য সৌদি নাগরিকদের জন্য চাকরির সুযোগ বৃদ্ধি করা। ইতিমধ্যেই পর্যটন, পরিষেবা সহ বিভিন্ন খাতে স্থানীয় কর্মী নিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ধারাবাহিকভাবে বাড়ানো হচ্ছে।
যাঁরা সৌদি আরব সফরের পরিকল্পনা করছেন, তাঁদের এয়ারলাইন্স বা নিকটবর্তী সৌদি কনস্যুলেট থেকে তথ্য যাচাই করে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কর্মী নিয়োগকারী সংস্থাগুলিকে প্রক্রিয়ার বিলম্ব সম্পর্কে সচেতন থাকতে ও ক্লায়েন্টদের যথাযথভাবে জানাতে বলা হয়েছে।
যদিও ব্লক ওয়ার্ক ভিসা সংক্রান্ত সাময়িক নিষেধাজ্ঞা বাস্তব, তবে ভারতীয়দের সাধারণ পর্যটন বা হজ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ কোনও স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। ফলে এই বিষয়ে প্রচারিত খবর অতিরঞ্জিত বা বিভ্রান্তিকর বলে মন্তব্য করেছে ভারত সরকার।