নয়াদিল্লি, ৯ মে: ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে ২২ এপ্রিল ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ক্রমবর্ধমান ভারত-পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) আইপিএল ২০২৫ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে।এই সিদ্ধান্ত আসে এমন এক সময়, যখন ধর্মশালায় পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচ মাঝপথে বাতিল হয়ে যায়, কারণ জম্মু ও পাঠানকোট সংলগ্ন এলাকায় এয়ার রেইড সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।
এ পর্যন্ত মোট ৫৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার মধ্যে ধর্মশালার পরিত্যক্ত ম্যাচটিও ধরা হয়েছে। এখনও ১২টি লিগ ম্যাচ ও ৪টি প্লে-অফ ম্যাচ— কলকাতায় নির্ধারিত ফাইনাল—অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল লখনউ, হায়দরাবাদ, আহমেদাবাদ, দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, মুম্বই ও জয়পুরে।
এটি দ্বিতীয়বার, যখন আইপিএল মাঝপথে স্থগিত হলো। এর আগে ২০২১ সালে কোভিড-১৯ সংক্রমণের জন্য টুর্নামেন্ট বন্ধ হয়ে পরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আয়োজিত হয়েছিল দ্বিতীয় পর্ব।
বিসিসিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে “যখন দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতি চলছে, তখন ক্রিকেট খেলা চলা মোটেই শোভন নয়।”টুর্নামেন্টের বাকি অংশ এখন চরম অনিশ্চয়তায়। কলকাতায় ২৫ মে নির্ধারিত ফাইনালও আপাতত বাতিল। বিসিসিআই এখন প্রাথমিকভাবে খেলোয়াড় ও আধিকারিকদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছনোর দিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। বিদেশি খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফদের একাংশ আজই ভারত ছাড়তে পারেন।
যদিও বিসিসিআই এখনও পুনরায় টুর্নামেন্ট শুরুর কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণা করেনি, তবে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে একটি সম্ভাব্য উইন্ডো নিয়ে ভাবা হচ্ছে। এতে ভারত-বাংলাদেশ সফর ও এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে, কারণ বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক টানাপোড়েন ও চলমান ভারত-পাকিস্তান সংঘাত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিরীহ প্রাণ হারান—যার মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালি নাগরিক। এই হামলার পাল্টা জবাবে ভারত “অপারেশন সিন্দুর” চালিয়ে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে আঘাত হানে। লক্ষ্যবস্তু ছিল জৈশ-ই-মহম্মদ ও লস্কর-ই-তইবার ঘাঁটি।
৯ মে পাকিস্তান পাল্টা হামলায় ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগ করে, যার লক্ষ্য ছিল জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও রাজস্থানের বেসামরিক ও সামরিক এলাকা। ভারত জানায়, তারা শুধুমাত্র সন্ত্রাসী পরিকাঠামোকেই লক্ষ্য করেছে, কোনও সামরিক ঘাঁটিকে নয়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ভারত তার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সক্রিয় করে একাধিক পাকিস্তানি ড্রোন ও যুদ্ধবিমান গুলি করে নামায়, যার মধ্যে একটি AWACS বিমানও ছিল বলে জানা যায়।